শেয়ার দর কমলেও লেনদেনে সেরা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ১১৫ কোটি ছয় লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে (২৭ এপ্রিল-৩০ এপ্রিল)। যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট লেনদেনের আট দশমিক ১৬ শতাংশ। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে কোম্পানিটি। তবে শেয়ারপ্রতি দর এক টাকা ২০ পয়সা কমেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ২১৪ টাকা ১০ পয়সা। আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২১৫ টাকা ৩০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি দর কমেছে এক টাকা ২০ পয়সা বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। গতকাল বুধবার মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৯৭৮ কোটি ৯১ লাখ ৬১ হাজার ২৪১ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ২৪ এপ্রিল ছিল ১৯ হাজার ৮৫ কোটি ২৯ লাখ দুই হাজার ৪৫৩ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মূলধন কমেছে ১০৬ কোটি ৩৭ লাখ ৪১ হাজার ২১২ টাকা।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ১৫১ টাকা ৯৪ পয়সা ছিল। কিন্তু গতকাল বুধবার কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর ২১৪ টাকা ১০ পয়সায় কেনাবেচা হয়। যদিও ঈদের পর গত ১০ এপ্রিল শেয়ারপ্রতি দর ছিল ২১৯ টাকা। অপরদিক গতকাল বুধবার কোম্পানিটির পিই রেশিও দাঁড়ায় সাত দশমিক ৫৯ পয়েন্টে। পিই রেশিও অনুসারে কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিরাপদে রয়েছে।
পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যত বাড়বে ঝুঁকির মাত্রা তত বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ছয় টাকা ৮৩ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) একই সময়ে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল পাঁচ টাকা ৫৫ পয়সা। চলতি অর্থবছরের তিন প্রান্তিক (জুলাই-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ২১ টাকা ১৫ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১৮ টাকা ২৪ পয়সা। আলোচিত তিন প্রান্তিকে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ১১ টাকা ৯০ পয়সা। আগের অর্থবছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ১৭ টাকা ৩২ পয়সা। গত ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫১ টাকা ৯৪ পয়সা।
এর আগের ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর। এ জন্য কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট ছিল গত ২১ নভেম্বর। ওই অর্থবছরে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল ২৩ টাকা ৬১ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল ২০ টাকা ৯০ পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১৪২ টাকা পাঁচ পয়সা।
১৯৯৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৮৮৬ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ৮৮ কোটি ৬৪ লাখ ৫১ হাজার ১০টি। রিজার্ভে রয়েছে ১১ হাজার ৫০১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৪৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।