কালের সাক্ষী দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ

টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ারে রয়েছে বেশ কিছু ঐতিহ্য মন্ডিত ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। যা প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন। তন্মধ্যে উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি জামে মসজিদ। ধারণা করা হয়, স্যার আবদুল করিম গজনবী জমিদারদের পূর্ব পুরুষরা এ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।
১৮৯৪ সালে আবদুল করিম গজনবী জমিদারী পরিচালনার ভার নেন, সেইসঙ্গে তিনি সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। সম্ভবত তখনই মসজিদের পূর্ণাঙ্গতা পায়। তবে মসজিদটির বয়স সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
মসজিদটি সম্পূর্ণ কড়ি ও শ্বেত পাথরে তৈরি। ২৮ শতাংশ জমির উপর নির্মিত মসজিদের দৈর্ঘ্য ৫৫ ফুট প্রস্থ ৪৮ ফুট এবং উচ্চতা ২৫ ফুট। মসজিদে প্রায় ৩০০জন মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন। এখন পর্যন্ত এই মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে থাকেন স্থানীয়রা। জমিদার বংশধরেরা কেউই থাকেন না এখানে। তবে এ পরিবার কর্তৃক নিযুক্ত নির্ধারিত ব্যক্তিরা বাড়িটি দেখাশোনা করেন।
মসজিদের ভেতরে দেয়ালের কারুকাজ নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন। শ্বেতপাথরে খোদাই করা কোরআনের আয়াত লেখা রয়েছে দেয়ালের গায়ে। বাইরের দেয়ালেও আকর্ষনীয় নানা নকশা রয়েছে। মসজিদের তিনটি দরজা থাকলেও কোনো জানালা নেই। আরও রয়েছে বড় তিনটি গম্বুজ, যা ছাদ থেকে প্রায় ২৫ ফুট উঁচু। চারপাশে চারটি মূল স্তম্ভ ও ১৬টি ছোট স্তম্ভ শীর্ষে এসে গম্বুজের রূপ নিয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলো বেশ পুরু। মসজিদের ঠিক সামনেই রয়েছে একটি দিঘি। মুসল্লিদের ওযু গোসলের জন্য এই দিঘিতে বয়েছে সিড়িযুক্ত পাকা ঘাটলা। তবে সিড়িগুলো ভগ্নদশা।
স্থানীয়দের দাবি, জমিদার বাড়ি, জমিদারি আমলের মসজিদ, বিভিন্ন স্থাপনা ও দিঘি সংস্কার করলে এই ঐতিহাসিক স্থানটি হতে পারে একটি দৃষ্টিনন্দন ও দর্শনীয় স্থান।