রম্য
গরমে অতিষ্ঠ ইলিশের পয়লা বৈশাখ বর্জনের ডাক

মাছের রাজা ইলিশ। আর রাজারা কখনো হার মানে না, সব অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোই তাদের চরিত্র। মাছের মাঝে রাজা হওয়ার পরও ইলিশরা নাকি তাদের প্রাপ্য সম্মান পাচ্ছে না। যেখানে সাধারণ মানুষও ঘরবাড়িতে এসি লাগিয়ে রাখে, সেখানে ইলিশের এই গরমে কষ্ট করতে হচ্ছে। রাজার প্রতি এ আচরণ কখনো মেনে নেওয়া যায় না। রানি ইলিশরা নাকি মেকআপ করতে পারছে না। গরমে নাকি মুখের ফাউন্ডেশন ঝরে পড়ছে। এই নিয়েও ইলিশ সমাজ উদ্বিগ্ন। তাই এই অন্যায়, অসম্মানের বিরুদ্ধে আজ সারা বাংলার ইলিশ জেগে উঠেছে। আর কত দিন এভাবে সহ্য করা যায়? সারা দিন পানির মাঝে থেকেও যেন কোনো লাভ নেই। পদ্মার পানি যেন নিজের মেজাজ হারিয়ে মাথা গরম করে ফেলেছে। এ পানিতে থাকাই দায়!
আবার সামনে পয়লা বৈশাখ, এই গরমের মাঝে পয়লা বৈশাখে কি করে থাকবে তারা! এত গরম সহ্য করা যায়? যেখানে মানুষ পর্যন্ত ঘেমে অস্থির। তার পরের আফসোসের কথা তারা তো ঘামাতেও পারে না! ইলিশ বাচ্চাদের কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে গরমে, চিন্তা করা যায়!
এর মাঝে আবার বাচ্চাদের ধরে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জাল দিয়ে, তাদের ভয়, পানির মাঝেই এত গরম, না জানি পানির ওপরে কী পরিমাণ গরম হয়! এসব চিন্তা করে ইলিশ সম্প্রদায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা কিছুতেই এই পয়লা বৈশাখে অংশগ্রহণ করবে না। এবং তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। এমনকি তারা নাকি মাঝেমধ্যে গরমে পানির ভেতর সাঁতরাতে সাঁতরাতে ভুল করে পদ্মা নদীকে আরব সাগর ভেবে ভুল করছে! আরব দেশেও নাকি এত গরম হয় না!
কিন্তু ইলিশ ছাড়া বাঙালির পয়লা বৈশাখ অসম্ভব, পয়লা বৈশাখের দ্বারপ্রান্তে এসে তাদের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। তারা সমঝোতায় এলে ইলিশ সম্প্রদায় তিন দফা দাবি দেয় :
১. নদীর পানিতে কুলার লাগিয়ে ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করতে হবে।
২. তাদের পানি থেকে তুলে ফ্রিজের মাঝে রাখতে হবে।
৩. নদীর পানিতে ফিল্টারের ব্যবস্থা করতে হবে, অপরিষ্কার পানিতে তাদের কষ্ট হয় তাই।
তারা বলেছে, এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা পয়লা বৈশাখে অংশগ্রহণ করবে না, এমনকি তাদের দাবি আদায়ে তারা যেকোনো ধরনের পন্থা অবলম্বন করবে।