Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

ভিডিও
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৩
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭১
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৭১
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
ফাউল জামাই : পর্ব ৯৫
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৫
অঞ্জন আচার্য
১২:৪১, ১৯ মে ২০১৬
আপডেট: ১৭:২৪, ১৯ মে ২০১৬
অঞ্জন আচার্য
১২:৪১, ১৯ মে ২০১৬
আপডেট: ১৭:২৪, ১৯ মে ২০১৬
আরও খবর
কাজী নজরুল ইসলাম : দ্রোহের কবি, সম্প্রীতির কবি
আন্দোলন-সংগ্রাম, রাজনীতিতে নজরুল-সাহিত্যের প্রভাব
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এশিয়া অঞ্চলে বিজয়ী ফারিয়া বাশার
স্বাগত ১৪৩২: বাংলা নববর্ষ বাঙালির উৎসব
ঢাকার ঈদ মিছিলে মোগল ঐতিহ্য

স্মরণ

প্রবোধ থেকে মানিক হওয়ার গল্প

অঞ্জন আচার্য
১২:৪১, ১৯ মে ২০১৬
আপডেট: ১৭:২৪, ১৯ মে ২০১৬
অঞ্জন আচার্য
১২:৪১, ১৯ মে ২০১৬
আপডেট: ১৭:২৪, ১৯ মে ২০১৬

কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে জীবনের প্রথম গল্প লেখেন তিনি। সেই গল্প প্রকাশিতও হয় সে সময়ের বিখ্যাত ‘বিচিত্রা’ পত্রিকাতে। রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় পাঠক মহলে। তার পরেরটুকু কেবলই ইতিহাস। আর থামেনি কলম। বন্ধুর বাজিতে জিত হয় তাঁর, পাশাপাশি জয় করেন অগুনতি পাঠকের হৃদয়। তবে এই মানুষটিই একসময় বাজি ধরেন তাঁর নিজের জীবনের ওপর। কারো অধীনে চাকরবৃত্তি করে নয়, বরং নিজের মেধা ও কলমের জোরে একক হতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই বিচ্ছিন্নভাবে দু-একবার নিশ্চিত আয়ের লক্ষ্যে কর্মক্ষেত্রে পা রেখেছেন ঠিকই, কিন্তু সেখানে আপস করে টিকতে পারেননি বেশিদিন। দৃঢ় ব্যক্তিত্ব আর অদম্য জেদের বশেই কেবল লেখালেখিকে সম্বল করে তিনি বাঁচতে চেয়েছিলেন। তবে দুই ‘অ’, মানে ‘অসুখ’ ও ‘অভাব’ সেই বাজিতে বারবার নাজেহাল করে তাঁকে। মৃগী রোগ ও চরম দারিদ্র্য তাঁকে বহন করতে হয়েছে আমৃত্যু। মৃত্যুর কিছুদিন আগে হঠাৎ রাস্তায় অধ্যাপক দেবীপদ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। ‘যুগান্তর’ পত্রিকার পূজা সংখ্যায় গল্প দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁকে দেখে খুব কষ্ট হয় দেবীপদের। তাঁর শীর্ণ দেহ, নিকেলের চশমা, মলিন বেশ-বাস, ঘর্মাক্ত চেহারা—সব মিলিয়ে সেদিন খুব বেদনা বোধ করেন দেবীপদ। তাই রাস্তা থেকেই একরকম ধরে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে। ক্লান্ত মানুষটিকে কিছু খেতে দিলেন দেবীপদের মা। বড় তৃপ্তির সঙ্গে খেলেন তিনি। হঠাৎ দেবীপদকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘দেখো, দুটি ডাল-ভাতের সংস্থান না রেখে বাঙলা দেশে কেউ যেন সাহিত্য করতে না যায়।’

হ্যাঁ, আমি প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই বলছি, যাঁকে আমরা সবাই চিনি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে। সাহিত্যের এ অম্লান মানিক ছিলেন রবীন্দ্র ও শরৎ-পরবর্তী অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক। নিজের জীবনকে তো বটেই, মানুষের জীবনকেও তিনি প্রথমে দেখেছেন ফ্রয়েডের মনস্তত্ত্বে, পরে মার্কসীয় দর্শনে। কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে রচিত সাহিত্যকর্ম মানিকের শ্রেষ্ঠ, তা বিতর্ক-সাপেক্ষ বিষয় হয়ে আছে এখনো। সে বিতর্ক আজ থাক; বরং শোনা যাক প্রবোধের ‘মানিক’ হয়ে ওঠার গল্পটি।

আইএসসি পাস করার পর মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় চলে আসেন কলকাতায়। গণিতে অনার্স নিয়ে তিনি বিএসসিতে ভর্তি হন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেই কলেজ-জীবনেই বিরাট এক কাণ্ড ঘটে যায়। বয়স তখন কতই বা, বড়জোর কুড়ি। কোনো একদিন মানিক তাঁর সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন কলেজের ক্যান্টিনে বসে। এ সময় এক বন্ধুর সঙ্গে বাজি ধরেন—তাঁর গল্প সে ছাপাবে তখনকার সময়ের শ্রেষ্ঠ পত্রিকা ‘বিচিত্রা’য়। সে সময় বিচিত্রা ছিল অত্যন্ত বিখ্যাত পত্রিকা। আর তাতে কেবল নামকরা লেখকরাই লিখে থাকেন। মানিকের এমন প্রায় অসম্ভব বিষয়ের ওপর বাজি ধরাতে স্বাভাবিকভাবেই হাসাহাসি করেছিল বন্ধুরা। কিন্তু জেদি ও ব্যক্তিত্বপরায়ণ মানিক হারার পাত্র নন। লিখে ফেলেন প্রথম গল্প ‘অতসীমামী’। গল্পের নিচে লেখকের নাম হিসেবে স্বাক্ষর করেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তা পাঠিয়ে দেন বিচিত্রার সম্পাদক বরাবর। নিজের ভালো নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ছেড়ে ডাকনামেই ছাপতে দেন সেই গল্প। লেখা পাঠানোর প্রায় চার মাস পর ১৩৩৫ সনের পৌষ সংখ্যায় (ডিসেম্বর ১৯২৮) ছাপা হয় মানিকের সেই গল্প। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই গল্পটি সাড়া ফেলে পাঠক মহলে। সেই থেকে সাহিত্য জগতে প্রবেশ ঘটে মানিকের। এর পর থেকে নিয়মিত বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা পাঠাতে থাকেন মানিক। সেই সঙ্গে প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নামটি চাপা পড়ে যায় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের তলে। ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন, যা মানিককে এতটা জেদি করে তুলেছিল? ঘটনাটি না হয় একটু খতিয়ে দেখা যাক।

ক্লাসের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার এক ফাঁকে এক সহপাঠী বলে উঠলেন, নামকরা লেখক বা দলের লেখক না হলে পত্রিকাওয়ালা লেখা ছাপায় না। আরেক সহপাঠীর লেখা গল্প বিভিন্ন কাগজ থেকে ফেরত এসেছে অমনোনীত হয়ে। এ সময় সেই সহপাঠী গালিগালাজ করতে লাগলেন সম্পাদকদের উদ্দেশ করে। তখন মানিক বললেন, এমনটা বাজে বকছ কেন? নামকরা লেখক বা দলের লেখক না হলে লেখা ছাপা হয় না, এটা হতে পারে না। ভালো লেখা হলে কেন ছাপবে না, অবশ্যই ছাপবে। সহপাঠীর উত্তর, ‘আমারটা ছাপেনি তো।’ মানিকের পাল্টা জবাব, ‘তোমারটা ভালো হলে নিশ্চয়ই ছাপা হতো।’ এবার খেপে উঠলেন সহপাঠী। বললেন, ‘ক্ষমতা থাকে তো একটা গল্প লিখে ছাপিয়ে দেখাও দেখি।’ মানিকেরও জেদ চেপে যায়। বললেন, ‘ঠিক আছে, তাই হবে। আমি গল্প লিখব এবং সেটি বিখ্যাত কোনো পত্রিকায় ছাপিয়ে প্রমাণ করব তোমাদের ধারণা ভুল।’ সহপাঠীর চ্যালেঞ্জ, ‘তাহলে বাজি ধরো।’ মানিকের উত্তর, ‘বাজি।’ এই বাজিকে মাথায় রেখে মানিক লিখলেন গল্প ‘অতসীমামী’। আর তা লিখতে তিন মাস লাগেনি তাঁর, তিন দিন লেগেছে মাত্র। জমা দিয়ে এলেন বিচিত্রা পত্রিকায়। সেই গল্প পড়ে পত্রিকার সম্পাদকের এতটাই ভালো লেগে গিয়েছিল যে, নিজেই চলে এলেন মানিকের কাছে। নগদ কুড়ি টাকা মানিকের হাতে তুলে দিয়ে বললেন, আরো একটা গল্প চাই। অনেকের কাছে প্রশ্ন, মাত্র ২০ বছর বয়সে বন্ধুর সঙ্গে বাজি ধরে গল্প লেখা, বিচিত্রার মতো পত্রিকায় সেই গল্প প্রকাশ ইত্যাদি সবই কি আকস্মিক বিষয়? হঠাৎ বাজিমাত করা ব্যাপার? নাকি অনেক আগে থেকেই নিজেকে সাহিত্যিক হিসেবে প্রস্তুত করছিলেন মানিক। মাত্র ২০ বছর বয়সে একজন মানুষের জীবনে কী-ই বা এমন জীবনের অভিজ্ঞতা কিংবা উপলব্ধি থাকতে পারে?

এ বিষয়ে মানিকের কথা হলো, “সাহিত্য জীবন আরম্ভ করার একটা গল্প আমি এখানে ওখানে বলেছি। ছাত্রজীবনে বিজ্ঞান শিখতে শিখতে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি রেখে ‘অতসীমামী’ গল্পটি লিখে বিচিত্রায় ছাপানো এবং হঠাৎ এভাবে সাহিত্য জীবন শুরু করে দেবার গল্প। কিন্তু একটা প্রশ্ন দাঁড়ায় এই : কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়াই কি একজন লেখকের সাহিত্য জীবন শুরু হয়ে যেতে পারে? আমি বলব, না, এ রকম হঠাৎ কোন লেখকই গজান না। রাতারাতি লেখকে পরিণত হওয়ার ম্যাজিকে আমি বিশ্বাস করি না। অনেক কাল আগে থেকেই তার প্রস্তুতি চলে। লেখক হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে আসতে আসতেই কেবল একজনের পক্ষে হঠাৎ একদিন লেখক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব।” বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকের গল্প-উপন্যাস গভীরভাবে পাঠ করেছেন মানিক। আর সেই পাঠের মধ্য দিয়ে নিজেকে এমন এক জায়গা দাঁড় করাতে চেয়েছেন, যেখানে তাঁর আগের লেখকরা পৌঁছাতে পারেননি। এ কথার প্রমাণ মেলে ‘গল্প লেখার গল্প’ প্রবন্ধে। সেখানে মানিক লিখেছেন, “বারো তেরো বছর বয়সের মধ্যে ‘বিষবৃক্ষ’, [বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়] ‘গোরা’ [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর], ‘চরিত্রহীন’ [শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়] পড়া হয়ে গিয়েছে। ...বড়ো ঈর্ষা হতো বই যাঁরা লেখেন তাঁদের ওপর।”

তবে মানিক তাঁর অগ্রজ লেখকদের প্রতি অশ্রদ্ধ ছিলেন না; বরং তাঁদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই কাজ করেছেন তিনি। তাঁর কথা হলো, পূর্বসূরি লেখকরা জীবনের বাস্তবতার যে দাবি মেটাতে পারেননি, সেখানে তিনি তাঁর সাহিত্যে সেটার মীমাংসা করার প্রয়াস করেছেন মাত্র। ‘অতসীমামী’ গল্প সম্পর্কে পরিণত বয়সে মানিক মূল্যায়ন করেছিলেন এভাবে, “রোমান্সে ঠাসা অবাস্তব কাহিনী। কিন্তু এ গল্প সাহিত্য করার জন্য লিখিনি—লিখেছিলাম বিখ্যাত মাসিকে গল্প ছাপানো নিয়ে তর্কে জিতবার জন্য। এ গল্পে তাই নিজের আসল নাম দিইনি, ডাক নাম ‘মানিক’ দিয়েছিলাম।” এ কথার আরো বিস্তারিত জানা যায় মানিকের ‘উপন্যাসের ধারা’ প্রবন্ধে। সেই প্রবন্ধের এক জায়গায় মানিক লিখেছেন, “প্রথম লিখলাম একটি গল্প—তাও লেখার খাতিরে নয়, কয়েকটি ছাত্রবন্ধুর সঙ্গে তর্কের ফলে সাধারণ একটা বাস্তব সত্যকে হাতে নাতে প্রমাণ করার জন্য। এ ঘটনার মধ্যেও প্রকাশ পেয়েছিল আমার ঔপন্যাসিকের ধাত, সাধারণ যুক্তিবোধ, বাস্তব-বোধ। তর্কটা ছিল মাসিকের সম্পাদক-মশাইদের অবিবেচনা, উদাসীনতা, পক্ষপাতিত্ব ইত্যাদি দোষ নিয়ে। সম্পাদকেরা কিরকম জীব কিছুই জানতাম না, কিন্তু ভালো একটা লেখা হাতে পেলেও শুধু লেখকের নাম নেই বলেই লেখাটা তাঁরা বাতিল করে দিয়ে থাকেন, এটা কোনমতেই মানতে পারি নি। কোন যুক্তিই পাইনি সম্পাদকদের এই অর্থহীন অদ্ভুত আচরণের। ভালো লেখার কদর নেই কদর আছে শুধু নামকরা লেখকের এ তো স্রেফ পরস্পরবিরোধী কথা। যদি ধরা যায় যে, ভালো গল্প লেখা অতি সহজ, গাদাগাদা ভালো গল্প তৈরি হওয়ায় সম্পাদকের কাছে তার বিশেষ কোন চাহিদা নেই— তা হলে নামকরা লেখকের নামেও কোন মানেই থাকে না। এত সোজা কাজ করার জন্য নাম হয় কিসে?”

“ভালো লেখা অন্যান্য কারণে সম্পাদকীয় অবজ্ঞা লাভ করতে পারে, লেখক নতুন বলে কখনোই নয়! এই সত্যটা প্রমাণ করার জন্য নিজে একটি গল্প লিখেছিলাম। সাহিত্যজগতের সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ না থাকলেও উপলব্ধি করেছিলাম যে, সাহিত্যের জগৎও মানুষেরই জগৎ, সংসারে সাধারণ নিয়মকানুন সাহিত্যের জগতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে না। মোটামুটি ভালো এক গল্প লিখলে যে কোন সম্পাদক যে সেটা নিশ্চয় সাগ্রহে ছাপবেন এ বিষয়ে এমনই দৃঢ় ছিল আমার বিশ্বাস যে তখনকার সেরা তিনটি মাসিকের যে কোন একটিতে ছ’মাসের মধ্যে আমার গল্প বার করা নিয়ে বাজি রাখতে দ্বিধা জাগেনি। কবি মনের ঝোঁক নয়, ঔপন্যাসিকের প্রতীতি— যা আসে বাস্তব হিসাব নিকাশ থেকে। গল্পটা লেখার মধ্যে ছিল এই বাস্তব বিচারবিবেচনা, কি হয় আর কি না হয় তার হিসাব। এর মধ্যেও সন্ধান পাওয়া যাবে যে, ভবিষ্যৎ ঔপন্যাসিক একদিকে কি রকম নির্বিকার। নিরপেক্ষভাবে বাস্তবতার সমগ্রতাকে ধরবার চেষ্টা করেন, অন্যদিকে তারই মধ্যে বজায় রেখে বলেন আবেগ অনুভূতির সততা— মেদহীন, মমতাহীন বিশ্লেষণে সত্যকে যাচাই করে নিয়ে তার মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করেন (যার যেমন বিশ্লেষণ ও যার যেমন প্রাণ!)।”

“প্রথমে হিসাব করেছিলাম কি ধরণের গল্প লিখবো। সবদিক দিয়ে নতুন ধরনের নিশ্চয় নয়! একেবারে আনাড়ি, হঠাৎ একদিন কলম ধরে নতুন টেকনিকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নতুন বিষয়ের গল্প খাড়া করা সম্ভবও নয়, বেশি ‘নতুনত্ব’ সম্পাদকের পছন্দ নাও হতে পারে। ভেবেচিন্তে স্থির করেছিলাম যে, রোমান্টিক গল্প লেখাই সবচেয়ে সহজ, এরকম গল্প জমে গেলে সম্পাদকেরও চট করে পছন্দ হয়ে যাবে। আদর্শ অপার্থিব প্রেমের জমকালো গল্প ফাঁদতে হবে। কিন্তু সমস্তটাই আজগুবি কল্পনা হলে তো গল্প জমবে না, বাস্তবের ভিত্তিও থাকা চাই গল্পের। কি হবে এই ভিত্তি? কাহিনী যদি দাঁড় করাই প্রেমাত্মক অবাস্তব কল্পনার, গল্পের চরিত্রগুলিকে করতে হবে বাস্তব রক্ত-মাংসের মানুষ। অতিজানা অতিচেনা মানুষকে তাই করেছিলাম ‘অতসীমামী’র নায়ক-নায়িকা। সত্যই চমৎকার বাঁশি বাজাতেন চেনা মানুষটি, বেশি বাজালে মাঝে মাঝে সত্যই তাঁর গলা দিয়ে রক্ত পড়তো এবং সত্যই তিনি ছিলেন আত্মভোলা খেয়ালি প্রকৃতির মানুষ। ভদ্রলোকের বাঁশি বাজানো সত্যই অপছন্দ করতেন তাঁর স্ত্রী, মাঝে মাঝে কেঁদে কেটে অনর্থ করতেন। শুধু এটুকু নয়। সত্যই দুজনে তাঁরা একেবারে মশগুল ছিলেন পরস্পরকে নিয়ে। এঁদের দেখেছিলাম খুবই অল্প বয়সে, সেই বয়সেও শুধু এঁদের কথা বলা, চোখে চোখে চাওয়া দেখে টের পেতাম অন্যান্য অনেক জোড়া চেনা স্বামী-স্ত্রীর চেয়ে এঁদের মধ্যে বাঁধনটা ঢের বেশি জোরালো, সাধারণ রোগে ভুগে ভদ্রলোক মারা গেলে কিছুকালের জন্য তাঁর স্ত্রী পাগল হয়ে গিয়েছিলেন। ‘অতসীমামী’ লিখবার সময় এঁদের দুজনকে আগাগোড়া মানস চোখের সামনে রেখেছিলাম। শুধু তাই নয়। সোজাসুজি কাহিনীটা লিখে না গিয়ে নিজে আমি অল্পবয়সী একটি ছেলে হয়ে গল্পের মধ্যে ঢুকে তার মুখ দিয়ে গল্পটা বলেছিলাম।”

১৯৪৫ সালে আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে মানিক জানান তাঁর না-জানা কথা। সেই কথনটাই না-হয় জানা যাক এবার। প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘অতসীমামী’ গল্পের পটভূমি তুলে ধরেছিলেন পাঠকের কাছে তিনি। ‘আমার গল্প লেখা’ আলাপচারিতায় মানিক সেদিন বলেছিলেন, “ভাবলাম এই উচ্ছ্বাসময় গল্প [অতসীমামী] নিছক পাঠকের মনভুলানো গল্প, এতে নিজের নাম দেব না। পরে যখন নিজের নামে ভালো লেখা লিখব, তখন এই গল্পের কথা তুলে লোকে নিন্দে করবে। এই ভেবে বন্ধু কজনকে জানিয়ে গল্পে নাম দিলাম ডাকনাম মানিক।” এ পর্যন্ত পড়ে জানা যায়, ‘অতসীমামী’ গল্পটিই মানিকের প্রথম প্রকাশিত গল্প। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি নতুন এক তথ্য নিয়ে হাজির হয়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র-এর ১১তম খণ্ডে (ডিসেম্বর ২০০৭) মুদ্রিত অগ্রন্থিত গল্পের তালিকায় ‘ম্যাজিক’ নামে একটি গল্প রয়েছে। গল্পটি ‘অতসীমামী’ গল্পের তিন মাস আগে (আশ্বিন ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ, সেপ্টেম্বর ১৯২৮ সাল) প্রকাশিত হয় অশ্বিনীকুমার চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত মাসিক ‘গল্পগুচ্ছ’ পত্রিকায়।

ধারণা করা হয়ে থাকে, ‘অতসীমামী’ গল্পটি লেখা ও পত্রিকায় পাঠানোর পরপরই এ ‘ম্যাজিক’ গল্পটি লেখা এবং পত্রিকায় পাঠানো হয়েছে। তবে সেটি মুদ্রিত হয় আগে। তবে এ তথ্যও পাওয়া যায়, ‘অতসীমামী’ গল্প লেখারও আগে ছাত্রজীবনে মানিক ‘জননী’ উপন্যাসটি লিখে মাত্র ৫০ টাকায় তাঁর এক বন্ধুর কাছে সেটি বেঁচে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে একই নামে সেই উপন্যাস লেখেন তিনি, তবে তা লেখেন সম্পূর্ণ স্মৃতি থেকে। প্রাবন্ধিক শচীন দাশ তাঁর ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প : দুই পর্বের বাস্তবতা’ প্রবন্ধটিতে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “আশা বোধহয় এ-রকমই যে, দুটি উপন্যাসের মধ্যে ব্যবধান নিশ্চয়ই অনেকই। তবু ভাবতে অবাক লাগে, ওই বয়সে তিনি [মানিক] ‘জননী’-র মতো উপন্যাসের কথা ভেবেছিলেন এবং কী অনায়াসেই না লিখে ফেলে বন্ধুর কাছে বেঁচেও দিতে পেরেছিলেন।”

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ
  2. অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল
  3. শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব
  4. বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব
  5. পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার
  6. টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত

আসছে এ পি জে আবদুল কালামের বায়োপিক, নায়ক ধানুশ

অক্ষয়ের মামলা, সুদসহ টাকা ফেরত দিয়ে ‘হেরা ফেরি ৩’ ছড়ালেন পরেশ রাওয়াল

শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব

পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার

ভিডিও
গানের বাজার, পর্ব ২৩৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০
দরসে হাদিস : পর্ব ৬৫০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৬
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫২৬
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
মিউজিক নাইট : পর্ব ১৯৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৬
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৩
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x