Skip to main content
NTV Online

মত-দ্বিমত

মত-দ্বিমত
  • অ ফ A
  • প্রতিক্রিয়া
  • সমসাময়িক
  • বহির্বিশ্ব
  • ব্যঙ্গ রঙ্গে
  • ফিরে দেখা
  • স্মরণ
  • বিদেশি কলাম
  • নগর দর্পণ
  • অতিথি কলাম
  • খেলাধুলা
  • পাঠকের কলাম
  • বিবিধ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • মত-দ্বিমত
ছবি

রোমান্টিক শহরে মেহজাবীন

বিয়ের পিড়িতে জেফ বেজোস - লরেন সানচেজ

জন্মদিনে রুক্মিণী

মি. অ্যান্ড মিসেস মেসি

নিউইয়র্কে পারসা ইভানা

প্রকৃতির কোলে কৌশানী মুখার্জি

মিষ্টি হাসিতে সাবিলা নূর

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

ভিডিও
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
পবিত্র হজ্ব ২০২৫ (সরাসরি)
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
নাটক : প্রেশারম্যান
নাটক : প্রেশারম্যান
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৫৫
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৬৭
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩
গানের বাজার, পর্ব ২৩৭
এই সময় : পর্ব ৩৮৩৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬
আপডেট: ০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬
আরও খবর
‘মা’–একটি শব্দেই পূর্ণতা
দুর্ভাগা তোফাজ্জলের জীবনের সমাপ্তিটাও হলো নিঠুর নির্মমতায়
কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই
জয়ের ঘনঘন বক্তব্য বদলের ব্যাখ্যা দিলেন আলী রীয়াজ
পঞ্চাশোর্ধ্ব পাঠাগারগুলো টিকিয়ে রাখতে কী করা যেতে পারে

আমার ভাঙা রেকর্ড

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬
আপডেট: ০০:৩৭, ০৭ অক্টোবর ২০১৬

দেশ কিংবা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষজন যখন হা-হুতাশ করে আমি সাধারণত সেগুলোকে খুব গুরুত্ব দিয়ে নেই না। সারা পৃথিবী এখন স্বীকার করে নিয়েছে নতুন পৃথিবীতে পার্থিব সম্পদ থেকেও বড় সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। কাজেই একটা দেশের তেল, গ্যাস, কল-কারখানা, সোনা, রূপা, হীরার খনি না থাকলেও ক্ষতি নেই, যদি সেই দেশে মানুষ থাকে আর সেই মানুষের জ্ঞানচর্চার একটা সুযোগ থাকে। সেই হিসেবে আমাদের দেশটি অসাধারণ—এই দেশে স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়ের সংখ্যাই চার কোটির মতো। (পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের জনসংখ্যাই চার কোটি থেকে কম— পুরো অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা দুই কোটি থেকে একটু বেশি!) কাজেই আমাদের দেশে আমরা যদি শুধুমাত্র স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের ঠিক করে লেখাপড়া করাতে পারি তাহলেই দেশটা অচিন্ত্যনীয় সম্পদশীল একটা দেশ হয়ে যাবে। আমি তাহলে কেন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে হা-হুতাশ করব?

আমাদের শুধু যে চার কোটি ছেলেমেয়ে স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে তা নয় এর মাঝে ছেলে আর মেয়ের সংখ্যা প্রায় সমান সমান। সত্য কথা বলতে কী, আমরা মাঝে মাঝেই আবিষ্কার করি মেয়েরা সংখ্যাতে যেরকম, লেখাপড়ার মানেও সে রকম—ছেলেদের থেকে এগিয়ে থাকে। তুলনা করার জন্যে পাকিস্তান নামক অভিশাপটির কথা আমরা স্মরণ করতে পারি, মেয়ে হয়ে পড়াশোনার আগ্রহ দেখানোর কারণে সেই দেশে মালালা নামের কিশোরটির মাথায় গুলি খেতে হয়েছিল। একটা নোবেল পুরস্কার দিয়ে সারা পৃথিবীকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সেই অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়েছিল।
লেখাপড়ায় ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের এগিয়ে আসা যে একটা দেশের জন্যে কত বড় আশীর্বাদ সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। এখনও অনেক অভিভাবক বিশ্বাস করেন ভালো একটা ছেলে পেলে মেয়েকে যত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেওয়া যায়, ততই মঙ্গল এবং সে কারণে এইচএসসি’র পর থেকে তাদের বিয়ে দেওয়া শুরু হয়। যদি সেটা না হতো তাহলে মোটামুটি গ্যারান্টি দিয়ে বলা যেত আমরা আমাদের ইউনিভার্সিটিগুলোতেও স্কুল-কলেজের মতো সমান সমান ছেলে আর মেয়ে পেতাম। লেখাপড়া করছে এ রকম মেয়েদের পেলেই আমি তাদের বলি—‘খবরদার লেখাপড়া শেষ করে একটা চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবে না।’(আমার ধারণা অনেক অভিভাবক সে কারণে আমাকে দুই চোখে দেখতে পারেন না।)

২.
জ্ঞান হচ্ছে সম্পদ, তাই এই দেশের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করলেই দেশ সম্পদশালী হয়ে যাবে—এ ব্যাপারে কারও কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু এই দেশের ছেলেমেয়েরা সত্যি সত্যি লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করছে কিনা—সেই বিষয়টি নিয়ে শুধু দ্বিমত নয় ত্রিমত কিংবা চতুর্থ মতও আছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি সত্যিকারের লেখাপড়ার বদলে এখন বিচিত্র এক ধরনের পরীক্ষাভিত্তিক লেখাপড়া শুরু হয়েছে এবং জিপিএ ফাইভ নামে অসুস্থ এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। জিপিএ ফাইভ পেলে আমাদের ধরে নেওয়া উচিত তার একটা নির্দিষ্ট মানের লেখাপড়া হয়েছে, কিন্তু আমরা সেটাও করতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সময় আমরা আবিষ্কার করি জিপিএ ফাইভ পাওয়া অনেকে সেখানে পাস মার্কটুকুও তুলতে পারে না। আমাকে একজন হিসাব করে দেখিয়েছেন, একেবারে কোনও রকম লেখাপড়া না করেই ষাট থেকে সত্তর মার্ক পাওয়া সম্ভব। প্রাক্টিক্যাল পরীক্ষার ২৫ মার্ক একেবারে ছাঁকা অবস্থায় একজন ছাত্র কিংবা ছাত্রীকে দিয়ে দেওয়া হয়। এমসিকিউ ৩৫ মার্কও ছেলেমেয়েরা পুরোটা পেয়ে যায়। পরীক্ষার হলে যদি একজন ছাত্র বা ছাত্রীও এমসিকিউ এর উত্তর জানে সে তাদের নিজস্ব সিগন্যাল পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলের সবাইকে সেটা জানিয়ে দিতে পারে। আজকাল না কি তারও প্রয়োজন হয় না। অনেক শিক্ষক নিজেরাই ছাত্রছাত্রীদের পুরো উত্তরটুকু বলে দেন। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সেগুলো স্মার্টফোনে চলে আসে, তখন অভিভাবকেরা নিজেরাই যত্ন করে তাদের ছেলে-মেয়েদের সেগুলো মুখস্থ করিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকিয়ে দেন। কাজেই একজন ছেলে একেবারে কিছু না পড়েই প্রাক্টিক্যাল আর এমসিকিউ মিলিয়ে ষাট নম্বর পেয়ে যায়। মূল প্রশ্নের উত্তরে যদি কিছু না জেনেও একেবারে যা ইচ্ছা তাই লিখে দিয়ে আসে, তাহলেও সেখানে বেশ কিছু নম্বর পেয়ে যায়, কারণ সব পরীক্ষকের কাছে বেশি বেশি নম্বর দেওয়ার অলিখিত নির্দেশ রয়েছে। কাজেই মূল প্রশ্ন থেকে যদি কোনোভাবে কুড়ি নম্বর ম্যানেজ করে ফেলা যায় তাহলেই সেটা জিপিএ ফাইভ। কাজেই আমরা মাঝে মাঝেই যখন আবিষ্কার করি একেবারে কিছুই জানে না, কিন্তু একজন জিপিএ ফাইভ পেয়ে বসে আছে, তখন অনুমান করে নিতে হয় নিশ্চয়ই এ রকম কোনও একটি ঘটনা ঘটেছে। অথচ আমাদের দেশে লেখাপড়ার ব্যাপারটার এরকম দিশেহারা অবস্থা হওয়ার কথা ছিল না। ভালো লেখাপড়া করার জন্য তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জিনিসের দরকার। শিক্ষক, পরীক্ষা পদ্ধতি আর পাঠ্যবই।

এর মাঝে সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন হচ্ছে ভালো শিক্ষক। রাতারাতি বাংলাদেশের সব স্কুলের শিক্ষকদের জাদুমন্ত্র দিয়ে ভালো শিক্ষক পাল্টে দেওয়া যাবে—সেটা আমরা কেউ আশা করি না। আমরা যদি একটা ভালো স্কুলের খবর পাই তাহলে একেবারে নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায় সেই স্কুলে একজন হলেও খুব ভালো শিক্ষক আছেন। আমাদের দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হলেও যে কিছু কিছু ভালো শিক্ষক আছেন সেজন্য এখনও এই দেশটিতে লেখাপড়া হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে আমরা এই কথাগুলো আরও জোর দিয়ে বলতে পারছি না। এখন মোটামুটি আমরা সবাই জেনে গিয়েছি স্কুলের পরীক্ষাগুলোয় শিক্ষকদের অনেকেই অনেক ধরনের ট্রেনিং নেওয়ার পরও সৃজনশীল প্রশ্ন করতে পারেন না। তাই তারা গাইড বই থেকে প্রশ্ন তুলে দেন। ছেলেমেয়েদের তাই পাঠ্যবইটির সঙ্গে-সঙ্গে আস্ত একটা গাইড বই মুখস্থ করতে হয়। আমি প্রায় নিয়মিতভাবে দেশের ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে চিঠিপত্র, ই-মেইল পাই—যেখানে তারা আমাকে তাদের শিক্ষকদের নিয়ে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর অভিযোগ করে, যার সবচেয়ে গুরুতরটি হচ্ছে টাকাপয়সা নিয়ে জোর করে প্রাইভেট পড়ানো এবং তাদের কাছে পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে দেওয়া। অভিযোগগুলোতে সত্যতা আছে, কারণ আমরা সবাই জানি একেবারে দুধের শিশুটিকেও আজকাল প্রাইভেট না হয় কোচিং পড়তে পাঠানো হয়। যে শিশুটির নিজে নিজে পড়ালেখা করার ক্ষমতা আছে তাকেও প্রাইভেট আর কোচিংয়ে অভ্যস্ত করিয়ে আমরা তার আত্মবিশ্বাসের একেবারে বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দেই। যে শিক্ষকেরা জেনেশুনে আমাদের ছেলেমেয়েদের এভাবে সর্বনাশ করে যাচ্ছেন, তাদের কোনোভাবে ক্ষমা করা যায় না। ক্লাসে পড়াবেন না, কিন্তু কোচিংয়ে পড়াবেন—এই ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে আমরা কখন মুক্তি পাব, কে জানে?

পড়ালেখা করার জন্য দরকারি দুই নম্বর বিষয়টি হচ্ছে—পরীক্ষা পদ্ধতি। দেশের শিক্ষার মান ভালো করার এটা হচ্ছে সবচেয়ে সোজা উপায়। প্রত্যেকটা ছেলেমেয়েই পরীক্ষায় ভালো করতে চায়। যদি পরীক্ষা পদ্ধতিটি খুব ভালো হয়, তাহলে সেই পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য ছেলেমেয়েরা যখন প্রাণপণ চেষ্টা করে, তখন নিজে থেকেই যেটুকু শেখার কথা সেটুকু শিখে নেয়। প্রশ্নগুলো এমনভাবে করতে হবে যেন সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ভালো করে লেখাপড়া করার বাইরে আর অন্য কোনও শর্টকাট না থাকে। এই দেশের আগের গত বাঁধা প্রশ্নপদ্ধতি পাল্টে যখন নতুন সৃজনশীল পদ্ধতি শুরু করা হয়েছিল, তখন আমরা সবাই আশা করেছিলাম যে, সত্যিকারের পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হতে যাচ্ছে, কিন্তু যখন আবিষ্কার করেছি প্রশ্নগুলোর জন্য গাইড বইয়ের ওপর নির্ভর করতে শুরু করা হচ্ছে—তখন বিশাল দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার রাস্তা থাকল না। সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ হয় যখন দেখি আমাদের দেশের প্রথম সারির খবরের কাগজগুলো একেবারে নিয়মিতভাবে গাইড বই ছাপিয়ে যাচ্ছে। এত বড় বড় সংবাদপত্র তারা তো নিশ্চয়ই ভুল করতে পারে না ভেবে দেশের লাখ লাখ ছেলেমেয়ে খবরের কাগজের গাইড বই মুখস্ত করে যাচ্ছে! বড় বড় জ্ঞানী-গুণী সম্পাদকদের ভেতরে বিন্দুমাত্র অপরাধ বোধ নেই, বিন্দুমাত্র গ্লানি নেই যে, তারা তাদের পত্রিকায় কিশোর-তরুণদের মানসিক বিকাশের মতো কোনও লেখা না ছাপিয়ে তাদের বুদ্ধিমত্তাকে গলাটিপে শেষ করার জন্য গাইড বই ছাপিয়ে যাচ্ছেন—এই দুঃখ আমি কোথায় রাখি?

আমার হিসেবে লেখাপড়া করার জন্য তিন নম্বর বিষয়টি হচ্ছে—ভালো পাঠ্যপুস্তক। আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রায় সবাই এখন প্রাইভেট কোচিংয়ের জালে আটকা পড়ে আছে। এই জাল থেকে তাদের মুক্ত করে আনার সবচেয়ে সোজা পথ হচ্ছে চমত্কার কিছু পাঠ্য বই। যদি পাঠ্যবইগুলো খুব ভালো হয়, তাহলে ছেলেমেয়েরা নিজেরাই সেটা পড়ে সেখান থেকে বিষয়বস্তু শিখে নিতে পারবে। দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্যে লেখা পাঠ্যবইগুলো নিয়ে সেরকম কিছু বলতে পারি না। আমি বিজ্ঞানের মানুষ অথচ আমি বিজ্ঞানের পাঠ্যবই দেখেছি তার অনেক বিষয় পড়ে আমি নিজেই কিছু বুঝতে পারি না। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা সেগুলো পড়ে কী বুঝবে? বইগুলোও ছাপা হয় এমন দায়সারাভাবে যে, সেগুলো দেখে মনের ভেতরে নতুন বই দেখার যে আনন্দ হওয়ার কথা—সেটাও হয় না। শুধু তাই নয়, অনেক পাঠ্যবইয়ের সাইজ ছোট করে ফেলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা সেই সংক্ষিপ্ত বই পড়ে কিছু বোঝে না, পুরনো বই খুঁজে বেড়ায়। আমার ধারণা যদি যত্ন করে একটি একটি করে সবগুলো পাঠ্যবই অনেক সুন্দর করে লেখা হয়, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই সেই পাঠ্যবই পড়ে নিজেরাই অন্য কারো সাহায্য না নিয়ে তাদের বিষয়বস্তু শিখে নিতে পারবে। ভালো শিক্ষক, প্রাইভেট টিউটর, কোচিং কিংবা গাইড বইয়ের মুখ চেয়ে বসে থাকতে হবে না।

পাঠ্যবই নিয়ে কথা বলতে হলে পাঠ্যবই ছাপানোর দক্ষযজ্ঞের কথাটিও একবার না বললে হবে না। দেশের সব ছেলেমেয়ের হাতে বছরের প্রথমদিন নতুন বই তুলে দেওয়ার মতো অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা প্রতি বছর ঘটে যাচ্ছে। আমার মনে হয় নতুন বই হাতে একটা শিশুর মুখের আনন্দের হাসিটুকুর মতো সুন্দর একটা দৃশ্য পৃথিবীতে আর কিছু নেই।

দেশের বেশিরভাগ মানুষ নতুন বছরে নতুন বইয়ের আনন্দটুকুই শুধু দেখে আসছে, কিন্তু এটি নিশ্চিত করার জন্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত এনসিটিবি যে তাদের পুরো শক্তিটুকু বই ছাপানোর পেছনে ব্যয় করে ফেলছে, সেটি অনেকেই জানে না। এনসিটিবি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একটি প্রকাশক, এই কথাটি মোটেও অত্যুক্তি নয়। কোটি কোটি বই ছাপাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হয় এবং যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হয় সেখানে যে অনেকে এসে ভিড় করবেন—সেটি বিচিত্র কিছু নয়। ছেলেমেয়েদের পাঠ্যবই ছাপানোর প্রতি মহৎ কাজের মাঝে যে বাণিজ্য এসে জায়গা করে নেবে না এবং সেখানে নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি আর অপকর্ম ঘটতে থাকবে না—সেটা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না। বই ছাপানোর এই বিশাল প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা মাঝে মাঝে যে অতি বিচিত্র চক্রান্তের কথা শুনি, তার মাঝে নিশ্চয়ই অনেক সত্যতা আছে। দেশের ভেতরে বই ছাপানোর উপযুক্ত অবকাঠামো থাকার পরও যে সেগুলো ভারত কিংবা চীন থেকে ছাপিয়ে আনতে হচ্ছে, তার পেছনেও নিশ্চয়ই অনেক ঘটনা রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা জানি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এনসিটিবি-এর হাতে শুধু কারিকুলাম তৈরি করা, পাঠ্যবই লেখানো, সম্পাদনা করা—এই ধরনের কাজগুলো রেখে ছাপানো এবং বিতরণের পুরো বাণিজ্যিক অংশটুকু অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত।

৩.
লেখাপড়া নিয়ে যখনই আমি কিছু লিখি তখনই আমি আমার ভাঙা রেকর্ডটা বাজাই, কাজেই এবারেও সেটা বাকি থাকবে কেন? এবারেও আমি আরো একবার বাজাই?

আমরা জানি, বাংলাদেশ সারা পৃথিবীর সামনে অঙ্গীকার করে এসেছিল যে, শিক্ষার পেছনে দেশের জিডিপির শতকরা ছয় ভাগ খরচ করবে। আমরা এখন এটাও জানি শতকরা ছয় শতাংশ দূরে থাকুক লেখাপড়ার পিছনে খরচ এখন তিন শতাংশ না, দুই শতাংশ থেকে একটু বেশি। আমাদের পাশের দেশ ভারতবর্ষে সেটা চার শতাংশ—অর্থাৎ আমাদের প্রায় দ্বিগুণ। তাই আমরা যখনই ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার তুলনা করি তখন গভীর এক ধরনের মনবেদনা নিয়ে লক্ষ করি আমরা আমাদের দেশে লেখাপড়ার মতো বিষয়টাকে কতো হেলাফেলা করে দেখি। আমি যতটুকু জানি সারা পৃথিবীর লেখাপড়ার পিছনে যে দেশগুলো সবচেয়ে কম টাকা খরচ করে—বাংলাদেশ হচ্ছে তার একটি! আমার মাঝে মাঝে নিজেকে চিমটি কেটে দেখতে হয় সত্যিই আমি জেগে আছি কিনা এবং সত্যিই এত কম টাকা খরচ করে আমরা আমাদের কোটি কোটি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করিয়ে যাচ্ছি—ব্যাপারটি সত্যি কি না। আমাদের দেশের অর্থনীতি আগের থেকে কতো বেশি শক্ত হয়েছে, অথচ এখনও আমাদের নীতিনির্ধারকেরা দেশের লেখাপড়ার গুরুত্বটা বুঝে লেখাপড়ার পিছনে আরও একটু বেশি টাকা কেন খরচ করেন না—আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না।

যদি আমরা আমাদের লেখাপড়ার পেছনে পাশের দেশ ভারতবর্ষের সমান হারেও টাকা খরচ করতাম তাহলেই এই দেশে রীতিমতো ম্যাজিক হয়ে যেত! স্কুলের বিল্ডিংগুলো ঠিক করা যেত, আরো অনেক বেশি দক্ষ শিক্ষক নেওয়া যেত, ক্লাসরুম আধুনিক করা যেত, স্কুলে স্কুলে সুন্দর ল্যাবরেটরি করা যেত, চমত্কার লাইব্রেরি করা যেত, বাচ্চাদের দুপুরে নাস্তা দেওয়া যেত, ঝকঝকে ছাপায় চার রঙের পাঠ্যবই দেওয়া যেত, হাওর অঞ্চলে বর্ষাকালে স্পিডবোটে করে ছেলেমেয়েদের স্কুলে আনা যেত, পাহাড়ি অঞ্চলে স্কুলে স্কুলে হোস্টেল রাখা যেত, ছেলেমেয়েদের নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা যেত, স্কুলের ছেলেমেয়েদের জন্য আধুনিক স্কুল বাস দেওয়া যেত, তাদের দল বেঁধে চিড়িয়াখানা কিংবা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া যেত—এই তালিকাকে আমি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে পারি। কিন্তু তালিকাটির দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাসই ফেলতে হবে, তাই তালিকাটি আর দীর্ঘ করতে চাই না।

আশা করে আছি কোনো এক সময় সরকার বুঝতে পারবে—পদ্মা ব্রিজ কিংবা গভীর সমুদ্রের বন্দর কিংবা নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্র থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লেখাপড়া, আর সত্যি সত্যি আমরা দেখব—লেখাপড়ার জন্যে বরাদ্দ তিন গুণ বেড়ে গেছে। তারপর চোখের পলকে আমরা এই দেশে একটা ম্যাজিক ঘটে যেতে দেখব।
যতদিন সেটি না হচ্ছে ততদিন আমি আমার এই ভাঙা রেকর্ডটি বাজিয়েই যাই!

লেখক : কথাসাহিত্যিক, শিক্ষক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল
  2. মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই
  3. সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান
  4. মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু
  5. বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই
  6. আমিরের ‘সিতারে জমিন পর’ সাত দিনে ১০০ কোটি থেকে আর কত দূরে?
সর্বাধিক পঠিত

বাবু ভাইয়া থাকছেন, জলঘোলা শেষে ‘হেরা ফেরি থ্রি’তে পরেশ রাওয়াল

মা হচ্ছেন সোনাক্ষী? এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী নিজেই

সাধারণ মানুষের জন্য সিনেমা দেখা এখন বিলাসিতা : আমির খান

মৃগী রোগ ছিল ‘কাটা লাগা’ অভিনেত্রীর, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই হয় মৃত্যু

বলিউডের ‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালি আর নেই

ভিডিও
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৮৮
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫৪
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০৩
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৯
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮২
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৯
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৮
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও : পর্ব ৩

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x