Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

ভিডিও
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০২
কোরআনুল কারিম : পর্ব ০২
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৫
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
সকাল বেলার নিমন্ত্রণে : পর্ব ০১
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
আপডেট: ২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

বই, বইয়ের মেলা

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
আপডেট: ২৩:৫৯, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

পৃথিবীতে যত রকমের মেলা হতে পারে, তার মাঝে সবচেয়ে সুন্দর মেলা হচ্ছে বইমেলা। আমার ধারণা, পৃথিবীতে যত বইমেলা আছে, তার মাঝে সবচেয়ে মধুর বইমেলা হচ্ছে আমাদের ফেব্রুয়ারি বইমেলা। কোনও কিছু না করে বইমেলার এক কোনায় চুপচাপ বসে থেকে শুধু মেলার মানুষজনকে দেখে আমি আমার একটি জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো! মেলায় গুরুগম্ভীর বয়স্ক মানুষ যায়, কম বয়সী, তরুণ-তরুণী যায়, বাবা-মায়ের হাত ধরে ছোট ছোট ছেলেমেয়েও যায়। প্রত্যেকের ভাবভঙ্গি-চালচলন আলাদা। কেউ বই কেনে, কেউ বই দেখে আবার কেউ শুধু ঘুরে বেড়ায়! এই অতি চমৎকার বইমেলাটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে, আমি সিলেটে বসে আছি, লম্বা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অপেক্ষা করছি কবে বইমেলায় যাব!

গতবার বইমেলায় গিয়ে অবশ্যি আমার এক ধরনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছিল। বাচ্চাকাচ্চার জন্য বই লিখি বলে আমাকে এক সময় প্রচুর অটোগ্রাফ দিতে হতো। কম বয়সী ছেলেমেয়েরা বই নিয়ে ভিড় করে আসতো। এখনও ভিড় করে আসে, কিন্তু তাদের হাতে এখন প্রায় সময়ই কোনও বই নেই, তার বদলে আছে একটা স্মার্টফোন! সেই ফোন দিয়ে তারা সেলফি তুলতে থাকে! সেলফি বা ছবি তোলার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু বইমেলায় বইয়ের ওপর অটোগ্রাফ না নিয়ে শুধু একটা সেলফি তুলে সন্তুষ্ট হয়ে চলে গেলে আমি একটু অস্বস্তি বোধ করি। এই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বা ফেসবুকের যুগেও আমি সাংঘাতিকভাবে বইপন্থী মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে আমি ততই বেশি বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে, একটা মানুষকে পরিপূর্ণ হতে হলে তাকে অবশ্যই বই পড়তে হবে।

আমার ধারণা, মানুষ আর পশু-পাখির মাঝে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে—মানুষ বিমূর্ত চিন্তা করতে পারে, পশু-পাখি পারে না। যত রকম বিমূর্ত চিন্তা আছে, তার মাঝে সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে বই পড়া। কাজেই কেউ যেন মনে না করে বই পড়াটি শুধু এক ধরনের বিনোদন, এটি তার থেকেও অনেক বড় একটি ব্যাপার। আমাদের একমাত্র সম্পদ হচ্ছে আমাদের মস্তিষ্কটি। সেই মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় ব্যায়াম হতে পারে বই পড়া। মস্তিষ্ককে শাণিত করার এর থেকে কার্যকর আর কিছু হতে পারে না। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জাতীয় আপদের প্রবল আক্রমণের সামনে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ হতে পারে বই। তাই আমার মনে হয় রীতিমতো যুদ্ধ করে হলেও আমাদের সবাইকে বইয়ের জগতে নিয়ে যেতে হবে। সে জন্য ফেব্রুয়ারির বইমেলা দেখে আমি এত উত্তেজিত হয়ে যাই।

দুই.
এবারের বইমেলায় আমার জন্য একটা অত্যন্ত চমকপ্রদ ব্যাপার ঘটেছে। সেটা হচ্ছে সায়েন্স ফিকশন ক্যাটাগরিতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া! দিন দশেক আগে আমি কলকাতা গিয়েছিলাম। সেখানে খুব জাঁকজমক করে কলকাতা লিট ফেস্টিভ্যাল হয়। সেখান থেকে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল পরাবাস্তব লেখার জন্য। মঞ্চে আমি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের পাশে বসেছিলাম যেটি আমার জন্য অনেক বড় একটি অভিজ্ঞতা। সেখানে আমার কাছ থেকে বাংলাদেশের সায়েন্স ফিকশন লেখালেখি নিয়ে জানতে চেয়েছিল। আমি অনেক জোর গলায় বলে এসেছি বাংলাদেশের পাঠক নিশ্চয়ই সায়েন্স ফিকশন পড়তে খুব পছন্দ করে। কারণ আমাদের দেশে অনেক সায়েন্স ফিকশন লেখক। শুধু তাই নয়, তারা একটা সোসাইটি করেছেন এবং বইমেলায় তারা র‌্যালি করে গিয়ে দলবেঁধে এক সঙ্গে সায়েন্স ফিকশন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন!
তবে কলকাতার মানুষকে যেটা বলিনি, সেটা হচ্ছে দেশের সাহিত্যের মূল ধারার মানুষরা সায়েন্স ফিকশনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। সবাই ধরেই নেয় সাহিত্যের কিছু সম্ভ্রান্ত এলাকা আছে যারা সেই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে পারে তারাই প্রকৃত সাহিত্যিক! অন্যরা লেখক, দলিল লেখক কিংবা সায়েন্স ফিকশন লেখকের মাঝে বড় কোনও পার্থক্য নেই। আজকাল অনেক রকম সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়, প্রায় সব ক্ষেত্রেই একজন প্রবীণ এবং একজন নবীন লেখক নেওয়া হয়। নবীন লেখকদের বেলায় কখনও একজন সায়েন্স ফিকশন লেখককে বেছে নিতে দেখিনি! যদিও অনেকেই আছেন যারা খুব চমৎকার লেখেন।

এ রকম একটা অবস্থায় যদি হঠাৎ করে আবিষ্কার করি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা পুরস্কার সায়েন্স ফিকশন ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়েছে, তাহলে অবশ্যই আনন্দিত হওয়ার কারণ আছে। মনে হচ্ছে সাহিত্যের জগতটা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা ছিল, কেবল সম্ভ্রান্ত কিছু মানুষ সেখানে যেতে পারতো, হঠাৎ করে কাঁটাতার তুলে দিয়ে সেখানে অন্যদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়েছে! সায়েন্স ফিকশন লেখক ঢুকেছেন তাদের পিছু পিছু ভৌতিক গল্প লেখকরা ঢুকে যাবেন, তার পিছু পিছু রহস্য উপন্যাসের লেখক এবং সবার শেষে শিশু সাহিত্যিকরা!

এই বছর সায়েন্স ফিকশনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন মোশতাক আহমেদ, তাকে আমি অনেকদিন থেকে চিনি! চেনা মানুষ পুরস্কার পেলে আনন্দ বেশি হয়। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পুলিশদের অবদান নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন, বইটির নাম নক্ষত্রের রাজারবাগ। মোশতাক আহমেদ আমাকে অনুরোধ করেছিলেন বইটির মোড়ক উন্মোচন করে দিতে এবং আমি আনন্দের সঙ্গে রাজি হয়েছিলাম। কোনও একটা কারণে নির্দিষ্ট সময়ে মোশতাক আহমেদ জরুরি কাজে আটকা পড়ে গেলেন এবং বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হলো না। আমি সেদিনই ঢাকা থেকে সিলেট চলে এসেছি।

পরদিন ভোরে আমি অফিসে গিয়েছি, গিয়ে দেখি মোশতাক আহমেদ আমার অফিসের সামনে অপেক্ষা করছেন তার হাতে রঙিন কাগজে মোড়ানো একটি বই। আমাকে বললেন, বইটির মোড়ক উন্মোচন করানোর জন্য তিনি রাতের ট্রেনে ঢাকা থেকে সিলেট চলে এসেছেন! তিনি ঠিক করেছিলেন আমাকে দিয়ে মোড়ক উন্মোচন করাবেন, কাজেই সেটি তিনি করে ছাড়বেন। আমি সব সময়েই দেখে এসেছি মোড়ক উন্মোচন হয় দশজনের সামনে, রীতিমতো একটা আনন্দঘন অনুষ্ঠান। কিন্তু নক্ষত্রের রাজারবাগ মোড়ক উন্মোচনটি হলো আমার অফিসে। আমি আর মোশতাক আহমেদ ছাড়া কেউ নেই। আমি মোড়কটি উন্মোচন করলাম, তিনি আমার হাতে বইটি তুলে দিয়ে তক্ষুণি ছুটলেন ঢাকা। আমার জীবনে এর চাইতে বিচিত্র মোড়ক উন্মোচন আর কখনও হয়নি, মনে হয় আর কখনও হবে না। ২০১২ সালে বইটি যখন কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছিল তখন আমার চেয়ে বেশি খুশি মনে হয় আর কেউ হয়নি।

তিন.
আমি প্রতি বছরই ভাবি, বইমেলার আগে আমি কয়েকজন নতুন লেখকের বই নিয়ে কিছু লিখব কিন্তু কখনও সেটি ঠিক করে করতে পারিনি। এই বছরও সেটি করা হলো না। কারণ মেলায় আগে নতুন লেখকের বইগুলো খুঁজে পড়তে পারিনি। বইটি পড়া হয়নি কিন্তু বইমেলায় গিয়ে যে বইটি কিনব বলে ঠিক করে রেখেছি সেই বইটি নিয়ে দুই-একটি লাইন অন্তত লিখি।

দুই বছর আগে একজন মা আমাকে একটা ই-মেইল পাঠিয়েছিল। তার শিশু সন্তানটি কোন একটি রক্তজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। অপ্রতিরোধ্য শোকে দিশেহারা হয়ে সেই মা শিশুটির শেষ কয়েকটি দিনের কথা লিখে আমাকে অনুরোধ করেছিল যদি সম্ভব হয় তাহলে আমি যেন এই ধরনের শিশুদের নিয়ে কিছু একটা লিখি। একজন লেখক যখন কোনও গল্প বা উপন্যাস লিখে সেটি পড়ে অনেক সময়েই আমরা ব্যাকুল হয়ে যাই, কখনও কখনও সেই কাল্পনিক চরিত্রের দুঃখ-কষ্টে আমাদের চোখে পানি চলে আসে। কিন্তু বই পড়া শেষ হলে আমরা চোখ মুছে হাসি মুখে নিজের কাজে ফিরে যাই। কারণ আমরা জানি আমাদের দুঃখটি সত্যিকারের দুঃখ নয়। কারণ, চরিত্রগুলো কাল্পনিক।

কিন্তু একজন মা যখন তার শিশু সন্তানের জীবনের শেষ মুহূর্তের ঘটনাগুলো গভীর মমতা দিয়ে লিখে পাঠান সেটি পড়ে চোখ মুছে আবার হাসি মুখে নিজের কাজে ফিরে যাওয়া যায় না। কারণ চরিত্রগুলো কাল্পনিক নয়, তারা সত্যি। বুকের ভেতর কোথায় জানি ব্যথা টন টন করতে থাকে।

আমি এ রকম মৃত্যুপথযাত্রী কিন্তু প্রাণোচ্ছ্বল হাসিখুশি একটি শিশুকে নিয়ে লিখতে পারব বলে মনে হয় না। তাই আমি ভাবছিলাম মা’টিকে চিঠি লিখে বলবো তোমার এই অচিন্ত্যনীয় কষ্টের কথাটুকু তুমি নিজেই কষ্ট করে লিখো। তোমার মতো অন্য যারা আছে, তারা হয়তো তোমার লেখাটি থেকেই সান্ত্বনা পাবে। আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই সেই কম বয়সী মা আমাকে লিখে জানালেন; সে বুকে পাথর বেঁধে কাহিনিটি লিখেছে। সে একা নয়, তার মতো আরও যারা দুর্ভাগা মা রয়েছেন তারাও লিখেছেন। এই বইটি দিয়ে তারা এ রকম অসহায় মায়েদের মাঝে একটা যোগসূত্র তৈরি করতে চাইছে যেন শেষ মুহূর্তে তাদের সন্তানরা সত্যিকার চিকিৎসা পেতে পারে। সম্ভব হলে শিশুটিকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে।

বইমেলায় গিয়ে আমি বইটি কিনবো। বইটির নাম ‘ওরা নেই ওরা আছে’। শোকাতুর মায়ের নাম সায়মা সাদিক সুমী।

চার.
এই বছর বইমেলায় গিয়ে আমি আরও একটি বই সংগ্রহ করবো কিন্তু আমি মোটামুটিভাবে নিশ্চিত সেই বইটি আমি নেড়েচেড়ে দেখব, চোখ বোলাবো কিন্তু পড়ার সাহস পাবো না। বইটির নাম ‘বীরাঙ্গনা রচনা সমগ্র’, লেখিকার নাম সুরমা জাহিদ, প্রকাশক ‘সখী প্রকাশন’। সুরমা জাহিদ এবারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। এর চাইতে যথার্থ পুরস্কার আর কিছু হতে পারে কিনা, তা আমার জানা নেই।

সুরমা জাহিদের জন্ম ১৯৭০ সালে, একাত্তরে তিনি একজন অবোধ শিশু ছিলেন। তারপরও একাত্তর সালের বীরাঙ্গনাদের জন্য তার ভেতরে এক ধরনের গভীর মমতা রয়েছে। সেই মমতা এবং ভালোবাসায় তিনি বীরাঙ্গনাদের নিয়ে সাতটি বই লিখেছেন। সেই বইগুলোকে সংকলিত করে পঞ্চান্নটি ভিন্ন ভিন্ন জেলার মোট ৩৬১ বীরাঙ্গনাকে নিয়ে ‘বীরাঙ্গনা রচনা সমগ্র’ বইটি দাঁড় করেছেন। একদিকে মানুষের নিষ্ঠুরতা অন্যদিকে নারীদের দুঃখ-কষ্ট এবং বেদনার ইতিহাসের এর চাইতে বড় কোনও দলিল আছে বলে আমার জানা নেই।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মুক্তিযুদ্ধ কর্নার আছে। সেখানে আমরা সুরমা জাহিদের বীরাঙ্গনাদের ওপর লেখা বইগুলো সংগ্রহ করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের যেকোনও ইতিহাস আমি খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি কিন্তু তারপরও সুরমা জাহিদের লেখা এই বইগুলো আমি পড়তে পারি না। বুকের ভেতর এক ধরনের রক্তক্ষরণ হয়। তারপরও আমি হৃদয়ের রক্তক্ষরণের এই বইটি বইমেলা থেকে সংগ্রহ করবো।

পাঁচ.
বইমেলা নিয়ে লিখতে গিয়ে আমি এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয় নিয়ে লিখি। সেটি হচ্ছে নতুন লেখক এবং তাদের প্রকাশিত বই।

আমি মোটেও জানতাম না যে, আমাদের বইমেলায় নতুন লেখকরা যে বই প্রকাশ করেন, সেই বইগুলো তারা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে ছাপান। বিষয়টি জানার পর আমি প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন বইমেলায় প্রকাশিত শতকরা সত্তর থেকে আশি ভাগ বই নাকি এ রকম নিজের পকেটের টাকায় ছাপানো বই। অন্যরা বলেছেন সংখ্যাটি নাকি আরও বড়।

যদি একজন লেখক নিজের পকেটের টাকা দিয়ে কোনও একজন প্রকাশককে দিয়ে তার বই বের করেন তাহলে সেই প্রকাশককে ‘প্রকাশক’ বলা যাবে না, তাকে ‘মুদ্রক’ বা এই ধরনের কিছু বলতে হবে। প্রকাশক তিনি যিনি কোনও একজন লেখক-গবেষকের কাজটুকু নিজের দায়িত্বে পাঠকদের সামনে তুলে ধরবেন। সেই কাজটুকু করার জন্য তার যদি অর্থের প্রয়াজন হয় সেই অর্থটুকু প্রকাশকের নিজের জোগাড় করতে হবে। যদি প্রকাশকের সেই অর্থ না থাকে তাহলে বুঝতে হবে প্রকাশনার বিষয়টি তার জন্য নয়, তাকে অন্য কোনও কাজ খুঁজে নিতে হবে।

ঠিক একইভাবে নতুন লেখকের জন্যও বলতে হবে যদি কোনও লেখক নিজের পকেটের টাকা দিয়ে একটা বই প্রকাশ করে থাকেন তাহলে বুঝতে হবে, তার বইটি এখনও প্রকাশের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। কেউ যদি সত্যি সত্যি লেখালেখি করতে চায় তাহলে তাকে কোনোভাবেই নিজের টাকা দিয়ে বই প্রকাশ করা চলবে না। এটি এক ধরনের অসম্মান। একজন সত্যিকারের লেখক কোনোভাবেই নিজেকে অসম্মানিত করতে পারে না।

নতুন লেখদের সব সময়েই বলতে শোনা যায়—তারা নতুন লেখক বলে কেউ তাদের লেখা ছাপতে চায় না। এই অভিযোগটি অনেক পুরনো, মানিক বন্দোপাধ্যায় সেটি মানতে রাজি ছিলেন না। তার বন্ধুদের বলেছিলেন অভিযোগটি সত্যি নয়, ভালো লেখা হলেই ছাপা হবে। শুধু তাই নয়, বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে একেবারেই অপরিচিত নতুন লেখক হিসেবে তিনি ‘অতসী মামী’ নামে একটি গল্প লেখে সেই সময়কার সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত ম্যাগাজিনে ছাপিয়ে ছিলেন। মানিক বন্দোপাধ্যায়ের মতো উদাহরণ আমাদের দেশে অনেক আছে। সবচেয়ে বড় কথা—এখন যারা প্রতিষ্ঠিত লেখক তারা সবাই এক সময় নতুন লেখক ছিলেন, অপরিচিত লেখক ছিলেন। কাজেই নতুন লেখককে কেউ গুরুত্ব দেয় না সেই অভিযোগটি আমি শুনতে রাজি নই।

এখন ইন্টারনেট ও ব্লগ আছে, কাজেই নতুন লেখকরা সেখানে লেখালেখি করতে পারেন। সেখানে বুঝতে পারবেন তার লেখালেখি কতটুকু মানসম্মত হয়েছে। যদি লেখক হিসেবে তার একটা পরিচিতি হয় তখন প্রকাশকরা আনন্দের সঙ্গে তার বই ছাপতে রাজি হবেন।

আমি মনে করি, প্রতিষ্ঠিত লেখক, বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক, তাদেরও একটা দায়িত্ব আছে। তাদের সব সময় ভালো তরুণ লেখকের খোঁজ করতে হবে। যদি কাউকে খুঁজে পান তাকে দশজনের সামনে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। বইমেলার আগেই যদি এই কাজটি করা যেত তাহলে আরও ভালো হতো। নতুন ভালো লেখকরা অনুপ্রেরণা পেতেন, উৎসাহ পেতেন।

আমাদের এত সুন্দর একটা বইমেলা সেটা শুধু বই ছাপানোর মাঝে আটকে থাকবে সেটা তো হতে পারে না। পাঠক প্রকাশক লেখক মিলে বইমেলায় সত্যিকারের যে উদ্দেশ সেটাকেও তো সত্যি করে তুলতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...
  2. ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির
  3. বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক
  4. বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল
  5. মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই
  6. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
সর্বাধিক পঠিত

ছেলের ধর্ম ‘ফাঁকা’ রাখলেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা, কারণ...

ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির

বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক

বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল

মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই

ভিডিও
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
নাটক : সত্য বলা মহাপাপ
নাটক : সত্য বলা মহাপাপ
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৭
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x