Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

ভিডিও
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৮
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৮
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৬
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৬
গানের বাজার, পর্ব ২৩৮
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬২
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩০
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:১৬, ০১ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ০৯:৩০, ০১ জুলাই ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:১৬, ০১ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ০৯:৩০, ০১ জুলাই ২০১৬
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

সাদাসিধে কথা

দেশের বাইরে দেশের মাটি

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:১৬, ০১ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ০৯:৩০, ০১ জুলাই ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০১:১৬, ০১ জুলাই ২০১৬
আপডেট: ০৯:৩০, ০১ জুলাই ২০১৬

বহু বছর আগে যখন দেশের বাইরে থাকতাম, তখন কয়েক বছর পর একবার দেশে আসার সুযোগ হতো। যখন ফিরে যাওয়ার সময় হতো, তখন মনটা ভারী হয়ে থাকত। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হতো যখন প্লেনটা আকাশে ওড়ার জন্য রানওয়েতে ছুটতে থাকত। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকতাম, প্লেনের চাকা যখন মাটি ছেড়ে ওপরে উঠে আসত, তখন এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করতাম, জানতাম না আবার কবে দেশের মাটিতে পা রাখতে পারব।

এখনো মাঝেমধ্যে দেশের বাইরে যেতে হয়, প্লেন রানওয়েতে ছুটতে ছুটতে একসময় মাটি ছেড়ে আকাশে ওঠে যায়, প্রতিবারই আমার সেই পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ে এবং নিজের ভেতর একধরনের বিস্ময়কর আনন্দ হয় যে, আমাকে দেশ ছেড়ে যাওয়ার সেই তীব্র কষ্ট অনুভব করতে হয় না। আমি জানি অল্প কয়দিনের ভেতর আবার দেশের মাটিতে ফিরে আসব। বহুদিন থেকে দেশে আছি। অসংখ্য মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, তাই প্লেনের ভেতরেও পরিচিত মানুষ পেয়ে যাই। আমাদের ইউনিভার্সিটি মাসখানেকের জন্য ছুটি, তাই দেশের বাইরে যাচ্ছি। প্লেনে হঠাৎ করে একজনের সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে মানুষটি সম্পর্কে আলাদা করে বলার লোভ সামলাতে পারছি না।

প্লেনের ভেতরে নিজের সিটে বসার জন্য যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন মানুষটি আমাকে বলল, ‘স্যার, আমার নাম সাইফুল্লাহ—অনেক দিন আগে জার্মানি থেকে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম।’

আমার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল, একজন বহুদিন আগে জার্মানি থেকে আমার কাছে ই-মেইল পাঠালে আমি তাকে চিনে ফেলব, সে রকম কোনো সম্ভাবনা নেই, কিন্তু মানুষটির পরের কথাটি শুনে সঙ্গে সঙ্গে আমার তার কথা মনে পড়ে গেল। মানুষটি বলল, ‘জার্মানিতে আমার একটা কোম্পানি আছে, নাম সাইন পালস, আমি সেই কোম্পানির সিইও।’ আমি তখন বিস্ময় নিয়ে তার দিকে তাকালাম, কমবয়সী একজন তরুণ। একজন কোম্পানির সিইও বলতেই টাই-স্যুট পরা মধ্যবয়স্ক ভারিক্কি চেহারার একজন মানুষের চেহারা ভেসে ওঠে, সাইফুল্লাহ মোটেও সে রকম একজন নয়। টি-শার্ট পরে থাকা কমবয়সী হাসিখুশি একজন তরুণ। আলাদাভাবে এই তরুণটির কথা আমার মনে আছে কারণ জার্মানিতে সাইফুল্লাহ নিজে একটা কোম্পানি দিয়েছে, যে কোম্পানিতে জার্মান (এবং বাংলাদেশি) ইঞ্জিনিয়ার কাজ করে। তারা নানা ধরনের যন্ত্রপাতি তৈরি করে, জার্মানির মতো দেশে যন্ত্রপাতি তৈরি করে সেই দেশে সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করার কাজটি সহজ নয়। আমরা ছোট-বড় সফটওয়্যার কোম্পানি দেখেছি, কিন্তু সত্যিকারের যন্ত্রপাতির কোম্পানি তৈরি করে শুধু টিকে থাকা নয়, সেটাকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলার উদাহরণ খুব বেশি দেখিনি। আমাদের দেশের মোটামুটি সব মেধাবী ছেলেমেয়েই আগে হোক-পরে হোক, দেশের বাইরে চলে যায়। তারা দেশের বাইরে চমকপ্রদ কাজকর্ম করে এবং তাদের সাফল্য দেখে আমি একদিকে উৎসাহ পাই, একই সঙ্গে বুকের ভেতর কোথায় যেন চিনচিনে ব্যথা অনুভব করি। সাইফুল্লাহ যদি শুধু জার্মানে অসাধারণ একটা কোম্পানি গড়ে তুলত, আমি তাকে নিয়ে আলাদাভাবে লিখতাম না। বাইরের দেশে যারা সফল, তাদের নিয়ে বাইরের দেশের মানুষ গর্ব করুক, আমি দেশের মানুষ নিয়ে গর্ব করতে চাই। আমি সাইফুল্লাহকে নিয়ে গর্ব করতে চাই কারণ, জার্মানিতে সফল একটা কোম্পানি তৈরি করে সে থেমে যায়নি। যে স্বপ্নটি আজীবন লালন করে এসেছে সে শেষ পর্যন্ত সেটি করতে পেরেছে। বাংলাদেশে সে একটা কোম্পানি শুরু করেছে, নাম দিয়েছে (Aplombtech) এপ্লম্বটেক (এপ্লম্ব শব্দটি একটু অপরিচিত, ইংরেজিতে আত্মবিশ্বাস বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। মূল শব্দটি সম্ভবত ব্যালে নাচের সময় নৃত্যশিল্পীর এক পায়ে ঘুরপাক খাওয়ার বিষয়টি)।

বাংলাদেশের কোম্পানির জন্য সে একটি ভিন্ন নাম দিয়েছে কারণ, সে বাংলাদেশিদের দিয়ে বাংলাদেশের একটা কোম্পানি তৈরি করতে চায়, জার্মান একটা কোম্পানির অংশ তৈরি করতে চায় না।

সাইফুল্লাহ জার্মানি থেকে তার তিনজন অভিজ্ঞ দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দেশে নিয়ে এসে তাদের নেতৃত্বে কোম্পানিটি শুরু করেছে। এর মাঝেই সেটি অনেকদূর এগিয়ে গেছে, দেশের জন্য কাজ শুরু করেছে, দেশের বাইরেও তার যোগাযোগ শুরু হয়েছে।

প্লেন থেকে নামার পর আমরা দুজন দুই দেশে যাবো, দুটো ফ্লাইটের মাঝে ঘণ্টাখানেক সময়। কাজেই তার সঙ্গে আমি দীর্ঘ সময় কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। কীভাবে সে এবং তার স্ত্রী মিলে তাদের কোম্পানিটি গড়ে তুলেছে, তার কাহিনীটি অসাধারণ, আমি তার কাছ থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনেছি। ভবিষ্যৎ নিয়ে তার স্বপ্নের শেষ নেই, মানুষের স্বপ্নের কথা শোনা থেকে আগ্রহের ব্যাপার আর কী হতে পারে? তরুণ বয়সে সে যে চমৎকার কাজ করেছে, সেটি নিয়ে তার ভেতরে বিন্দুমাত্র অহংকার নেই, কথাবার্তায় বিস্ময়কর এক ধরনের সারল্য এবং বিনয়। নিজের সম্পর্কে অসংখ্যবার যে বাক্যটি ব্যবহার করেছে সেটি হচ্ছে, ‘আমি আসলে গ্রামের ছেলে।’

যে গ্রামের ছেলে, যার শরীরে দেশের মাটির গন্ধ, আমরা আসলে তার কাছেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি।

২.
আমি আমস্টারডাম শহরে এবারে দ্বিতীয়বার এসেছি। যখন বয়স কম ছিল, তখন খুব আগ্রহ নিয়ে দেশে-বিদেশে গিয়েছি। দর্শনীয় জিনিসগুলো দেখেছি। এখন দেশ থেকে বের হতে ইচ্ছে করে না। কোথাও গেলে আর্ট মিউজিয়াম ছাড়া অন্য কিছু দেখারও আগ্রহ হয় না। তবে গতবার আমস্টারডাম শহরে ভিন্ন এক ধরনের একটা মিউজিয়াম দেখার চেষ্টা করেছিলাম, অনেক আগে থেকেই সব টিকেট বিক্রয় হয়ে যায় বলে মিউজিয়ামটি দেখা হয়নি। এইবার সেটি দেখা হয়ে গেল। এই মিউজিয়ামটি হচ্ছে অ্যানা ফ্রাঙ্ক নামে ১৫ বছরের একটি কিশোরীর ওপর গড়ে ওঠা একটি মিউজিয়াম।

আমার ধারণা, যারা একটু হলেও লেখাপড়া করেছে, তারা সবাই অ্যানা ফ্রাঙ্কের কথা জানে। তারপরও আমি তার সম্পর্কে একটু বলি। মেয়েটির জন্ম জার্মানিতে। ইহুদি ধর্মের মানুষ হওয়ার কারণে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯৪১ সালের পর তাদের কোনো দেশ ছিল না। তার বাবা বিষয়টা আঁচ করতে পেরে আগেই নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরে চলে এসেছেন। একসময় জার্মানি নেদারল্যান্ডসও দখল করে নিল। তখন আবার তাদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠল। প্রতিদিনই ইহুদিদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে। গ্যাস চেম্বারে মেরে ফেলা হচ্ছে। কাজেই নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য অ্যানা ফ্রাঙ্কের বাবা একটা বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁর অফিসের ওপরে একটা গোপন কুঠুরি তৈরি করে সেখানে পুরো পরিবারকে নিয়ে লুকিয়ে গেলেন। পুরো দুই বছর তাঁরা সেই ছোট্ট কুঠুরিতে লুকিয়ে ছিলেন, যেখানে তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন, সেই ছোট বাসাটিই হচ্ছে অ্যানা ফ্রাঙ্কের মিউজিয়াম।

সেই ছোট্ট একচিলতে জায়গায় লুকিয়ে থাকতে থাকতে মেয়েটি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখত। তার খুব বড় লেখক হওয়ার শখ ছিল। সে জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করেছিল। যে বিষয়টি তাকে সারা পৃথিবীর সব মানুষের কাছে পরিচিত করেছে, সেটি হচ্ছে তার ডায়েরি। সেই গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে লুকিয়ে সে ডায়েরি লিখত।

টানা দুই বছর সেই গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে থাকার পর হঠাৎ করে তারা জার্মানদের হাতে ধরা পড়ে গেল। কেউ একজন তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে জার্মানদের কাছে তাদের কথা জানিয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধ তখন শেষের দিকে চলে এসেছে, ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সকল স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যে চুরমার হয়ে গেল।

এই পরিবারটির পরের ইতিহাস খুব কষ্টের। পরিবারের পুরুষ থেকে মহিলা সদস্যদের আলাদা করে ফেলা হলো। অনাহারে প্রথমে মা মারা গেলেন, অ্যানা ফ্রাঙ্ক আর তার বড় বোন নানা কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ঘুরে জার্মানির বারগেন বেলসেন ক্যাম্পে এসেছে। অনাহার, রোগ-শোক, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অমানুষিক পরিশ্রম, হতাশা সবকিছু মিলে তখন তাদের জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছে। ১৯৪৫ সালের এপ্রিল মাসে মিত্রশক্তি এসে এই ক্যাম্পের বন্দিদের মুক্ত করেছে, অ্যানা ফ্র্যাঙ্ক এবং তার বোন তার মাত্র দুই তিন সপ্তাহ আগে টাইফাস রোগে মারা গেছে।

বেশ কয়েক বছর আগে কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের অতিথি হয়ে জার্মানি গিয়েছি। উদ্যোক্তারা আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমি জার্মানির বিশেষ কিছু দেখতে চাই কি না। আমি বললাম, সম্ভব হলে বারগেন বেলসেন ক্যাম্পটি দেখতে চাই, যেখানে অ্যানা ফ্রাঙ্ক নামের ১৫ বছরের একটা কিশোরী মুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছিল। আমার কথা শুনে জার্মান আয়োজকরা একটু থতমত খেয়ে গিয়েছিল। আমি আগেই লক্ষ করেছি, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির ইতিহাসটুকু তারা সযত্নে এড়িয়ে যায়। কিন্তু তারা আমার অনুরোধ রক্ষা করে আমাকে সেই ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিল। অ্যানা ফ্রাঙ্কের কবর আলাদা করে নির্দিষ্ট করা নেই, বিশাল গণকবরের কাছে লেখা আছে অসংখ্য বন্দির সঙ্গে এখানে কোথাও তাকে সমাহিত করা হয়েছিল।

আমস্টারডামে অ্যানা ফ্রাঙ্কের মিউজিয়ামে তার ছোট একচিলতে ঘরের মাঝে দাঁড়িয়ে আমি এক ধরনের গভীর বেদনা অনুভব করেছিলাম। যুদ্ধশেষে অ্যানা ফ্রাঙ্কের বাবা শুধু জীবন নিয়ে ফিরে এসেছিলেন, তার হাতে তখন অ্যানা ফ্রাঙ্কের ডায়েরিটি পৌঁছে দেওয়া হয়। বাবা সেই ডায়েরিটি প্রকাশ করার ব্যবস্থা করেছিলেন। অ্যানা ফ্রাঙ্কের বড় লেখক হওয়ার শখ ছিল, ছোট এই কিশোরী মেয়েটি কখনো জানতে পারেনি যে এই পৃথিবীতে সত্যি সত্যি সে খুব বড় একজন লেখক হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তার ডায়েরিটি প্রায় ৭০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, ডায়েরিটি প্রায় ৩০ মিলিয়ন কপি বিক্রি করা হয়েছে। কত মানুষ অশ্রুসজল চোখে এই ডায়েরি পড়েছে, তার কোনো হিসাব নেই।

অ্যানা ফ্রাঙ্কের মিউজিয়ামে গিয়ে আমার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি উপলব্ধি হয়েছে। একটি মিউজিয়াম বললেই আমাদের চোখের সামনে নানা বিচিত্র সামগ্রী দিয়ে সমৃদ্ধ একটা জায়গার কথা মনে পড়ে। অ্যানা ফ্রাঙ্কের মিউজিয়ামটি কিন্তু সে রকম নয়—সে জায়গাটি ছাড়া এখানে আর বিশেষ কিছু নেই, তারপরও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত একটি মিউজিয়াম। এটি একনজর দেখার জন্য সারা পৃথিবীর মানুষ দিনের পর দিন অপেক্ষা করে। উনিশশ একাত্তরে আমরাও কিন্তু একটা যুদ্ধের ভেতর দিয়ে গিয়েছি। আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে এ রকম অসংখ্য দুঃখ-বেদনা-নৃশংসতা কিংবা বীরত্বের চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আমরা কেন সেগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করি না? কত অকাজে সময় নষ্ট করি, নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আমরা সেগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করি না কেন? বাংলাদেশের হারিয়ে যাওয়া বধ্যভূমিগুলো খুঁজে বের করা কি অসাধারণ একটা কাজ হতে পারে না?

৩.
কয়েক দিন আগে ব্রিটেনে একটা গণভোট করে তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গণভোটের সময় আমি যদি দেশে থাকতাম, তাহলে বিষয়টাকে সে রকম গুরুত্ব দিয়ে লক্ষ করতাম কি না জানি না, নিশ্চয়ই আমার মনে হতো আমি আদার বেপারী জাহাজের খবর নিয়ে কী করব? কিন্তু ব্রিটেনের গণভোটের সময় আমি ইউরোপে বসে আছি বলে হঠাৎ করে পুরো ব্যাপারটা আমি খুবই কৌতূহল নিয়ে লক্ষ করেছি। গণভোটের ফলাফলটি আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক বলে মনে হয়েছে। আমরা সবাই জানি, মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বাস্তু শরণার্থী নিয়ে ইউরোপে মোটামুটি একটা বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খুঁটিয়ে দেখলে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে পশ্চিমা জগতের হৃদয়হীন কর্মকাণ্ডের কারণে এই বিপর্যয় শুরু হয়েছে। কাগজে-কলমে যাই থাকুক, ব্রিটেনের এই গণভোট হয়েছে একটা মূল বিষয়ের ওপর, ইউরোপের শরণার্থীর সমস্যার দায়ভার ব্রিটেনও বহন করবে কি করবে না! অন্যভাবে বলা যায়, গণভোট হয়েছে ব্রিটেনের মানুষ স্বার্থপর হবে নাকি স্বার্থপর হবে না, তার ওপর। ব্রিটেনের মানুষ সারা পৃথিবীর কাছে জানিয়ে দিয়েছে, তারা স্বার্থপর হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশটির নাম ছিল গ্রেট ব্রিটেন, আমার মনে হয় গ্রেট শব্দটি তুলে সেখানে অসম্মানজনক একটা শব্দ বসানোর সময় হয়েছে।

তবে আমার কথাগুলো একটু বেশি কঠিন হয়ে গেছে, আমাদের আশাহত হওয়ার সময় এখনো আসেনি। কারণ, এই গণভোটে তরুণ প্রজন্ম কিন্তু সত্যিকারের মানুষের মতো অবদান রেখেছে। তারা নিজেদের স্বার্থপর হিসেবে পরিচয় দিতে চায়নি। তারা কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হিসেবে থেকে পৃথিবীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চেয়েছিল। আমার ধারণা, সারা পৃথিবীর সব তরুণের মতোই তারাও নতুন পৃথিবীর প্রজন্ম হিসেবে নিজেদের একদিন প্রতিষ্ঠিত করবে।

সারা পৃথিবীটাই এখন একটা সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, অপেক্ষা করে আছি কখন পৃথিবীর মানুষ সেই সংকটকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির
  2. বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক
  3. বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল
  4. মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই
  5. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
  6. মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত

ফ্লপের ধুলো ঝেড়ে ৭ বছর পর হিট দিলেন আমির

বিবাহবিচ্ছেদের গুজব আর নয়, স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন অভিষেক

বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল

মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই

সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান

ভিডিও
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৮
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৯
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৬
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৬
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২০
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৮

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x