Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

ভিডিও
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৮
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
নাটক : প্রেম আমার
নাটক : প্রেম আমার
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৫
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৩
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
অঞ্জন আচার্য
১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭
অঞ্জন আচার্য
১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭
আপডেট: ১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য

আমি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

‘জননী দেবী নন—মানবী’

অঞ্জন আচার্য
১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭
অঞ্জন আচার্য
১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭
আপডেট: ১০:২০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭

আমার মাধ্যমে পাঠকরা জানতে পারে, মেয়ের জন্য পাত্র দেখতে বাজিতপুরে গিয়েছিল হারু। পথ সংক্ষিপ্ত করতে গিয়ে এই বিপদসংকুল রাস্তা দিয়ে তার আসা। আমি লিখছি, ‘পথ সংক্ষেপ করিবার জন্য ওই বিপথে সে পাড়ি জামইয়াছিল। পথ তাহার সংক্ষিপ্তই হইয়া গেল। পাড়িও জমিল ভালোই।’ আমার লেখায় ওই জায়গাটি বর্ণনা এমন : ‘দিনের আলো বজায় থাকিতে থাকিতে বাজিতপুরের দু-একটি সাহসী পথিক মাঠ ভাঙিয়া আসিয়া ঘাসের নিচে অদৃশ্যপ্রায় পথ-রেখাটির সাহায্যে পথ সংক্ষেপ করে। ...চণ্ডীর মা মাঝে মাঝে দুপুরবেলা এদিকে কাঠ কুড়াইতে আসে। যামিনী কবিরাজের চেলা সপ্তাহে একটি গুল্মলতা কুড়াইয়া লইয়া যায়। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে ভিনগাঁয়ের সাপুড়ে কখনো সাপ ধরিতে আসে। আর কেহ ভুলিয়াও এদিকে পা দেয় না।’ 

উপন্যাসের শুরুতেই পাওয়া যায় মূল চরিত্র শশীর অস্তিত্ব। গ্রামের নাম গাওদিয়া, সেখানকার সুদি মহাজন গোপালের ছেলে শশী কলকাতা থেকে পাস করা একমাত্র ডাক্তার। শহরের ছাপ লাগা শশী কেন রঙিন শহর ছেড়ে গ্রামে এসে ডাক্তারি করে, সেই যুক্তি তুলে ধরে বলেছি, ছাপটা শহরের হলেও সেটা সাময়িক, গ্রামের যে দাগটা শশীর মাঝে গভীর সেটা সহজে মুছে দিতে পারেনি সেই রঙিন হাওয়া। এ ছাড়া আরো একটি কারণ যেন তার বাবার কাজের প্রায়শ্চিত্ত করা। তার বাবা গোপাল সম্পর্কে শশীর মনোভাব খুব ভালো না। গোপাল খারাপ লোক, সুদি মহাজন হিসেবে এমনিতেই সে ঘৃণ্য। তার ওপর যামিনী কবিরাজের স্ত্রীকে ঘিরে অনেক কানাঘুষা আছে। স্বার্থ ও অর্থ এই দুটোকেই সে বেশি করে চিনেছিল এবং কঠোর শাসনের মাধ্যমে সে এই শিক্ষাটি শশীর মাঝে স্থানান্তর করতে চায়। সে যে খুব একটা বিফল তাও না, উপন্যাসে আছে, শশীর চরিত্রে দুটি সুস্পষ্ট ভাগ আছে। একদিকে তার মন কল্পনা, ভাবাবেগ আর রসবোধে পূর্ণ, অন্যদিকে সাধারণ সাংসারিক বুদ্ধি ও ধনসম্পত্তির দিকে ঝোঁকও যথেষ্ট। আমার মতে, শশীর কল্পনাময় অংশটুকু গোপন ও বোবা। বুদ্ধি, সংযম এবং হিসেবি প্রকৃতির পরিচয়টা পায় সাধারণ মানুষ। কিন্তু সেই গোপন ও বোবা প্রকৃতির পরিচয়টা পেয়েছিল শুধু কুসুম, রহস্যময়ী কুসুম-শশীর চরিত্রের দ্বিতীয় দিকটি স্পষ্টতই তার বাবার নিয়ন্ত্রণের ফলাফল। কিন্তু এখানে আরেকটি ভাগের কথা বলা হয়েছে, যার পরিচয় পেয়েছিল কুসুম। কুসুম তার বন্ধু পরানের স্ত্রী, হারু ঘোষের ছেলের বউ। উপন্যাসে কুসুমের সাথে পাঠকের পরিচয় হয়, যখন পরানের বোন মতিকে দেখতে শশী তাদের বাড়িতে যায়। আমি লিখেছি : ‘হারুর বউ মোক্ষদা হারুর ছেলে পরানের বৌ কুসুমের উপর ভারি খাপ্পা হইয়াছিল।’ কারণ, সন্ধ্যার প্রদীপ জ্বালানোর দেরি। কুসুম ঘাট থেকে ফিরে কলস রেখে কাপড় ছাড়ে। তারপর জ্বালতে যায় দীপ। তেইশ বছরের বাঁজা মেয়ে, গায়ে তাহার জোর কম নহে।’ শোনা গেল : ‘কুসুমকে এ বাড়ির সকলে ভয় করে।’ কারণ, ‘এই বাস্তুভিটাটুকু ছাড়া হারু ঘোষের সর্বস্ব কুসুমের বাবার কাছে বাঁধা আছে আজ সাত বচ্ছর।’

এই কুসুমই ‘চাঁদ উঠলে, চাঁদ উঠার আভাস দেখলে’ শুনতে পায় :

‘ভিনদেশী পুরুষ দেখি চাঁদের মতন
লাজরক্ত হইল কন্যা পরথম্ যৌবন।’

এই কুসুমের বর্ণনা উঠে আসে এভাবে : ‘কে সে কিশোরী, ভিনদেশী পুরুষ দেখিয়া যার লজ্জাতুর প্রেম জাগিত? সে কুসুম নয়, হে ভগবান, সে কুসুম নয়।’

তবে পাঠক মাত্রই বুঝতে পারে এই ভিনদেশি পুরুষ হলো শশী। শশীকে কুসুম পাগলের মতো ভালোবাসে। শশী সেটা বোঝে, তবে বুঝেও না বোঝার ভান করে, অবহেলা করে, খেলা খেলে। কিন্তু শশী কুসুমকে ভালোবাসে কি না তা রহস্য থাকে। 

কুসুমের প্রেম প্রকাশে জড়তা নেই, শশী যেন তাতে বিব্রত হয়। মিথ্যে অসুখ বলে চলে আসে শশীর ঘরে, শশীর সাধের গোলাপ চারাটা আচ্ছা মতো পা দিয়ে পাড়িয়ে আসে—এ যেন সুন্দরের প্রতি কুসুমের রাগ, শশীর প্রতি প্রতিশোধ। শশী ভাবে : ‘কাঁটা ফুটিবার ভয়ও কি নাই কুসুমের মনে?’

তাদের গোপন অভিসার তালতলায়। কুসুম একসময় বলেই বসে— ‘সইতে পারি না ছোটবাবু।’

উত্তরে শশীর অবহেলা—‘আমরা ছেলেমানুষ নই। ইচ্ছে হলেই একটা কাজ কি আমরা করতে পারি? বুঝে-সুঝে কাজ করা দরকার।’

দীর্ঘ নয়টি বছর কুসুম অপেক্ষা করে শশীর জন্যে। একদিন সন্ধ্যার পরে মতির বিয়ে নিয়ে কথা হয়েছিল শশী ও কুসুমের। আকাশে তখন চাঁদ ছিল। ঘরের চালা যে জ্যোৎস্নার ছায়া ফেলেছিল সেই ছায়ায় দাঁড়িয়ে ছিল দুজনে। এই পরিবেশে দাঁড়িয়ে কুসুম তার ভালো লাগার কথা সরাসারি জানিয়েছিল শশীকে : ‘এমনই চাঁদনী রাতে আপনার সঙ্গে কোথাও চলে যেতে সাধ হয় ছোটবাবু।’ শশীর কাছ থেকে এই কথার উত্তর না পেয়ে ‘কুসুম নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিল, ‘আপনার কাছে দাঁড়ালে আমার শরীর এমন করে কেন ছোটবাবু?’ 

কুসুমের এ কথায় শশী উত্তর দিয়েছিল—‘শরীর! শরীর! তোমার মন নাই কুসুম?’ 

কুসুমকে নাম ধরে খুবই কমই ডাকত শশী। পরানের বউ ছিল বলে শশী তাকে ‘বৌ’ বলে ডাকতো। কিন্তু দীর্ঘ বছর পর শশীকেই কাঙালের মতো ফিরে আসতে হয় কুসুমের কাছে। ততদিনে আর নিজের অবস্থানে নেই কুসুম। উপন্যাসের শেষ পর্যায়ে কুসুম যখন গাওদিয়া গ্রাম ছেড়ে যাচ্ছে তখন কুসুমের শরীর ডাক্তার শশীর কাছে ‘অপার্থিব সুন্দর মনে হইতেছিল।’ আমি তখন লিখলাম : ‘তার (কুসুম) সমস্ত শরীর শশী জড়াইয়া ধরিতে পারিল না, হঠাৎ করিল কি, খপ করিয়া কুসুমের একটা হাত ধরিয়া ফেলিল।’

কুসুম বলছে, ‘কতবার নিজে যেচে এসেছি, আজকে ডেকে হাত ধরা-টরা কি উচিত ছোটবাবু? রেগে-টেগে উঠতে পারি তো আমি? বড় বেয়াড়া রাগ আমার।

শুনিয়া শশীর আধো পাংশু মুখখানা প্রথমে একেবারে শুকাইয়া গেল। কে জানিত কুসুমকে এত ভয়ও শশী করে? তবু কুসুমের হাতখানা সে ছাড়িল না। বলিল, রেগো, কথা শুনে রেগো। আমার সঙ্গে চলে যাবে বৌ?’

উত্তরে কুসুম জানায়, ‘চলে যাব? কোথায়?’

শশীর কাতর কণ্ঠ : ‘যেখানে হোক। যেখানে হোক চলে যাই, চল আজ রাত্রে।’

কুসুম সঙ্গে সঙ্গেই ফিরিয়ে দেয় শশীকে, ‘কেন যাব? ...আপনি বুঝি ভেবেছিলেন যেদিন আপনার সুবিধে হবে ডাকবেন, আমি অমনি সুড়সুড় করে আপনার সঙ্গে চলে যাব? কেউ তা যায়?’

শশী অধীরভাবে বলে, ‘একদিন কিন্তু যেতে।’

কুসুম তা স্বীকার করে বলে, ‘তা যেতাম ছোটবাবু, স্পষ্ট করে ডাকা দূরে থাক, ইশারা করে ডাকলেও ছুটে যেতাম। চিরকাল কি একরকম যায়? মানুষ কি লোহার গড়া, যে চিরকাল সে একরকম থাকবে, বদলাবে না? বলতে বসেছি যখন কড়া করেই বলি, আজ হাত ধরে টানলেও আমি যাব না।’

কুসুমের হাত ছেড়ে দিয়ে শশী বলল তখন, ‘তোমার রাগ যে এমন ভয়াবহ তা জানতাম না বৌ। অনেক বড় বড় কথা তো বললে, একটা ছোট কথা কেন তুমি বুঝতে পার না? নিজের মন কি মানুষ সব সময় বুঝতে পারে বৌ? অনেক দিন অবহেলা করে কষ্ট দিয়েছি বলে আজ রাগ করে তার শোধ নিতে চলেছ, এমন তো হতে পারে আমি না বুঝে তোমায় কষ্ট দিয়েছি, তোমার ’পরে কতটা মায়া পড়েছে জানতে পারি নি? তুমি বললে মানুষ বদলায়— বেশ, আমি অ্যাদ্দিন তোমার সঙ্গে খেলাই করেছি, আজ তো আমি বদলে যেতে পারি বৌ?’

ম্লান মুখে কুসুমের উত্তর : ‘লাল টকটকে করে তাতানো লোহা ফেলে রাখলে তাও আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়ে যায়, যায় না? সাধ আহ্লাদ আমার কিছু নেই, নিজের জন্যে কোনও সুখ চাই না— বাকি জীবনটা ভাত রেঁধে ঘরের লোকের সেবা করে কাটিয়ে দেব ভেবেছি— আর কোনো আশা নেই, ইচ্ছে নেই, সব ভোঁতা হয়ে গেছে ছোটবাবু। লোকের মুখে মন ভেঙে যাবার কথা শুনতাম, অ্যাদ্দিনে বুঝতে পেরেছি, সেটা কী। কাকে ডাকছেন ছোটবাবু, কে যাবে আপনার সঙ্গে? কুসুম কি বেঁচে আছে? সে মরে গেছে।’

এরপর একদিন কুসুম চলে যায় গাওদিয়া গ্রাম ছেড়ে। শশীকে একলা করে দিয়ে। এদিকে নিজের বাবার সাথে শশীর আদর্শিক দ্বন্দ্ব তুঙ্গে ওঠে। শশী ঠিক করে সেও শহরে চলে যাবে। তাকে আটকায় গোপাল। গোপালের এত সম্পত্তি বিত্ত তা তো সব শশীর জন্য। তাই সে নিজে বের হয় পথে। আর নিজের সবকিছু পাহারায় রেখে যায় শশীকে। শশীও আটকা পড়ে যায়।

উপন্যাসে শশীর বন্ধু কুমুদ, সে বিয়ে করে পরানের সহজ সরল বোন মতিকে। কুমুদ শশীকে শহর চিনিয়েছিল, জীবন চিনিয়েছিল। শশীর যে আধুনিকতা, সবটাই কুমুদের দান। কুমুদ প্রতিভাবান, কিন্তু ছন্নছাড়া, সে সত্যিই মতির সরলতা ভালোবাসে। তাদের নিয়ে উপন্যাসের অনেক অংশ জুড়ে আছে। কিন্তু এক জায়গায় আমি সেটা থামিয়ে দিই। এ নিয়ে আমি এই উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ডে লিখব বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু নানা কারণেই সেই খণ্ড আর শুরু করা হয়নি আমার।

উপন্যাসটির শুরুর মতো শেষটাও অনেকের কাছে ভালো লাগে শুনেছি : ‘মাটির টিলাটির উপর উঠিয়া সূর্যাস্ত দেখিবার শখ এ জীবনে আর একবারও শশীর আসিবে না।’ শশী যেন আটকা পড়ে গেছে যক্ষের মতো, উত্তরাধিকারের মতো তাকে পালন করতে হবে তার বাবার দায়িত্ব। সেখানে ভালোবাসার সুযোগ কী আসবে তার জীবনে। কুসুমের মতো ভালো আর কেউ তাকে বাসতে পারবে না এই বাস্তব সত্য একসময় এসে ধরা দেয় শশীর মনে।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন তাঁর ‘ফিরে দেখা : নোরা ও কুসুম’ প্রবন্ধে এই উপন্যাসটির মূল্যায়ন করেন এভাবে : ‘এ সমাজে যেসব পুতুলকে নাচানো হয় এবং যারা নাচায় তাদের ইতিকথা বর্ণিত হয়েছে অসাধারণ কথাশিল্পীর মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে।... নারীকে মানিক যাযাবর জীবন উপভোগের স্বাধীনতা দিয়েছেন। এলোমেলো পথের জীবনকে বরণ করার সাহস দিয়েছেন। মানিকের উপন্যাসে নারীর ভুবন নারীরই। পুতুলনাচের ইতিকথা উপন্যাসের প্রধান নারী চরিত্র কুসুম গৃহের পরিসরে বাস করে আর একজনকে ভালোবাসার সাহস পেয়েছিল। সমাজ তাকে কিছু বলেনি। তাকে প্রত্যাখ্যান করারও সাহস কুসুমের হয়েছিল। সমাজ তাকে কিছু বলেনি। তাহলে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কি নারীর জন্য সেই সমাজ চেয়েছিলেন যা সাম্য ও সমতার প্রতিষ্ঠিত ক্ষেত্র?’

আমার প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৩৫ সালে। সেই বছর মার্চ মাসে (ফাল্গুন ১৩৪১ বঙ্গাব্দ) কলকাতার গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স প্রকাশ করে আমার জননী উপন্যাসটি। এই বইটির প্রকাশ সংক্রান্ত বিষয়ে হায়াৎ মামুদ কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হতে পারে : জননী রচনার ও প্রকাশের ইতিহাস জানার জন্য লেখকের বয়ঃকনিষ্ঠ এক লেখক এবং গুরুজনস্থানীয় এক সম্পাদকের স্মৃতিচারণ প্রণিধানযোগ্য। প্রথম জন ভবানী মুখোপাধ্যায়। তিনি লিখছেন : ‘মানিকের জননী উপন্যাসখানি একটি ফুলস্কেপ সাইজের বিরাট খাতায় লেখা ছিল। ছোট অক্ষরে লেখা সেই উপন্যাসটি হাতে করে তাকে অনেক ঘুরতে হয়েছে। জেনারেল পিন্টার্সে সুরেশবাবু জননী ছাপবার আগে আর্য পাবলিশিং-এর শশাঙ্ক চৌধুরীর কাছে অনেকদিন রাখা ছিল।’ দ্বিতীয় জন সজনীকান্ত দাস, বিখ্যাত ও কুখ্যাত ‘শনিবারের চিঠি’র সম্পাদক। তিনি জানিয়েছেন : ‘মানিকের প্রথম গ্রন্থের প্রকাশ সম্বন্ধে যাবতীয় সংকলন-গ্রন্থে ও সাময়িক পত্রে ভুল লেখা হইয়াছে [...]। ১৩৪০ বঙ্গাব্দে নয়, ১৩৪১ বঙ্গাব্দের ২৩ ফাল্গুন, ১৯৩৫ খ্রীষ্টাব্দের ৭ই মার্চ জননী ছাপিয়া মানিক সর্বপ্রথম গ্রন্থকার-শ্রেণীভুক্ত হন [...]।’ এবং তিনি প্রকাশ হিসেবে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এ- সন্সের উল্লেখ করেছেন। পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল ২৮৪ এবং মূল্য দু টাকা মাত্র। 

আমাদের পরিজ্ঞাত তথ্যের ভিতরে একটি অসংগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। একটি ব্যাপার মোটামুটি স্পষ্ট যে প্রকাশক পেতে তাঁর [মানিক] কষ্ট হয়েছিল। আর্য পাবলিশিং ছাপলে বই আগেই বেরোত। কিন্তু জেনারেল প্রিন্টার্স কি ‘জননী’ ছেপেছিলেন? ভবানী মুখোপাধ্যায়ের এই ইঙ্গিতের (‘জেনারেল পিন্টার্সে সুরেশবাবু জননী ছাপবার আগে’) সমর্থনে আমরা কোনো তথ্য পাইনি। তাঁর বক্তব্য যথার্থ ধরে নিলে সিদ্ধান্তে আসতে হয়, ১৯৩৫-এর ৭ই মার্চের পূর্বে আরেক বার ‘জননী’ প্রকাশিত হয়েছিল এবং প্রকাশ করেছিলেন সুরেশবাবু যিনি জেনারেল প্রিন্টার্সের লোক। অবশ্য এই সুরেশবাবু গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এ- সন্সের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন কিনা আমাদের জানা নেই। যাই হোক, কি স্বয়ং মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কি তাঁর অন্যান্য পরিচিত জন বা পরবর্তীকালে গবেষকবৃন্দ—কেউই অন্য কোনো প্রকাশক বা ভিন্ন কোনো প্রকাশতারিখ বিষয়ে কোথাও কিছু বলেন নি।”

জননী একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। শহরতলি ও গ্রামের এক মিশ্র পরিচয় পাওয়া যায় এটিতে। মূলত শহরতলীতে বসবাসরত শ্যামা নামে এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধূর মা হওয়াকে কেন্দ্র করেই এ উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে। শ্যামার পারিবারিক জীবন যেন অনেকাংশেই বহন করে চলে গ্রামীণ জীবনাচরণ। সাধারণত দেখা যায়, সাহিত্যে ‘মা’ হওয়ার ধারণাটিকে অনেক বেশি আবেগে ও অলঙ্কারে বর্ণনা করা হয়। কিন্তু এটা যে একজন নারী সাধারণ প্রক্রিয়া তা-ই দেখা চেয়েছি আমি। এ উপন্যাসটির পাণ্ডুলিপি প্রচ্ছদে আমার নোট দেখলেই তা স্পষ্ট হয় : “জননী দেবী নন—মানবী। [‘ভাল ও মন্দ মহত্ত্ব ও হীনতা’ লিখে কেটে দেওয়া হয়েছে] সাধারণ গৃহস্থ সংসারের এক জননীর চিত্র আঁকিতে গিয়া তাকে দেবী করিতে চাহিয়া মিথ্যা করিয়া দিব কেন?”

উপন্যাসের শুরুতেই আমি বর্ণনা করি শ্যামার মা হওয়ার বিষয়টি : “সাত বছর বধূজীবন যাপন করিবার পর বাইশ বছর বয়সে শীতলের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী শ্যামা প্রথমবার মা হইল।” সেই সাথে পরিচয় তুলে ধরি শ্যামার। বাবার বাড়ি কিংবা শ্বশুরবাড়ির দিকে প্রায় কেউ-ই নেই তার। মায়ের পেটে থাকার সময়েই বাবা ব্রহ্মপুত্রে নৌকাডুবিতে মারা যান। আর মাত্র ১১ বছর বয়সে হারায় মাকে। ছিল শুধু এক মামা। শ্যামার বিয়ের এক বছরের মাথায় সেই মামাও নিজের সব সম্পত্তি জলের দামে বিক্রি করে নিরোদ্দেশ হয় গ্রামের এক বিধবা নারীকে নিয়ে। অন্যদিকে শ্বশুরবাড়িতে শ্যামার কাছের মানুষ বলতে থাকে বিবাহিত রুগ্ণ ননদ মন্দাকিনী। শ্যামার স্বামী শীতল নেশাগ্রস্ত, বদমেজাজি ও বহির্মুখী মানুষ। তাই শ্যামার বাইরের জীবন বলতে কিছু নেই, নিজের ঘরেই গড়ে ওঠে তার নিজস্ব পৃথিবী। 

সাত বছর বিবাহিত জীবনের পর প্রথমবার মা হয় শ্যামা। কিন্তু এত বছর মা হওয়া ব্যর্থ চেষ্টার বর্ণনাও পাওয়া যায় উপন্যাসের শুরুতেই : “একটা যুক্তহীন ছেলেমানুষি ধারণা সে করিয়া রাখিয়াছিল যে, সে নিজে যখন এখন এক মার এক মেয়ে, দুটি একটির বেশি ছেলেমেয়ে তারও হইবে না। বড় জোর তিনটি। গোড়ার কয়েক বছরের মধ্যেই এরা আসিয়া পড়িবে, এই ছিল শ্যামার বিশ্বাস। তৃতীয় বছরেও মাতৃত্বলাভ না করিয়া সে তাই ভীত হইয়া উঠিয়াছিল। তার পরের চারটা বছর সে পূজা, মানত, জলপড়া, কবচ প্রভৃতি দৈব উপায়ে নিজেকে উর্বরা করিয়া তুলিতেই একরকম ব্যয় করিয়াছে। শেষে, সময়মতো মা না হওয়ার জন্য এবং দৈব উপায়ে মা হইবার চেষ্টা করিবার জন্য নানাবিধ মানসিক বিপর্যয়ের পর তার যখন প্রায় হিস্টিরিয়া জন্মিয়া যাওয়ার উপক্রম হইয়াছে, তখন ফাল্গুনের এক দুপুরবেলা ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করিয়া শীতলপাটিতে গা ঢালিয়া ঘুমে আয়োজন করিবার সময় সহসা বিনাভূমিকায় আকাশ হইতে নামিয়া আসিল সন্দেহ। বাড়িতে তখন কেহ ছিল না। দুপুরে বাড়িতে কেহ কোনোদিনই প্রায় থাকিত না, থাকিবার কেহ ছিল না— আত্মীয় অথবা বন্ধু। সন্দেহ করিয়াই শ্যামার এমন বুক ধড়ফড় করিতে লাগিল যে, তার ভয় হইল হঠাৎ বুঝি তার ভয়ানক অসুখ করিয়াছে। সারাটা দুপুর সে ক্রমান্বয়ে শীত ও গ্রীষ্ম এবং রোমাঞ্চ অনুভব করিয়া কাটাইয়া দিল। সন্দেহ প্রত্যয় হইল এক মাসে। কড়া শীতের সঙ্গে শ্যামার অজ্ঞাতে যাহার আবির্ভাব ঘটিয়াছিল, সে জন্ম লইল শরৎকালে।”

(চলবে)

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল
  2. শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব
  3. বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব
  4. পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার
  5. টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
  6. বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!
সর্বাধিক পঠিত

অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল

শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব

পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার

টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা

ভিডিও
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৫
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১২
গানের বাজার, পর্ব ২৩৩

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x