Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

বর্ণিল সাজে সেমন্তী সৌমি

লাল টুকটুকে মিম

একান্তে তাহসান-রোজা

মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ৫ খাবার

মেট গালা ফ্যাশনে দ্যুতি ছড়ালেন কিয়ারা

গ্রীষ্মের ফুলে ভিন্নরূপে রাজধানীর প্রকৃতি

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণে প্রধান উপদেষ্টা

বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশ সপ্তাহ শুরু

স্টাইলিশ মিম

ভিডিও
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
টেলিফিল্ম : বীথি পরিবহন
গানের বাজার, পর্ব ২৩৩
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
এই সময় : পর্ব ৩৮২০
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
ছুটির দিনের গান : পর্ব ৪১৫ (সরাসরি)
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৭
নাটক : প্রেম আমার
নাটক : প্রেম আমার
জোনাকির আলো : পর্ব ১২২
জোনাকির আলো : পর্ব ১২২
আকিমুন রহমান
১২:১৭, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১২:৫৩, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আকিমুন রহমান
১২:১৭, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১২:৫৩, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আরও খবর
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন
উপন্যাস কিস্তি ২০

সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন

আকিমুন রহমান
১২:১৭, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১২:৫৩, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আকিমুন রহমান
১২:১৭, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
আপডেট: ১২:৫৩, ০৮ এপ্রিল ২০১৫
শিল্পী : মানিক বণিক

আবার যেমতে চক্ষের দেখাখান হয়!

আবার দেখা পরের বছর শাওন মাসে। খালি চক্ষের দেখাখান হইতেই কিনা লাগে এক বছর! অই একটা বছর কী করতাছিলো ইসুফ মিয়ায়! সেয় যে মাছ-ধরোনের নিয়ম শিখাইয়া আওনের সোম ছেড়িটারে কইয়া আইছিলো, আবার আইবো; সেই ওয়াদা মোনে রাখে নাই সেয়? রাখছিলো?

না না! কোনো ওয়াদা তো দেয় নাই ইসুফ মিয়ায়। ওইটা আছিলো মোখের কথা। এই কোনোরকম এককথার কথা। কোনোমোতে না-বুঝটারে একটা বুঝ দিয়া আওন। এইই আর কী! সেই কারোনে তার আর জুলেখাগো বাড়িতে যাওনের গরজ হয় নাই। ছেড়িটায় তার সেই কথার কথারে অন্তর দিয়া বিশ্বাস কইরা ফালাইছিলো কিনা, অই খোঁজখান নেওয়ার কথাও তার মোনে আসে নাই একবারও।

সেই এক বছর ইসুফ মিয়ায় বলতে গেলে বাড়িতে আছিলো না। আছিলো নানিগো বাইত। ক্যান সংসারের বড়ো পুতটারে নানিগো বাইত দিয়া থোওন? ইসুফ মিয়ার মায়ে পরের বাড়িতে এমুন পোলা পাঠানির পক্ষে আছিলো না মোটেও। বাড়ির বড়ো পোলা। তারে মামাগো বাড়িতে থাকতে যাইতে হয় তার বাপের কারোনে। ইসুফ মিয়ার বাপের এই বিষয়টারে ইসুফ মিয়ার মায়ে কয়, আজাইরা খায়েশ। অর বাপের অই আজাইরা খায়েশের কারণে পোলাটারে এমুন মামুগো সংসারে গিয়া পইড়া থাকতে হইছে পুরা একটা বচ্ছর! 

গঞ্জে ইসুফ মিয়াগো গদি আছে তার দাদার আমল তেনে। সেই গদির আয়-বরকত কোনোদিগ দিয়াই কম না! অই আয় দিয়া ইষ্টি-কুটুম, মেল মজলিশ, নানান খরচাপাতি আর ঈদ-তেহার-পার্বণ সগল কিছুরে সোন্দর সুহালে পার কইরা নেওন যায়। কোনো খরচাই গতরে বাজে না! বরং সংবচ্ছরই হাতে মোটা টেকাও রইয়া যায় তাগো! 

আবার কৃষি জমিও আছে ভালোই। সেই সগলের কোনো একটা দিয়া পুতেরে কর্মে বহাইয়া দিলেই যেইনে হয়, সেইসব কর্মের কোনো কিছুর দিগেই ইসুফ মিয়ার বাপে যায় না। তার মনে বোলে এক গুপ্ত বাঞ্ছা থোম ধইরা বইয়া আছে, বহুত কাল হয়। কী এমুন বাঞ্ছা? সেইটা এই যে, সেয় তার পুতেরে, বাপ-দাদার কারবারের বাইরে অন্য আর একটা নয়া কারবারে দিবো! তার সাধ, তার বড়ো পোলায় তার মামুগো লাহান সওদাগরি কারবার করতে শিখবো।

আছে নিজেগো গদি, থাকুক! ভালামতোন চলতাছে সেই গদি; কারবার-বেবসা চলতাছে কায়দা মতোনই। তার লগে লগে পুতে যুদি আরেকখান নয়া কারবারে ঢোকে, তাইলে মান বাড়ে বংশের।

কাকড়ি আল্লার দান। আল্লায় দিলে অইতে কতখোন। বাপে বিশ্বাস করে যে; টেকাও অইবো তার পুতের, অই নয়া কারবার দিয়াই আসবো দুনিয়ার টেকা। ইসুফ মিয়ার বাপে কারবারি লোক। সেয় ভালামতোন জানে, আগে শিখতে হয় কারবারের ভাও-কৌশল। তার বাদে শুরু করোন লাগে কারবার। তো, তার পুতেও পইল্লা অই নয়া কারবারের আও-ভাও হিগুক! পরে কারবার জোড়াইতে কতখোন!

ইসুফ মিয়ার মামুরা বিষম এক বিরাট কারবারের কারবারি। তাগো আছে পাঁচ সাতখান সওদাগরি নাও। এই উঁচা, এই চওড়া নিয়া সেইসকল নাও এই আজদাহা বিরাট এক একটায়! সেইগুলা সংবচ্ছর নারায়ণগঞ্জ তেনে মাল নিয়া যায় গা কোন কোন দূরের গঞ্জে! আবদুল্লাহপুরই কি, বরিশালই বা কি, হুগলিই বা কি! যায়। কোনো কোনো গঞ্জে যাইতে বোলে মাস-ছয় মাসও লাইগ্গা যায়! তাইলে বোঝো, সেইটা কোন দূরের রাজ্যি! 

যেমুন মাল বোঝাই হইয়া একেকখান নাও যাইতাছে, তেমুন বোঝাই হইয়াই ফিরতি আসতাছে। এই কারবারখানে পুতেরে ঢোকাইতে সাধ হয় পুতের বাপের। সেই কারণে সেয় পোলারে পাঠায় মামুগো বাইত। মামুগো কাছে থাইক্কা, পদে পদে কর্মখান য্যান শিখতে পারে—এই হইতাছে বাপের মোনের চিন্তা।

গেছে পুতে। গিয়া সেয় নিজ স্বভাব-খাসলত দিয়া বাপের মোখও রাখছে। বাপেরে শরমে ফালায় নাই কোনোদিগেই! সেয় এই এক বছরে এমুন জান-পরান দিয়া কাম শিক্ষা করছে যে, মামুরা সুদ্ধা তাজ্জুব না হইয়া পারে নাই। আবার কর্মশিক্ষার কালে একদিনও এই পোলায় মামুগো লগে ভাইগ্নার আবদার-আহ্লাদখান দেখায় নাই। কামের নিয়মে কাম শিখে সেয়। সেই মোতাবেক হুকুম মাফিক চলেও। মনিবের মিজাজ-মর্জি বুইজ্জা, বান্ধা লোকে যেমনে কর্ম করে, সেয় চলছে ঠিক সেই ভাও মতোন।

সেই এক বছর ধইরা অই কর্মশিক্ষার কামে আছিলো ইসুফ মিয়ায়। বাড়িতে আসছে খালি বিষম ঠেকা সারতে; একদিন দুইদিনের লেইগা। গেরামে আইয়া বাড়ির বাইরে আর পাও দিবো কী, মায়ের তো তার লগে কথাই ফুরায় না! নানিগো বাড়ির হাবিজাবি দুনিয়ার কথা হোনোন লাগে মায়ের! সেইটা যেমুন আছে, তেমুন আছে ইয়ার-দোস্তেগো ডাকাডাকি! ইসুফ মিয়ার ইয়ার—দোস্তও কি কমনি গেরামে! তারে পাওয়ামাত্রই সগলে তারে ঝাইক্কা ধইরা দুনিয়ার আড্ডাবাজি চালানি ধরতে কোনোবারই বাকি রাখে নাই। এই সব নিয়াই আছিলো সেয়।

তয়, সত্য কইলে কইতে অয় যে, এই সব নিয়া থাকতে থাকতেও, এই পুরা বছরটায়, এক-আধবার আঁতকা আঁতকা জুলেখা ছেড়িটারে যে তার মোনে আসে নাই, তা না। আইছে। মোনে আইছে যে, উয়ে কইছিলো; মিয়াভাই—আবার আইয়েন? সেয়ও আইতে সোমে কইয়া আইছিলো যে, আমু! কিন্তুক একটা গুঁড়াগাঁড়া ছেড়ির কথায় ইসুফ মিয়ায় অগো বাইত যায় কী প্রকারে! জিন্দিগিতে যহন অই বাড়িতে পারতে আনা-যানা নাই! আঁতকা সেয় কোন মোখে অগো বাইত গিয়া খাড়া অইবো? অর মায়ে কী কইবো!

এইসব বহুত কথা মোনে আসছে তার। সে আর গেরামের অই দিগে পাওও বাড়ায় নাই। তবে সেয় নিজের ভিতরে, খুব নিরালায়, একখান বিষয় লড়তে-পড়তে দেইক্ষা বহুত তাজ্জুব হইছে এই এক বছরে। খোনে খোনে তাজ্জুব হইছে! একটা কথা জানোনের খোব ইচ্ছা অইছে তার। ভিতরে ভিতরে, মাঝে-মইদ্দেই ইসুফ মিয়ার জানতে বাসনা হইছে যে; যেমনে যেমনে সেয় জুলিরে ছিপ-ফালানি শিখাইয়া আইছিলো, উয়ে কি হেইটা মোনে রাখতে পারছে; না পারে নাই? পারতাছে উয়ে সঠিক কইরা ছিপ-ফালাইতে!

অই এক বছরে মামুগো বাড়ির তেনে গিয়া, যেই কয়দিনই সেয় বাইত থাকছে, সেই কয়দিন কিন্তু কোনো সোমই বিষয়টা জানোনের ইচ্ছা তার অন্তরে লড়া-চড়ি দেয় নাই। কিন্তু যেই, বাড়ির তেনে মেলা দিয়া নানিগো বাড়ির দিগে আধারাস্তা গিয়া সারছে খালি ইসুফ মিয়ায়, তহনই অই কথাখান জানোনের বাঞ্ছা আঁতকা আইয়া অর পরানে ধাক্কা দেওয়া ধরছে। হুদামিছি অরে উতলা করতে থাকছে! 

তামশা দেখছো! কী জিনিসের লেইগা বেতালা অয় লোকের অন্তর! নিজে নিজেই নিজের আউলা ইচ্ছাখান দেইক্ষা, একলা হাসতে হাসতে সেয় আগ্গাইছে নানিগো বাড়ির দিগে। প্রত্যেকবার এমুন আধারাস্তায় গিয়া এমুন বেতালা বেতালা লাগছে অর, পুরাটা বচ্ছর। তার বেশি আর কিছু হয় নাই। কিছুই না।

এক বছর পরের সেই শাওন মাসে আবার কয়দিনের লেইগা বাড়িত আসে ইসুফ মিয়ায়। এইবার সেয় কেবল বাড়িতে জিরাইতে আসোনের লেইগাই আসে না; লগে মামুরা তারে একটা ঠেকার কামও সারোনের দায়িত্বও দিয়া পাঠায়। ঠেকার কামটা হইলো : এইবার তার মায়েরে তার লগে নানিগো বাইত লইয়া যাওন লাগবো। প্রতি বচ্ছর একবার মায়ে নানিগো বাইত যায়। নাইওর। এইটা চির যুগ-জনম ধইরা দেইক্ষা আইতাছে পোলাপাইনরা। আগে আগে পোলাপাইনরা সবটিয়ে লগে যাইতো। অখন খালি শেষের দিগের গুঁড়াগাঁড়া কয়টায় যায়। বাকিরা বড়ো হইছে। অখন তারা তাগো ফুপুর লগে বাড়িতে থাকে। আর বাপে তো আছেই।

অন্য অন্যবার ইসুফ মিয়ার মামুরা কোনো না কোনো জোনে আসে বইনেরে নাইওর নিতে। আসে শাওন মাসে। এই সময়ই চলাচলতিতে সুবিধা। দেওভোগে বইনের বাড়ির ঘাটার তেনে ছই নাওয়ে উইট্টা বাদ আছর মেলা দিলে, এশার ওক্তে এক্কেরে লক্ষ্মণখোলায় ইসুফ মিয়ার নানিগো বাড়ির ঘাটায় গিয়া বান্ধা যায় নাও। শাওন মাস ছাড়া এই সুবিধা আর পাওয়া যায় না। শুকনার দিনে পারতে নাইওর যায় না মায়ে। তহন হাঁটতে হাঁটতে জান শেষ।

এইবার মামুরা কয় যে, তাগো সগলতের হইয়া ইসুফ মিয়ায় গিয়া তাগো বইনেরে নাইওর নিয়া আহুক। হাতে তাগো বিস্তর ঝামেলা। সেইসগল তুফান শেষ করতে করতে না আবার শাওন মাস পার হইয়া যায়! তাইলে তো গ্যাঞ্জামের শেষ থাকবো না। বইনে না আশায় আশায় পন্থের দিগে চাইয়া রইছে!

পোলার মোখে বিত্তান্ত শুইন্না ইসুফ মিয়ার মায়ে একদফা কান্দতে বয়। ভাইরা তাইলে তারে আর মায়া করে না! একজোনেও আওনের নাম না নিয়া, তার পুতেরেই পাঠাইয়া দিছে! এতো বড়ো অসম্মানী! যাইবো না হেয়! মায়ে-বাপে যেইদিন চউখ বোজছে, সেইদিন তেনেই তাগো মাইয়ার বাপের বাড়ির রাস্তায় কাঁটা পড়ছে! এতোদিনে সেই হাছা বিষয়খান পষ্ট হইলো তাইলে!

ইসুফ মিয়ায় মায়েরে এমনে সেমনে কতো বুঝ দেয়। মায়ে কানে নেয় না। ইসুফ মিয়ার ফুপু বুঝায়। কিন্তু কিয়ের কী! মায়ে লড়েচড়ে না। বন বন বন কেমনে জানি এই বিত্তান্ত মামুগো কানেও গিয়া পৌঁছায়। পড়িমরি কোনোরকমে নাও ভাড়া কইরা ইসুফ মিয়ার বড়ো মামু আইয়া তাগো একমাত্র বইনের হাত দুইটা খপ কইরা ধরে। কয় : নে, বড়ো ভাই অইয়া তর হাত ধরতাছি! গোস্বা রাহিস না বইন। বহুত বেকায়দায় আছে তর ভাইয়েরা!

মামু তো আসে খাড়ার উপরে যাওনের লেইগা, অখন ইসুফ মিয়ার মায়নি হুড়ুম-দারুম এমনে মেলা দিতে পারে! তার তো ঘর-সংসারের বুঝ সাইরা, তয় পাও বাড়ানি! সেই কারণে সাব্যস্ত হয় যে, যাউক গা ইসুফ মিয়ার মামু তার মতোন। কাউলকা মেলা দিবো নাইওরি। ইসুফ মিয়ায় তো লগে থাকবোনেই। চিন্তার কিছু নাই।

পরের দিন বিয়াইন্না নাস্তাখান পুতে খালি শেষ করছে, মায় ফরমাইশ করে : ‘যা বাজান! কোষা নাওখান নিয়া ইট্টু যা আখড়ার দিগে।’ ‘আয় হায় মা!’ পুতে চিক্কুর দেয়, ‘আখড়া গেরামরে কি তুমি বাড়ির কাছে মোনে করো? নাও বাইয়া আইতে যাইতে কতাটি কষ্ট অইবো বোজো?’

যতোই চিক্কুর দেউক, ইসুফ মিয়ায় মায়ের হুকুম তালিম না কইরা পারবো কেমনে! তার মামানিরা পুরা বচ্ছর ধইরা বার চাইয়া থাকে কবে তাগো ননদে নাইওর আইবো; আর লগে লইয়া আইবো আখড়া গেরামের খই-মোয়া, নিমকি-পিট্টি, কদমা-তিল্লা। আখড়া গেরামে আছে জাগ্রত কালীমন্দির। সেই মন্দিরের লগের দোকানে দোকানে পুরা বচ্ছর ভইরা পাওয়া যায় এই জিনিস। বড়ো সোয়াদের জিনিস বানায় অই কারিগররা। আর কোনোখানের এই জিনিসে এই সোয়াদ নাই। মায়ে নাইওর যাওনের সোমে এইসগল জিনিস ছাড়া এক পাও বাড়ায় না। ভাউজরা আশা কইরা রইছে না! কোন পরানে অই জিনিস ছাড়া সেয় নাইওর যাইবো!

মায়ে ইসুফ মিয়ারে পটিপটি কইরা কইয়া দেয় যে, সেয় য্যান সগল জিনিস পাঁচ সের পাঁচ সের কইরা আনে। ভুল য্যান না অয়। আর, কিনাকাটা শেষ কইরা কোনোদিগে একদণ্ড য্যান দেরি না করে পুতে।

শাওন মাইস্যা দিনে দেওভোগ গেরামের সবটি বাড়ি বাইন্না পানি দিয়া ঘেরাও হইয়া আছে। চারিদিগের সকল ক্ষেতিখোলা গলাপানি, মাথাপানির তলে। তয়, কোনো কোনো জায়গায় পানি আরো বেশি। সেইনে সাঁতোর পানি। যেইনে যেইনে কোমরপানি, সেইনে সেইনে অইয়া রইছে দুনিয়ার শাপলা ফুল। হাজারে বিজারে শাপলা! কী খলবলা সাদার সাদা যে অইসগল শাপলা ফুল! তাগো সাদা রঙের দিগে চাইয়া থাকলে মোনে অয় য্যান তাগো নিচে বাইন্না পানিরা নাই। থাকার মধ্যে আছে খালি ফুল আর ফুল! বাইত থাকলে ইসুফ মিয়ায় মায়েরে কইতে পারতো শাপলা ভাজতে!
দেওভোগ তেনে উত্তর-পুব কোন বরাবর দুই ক্রোশ দূরে আখড়া গেরাম। কোষা নাওয়ের লগ্গি ঠেইল্লা আইতে যাইতে কতখোন আর লাগবো ইসুফ মিয়ার! বেশিক্ষণ না। অখন কিনতে যতোখোন লাগে! সেয় তরাতরি লগ্গি বাইতে থাকে। যাইতে পোথে শেষ বাড়িখানই হইতাছে জুলেখাগো। সেই বাড়ির উত্তর সীমানার পরের তেনেই খালি পানিকে পানি। ক্রোশকে ক্রোশ দূরের অন্য অন্য গেরাম তরি গিয়া, তয় এই পানির শেষ।

লগ্গি ঠেলতে ঠেলতে জুলেখাগো বাড়ির দিগে চোখ যায়, না, পরানখান তার ছলছলাইয়া ওঠে! ক্যান এমুন বিনা কারণে পরান ধাক্কা খায়! সেইটা ইসুফ মিয়ায় স্পষ্ট কইরা ধরতে পারে না। তয় কিনা তার চোখ জুলেখাগো ভিটির তেনে আর য্যান সইরা আইতে চায় না! যাইতে যাইতে পুরাটা খোন চাওন দিয়া থাকে তার চক্ষে, অইবাড়ির দিগে! আছে নি জুলেখায় ভিটির কোনোদিগে? তাইলে যাইতে যাইতেই ইসুফে ছিপ-ফালানির কথাটা জিগাইয়া যাইতে পারে! কিন্তু ভিটির কোনো মুড়ায়ই একটা কোনো মানুষের চিহ্ণও চক্ষে পড়ে না।

এট্টু কেমুন জানি বেজার লাগতে থাকে সতেরো বচ্ছরের ইসুফ মিয়ার অন্তরটা! এট্টু টিপটিপা রকমের বেজার! কী হইলে জানি বহুত ভালা লাগতো! কী জানি হইলো না! এমুন একটা অশান্তি নিয়া লগ্গি ফালাইতে ফালাইতে সেয় আগ্গাইতে থাকে।

অমুন সোমে সেয় শোনে, কে জানি তারে পিছের তেনে ডাকে। কেটায় ডাক পাড়ে? নাওয়ের লগ্গি পানির তলে গাঁথন দিয়া সেয় ফিরা চায়। কেটায়?

ইসুফ মিয়ায় দেখে যে, জুলেখাগো ভিটির উত্তর সীমানায় খাড়াইয়া তারে ডাকতাছে জুলেখার মায়। কী বিত্তান্ত! চাচি অরে ডাক পাড়ে ক্যান! সেই বাড়ির দিগে নাও ঘুরাইয়া নিতে নিতে ইসুফের কানে আসে যে, চাচি তারে নাও ঘুরাইতে নিষেধ দিতাছে! তাইলে ডাকছে সেয় কী কারণে!

না ডাইক্কা এই ছাই-কপাইল্লা মায়ে করবো কী! অই যে দূরে কোষা নাওখান ভাসতে দেহা যাইতাছে, ওইটা লইয়া জুলিয়ে গেছে শাপলা তোলতে। গেছে হেই রইদ উটি-উটি সোমে! অখন সকাল যায় যায়, তাও নি মাইয়ায় আহে! নাস্তা পানি কিচ্ছু মোখে দেয় নাই মাইয়ায়! এক ডোক পানি ইস্তক না! মায়ে এদিগে কতোবার এই মুড়ায় আইয়া মাইয়ারে ডাইক্কা গলা ফাইড়া ফালাইতাছে! সেই ডাক অই অতো দূরে গেলে তো! করতাছে কী উয়ে! শাপলা তোলতে এতোক্ষণ লাগে!

জুলেখার মায়ে নিজের জ্বালার কথা কইয়া শেষ কইরা, ইসুফ মিয়ারে মিন্নতি করে; ‘বাজি! তুমি তো অইদিগে যাইতাছো, চাচির এই উবকারটুক করো। অরে বাড়ির দিগে মেলা করাইয়া দিয়া, তুমি যেদিগ যাইতাছো—যাইতা যুদি বাজান; আমি পরানে বাঁচতাম!’

‘আমি এই অক্ষণ অরে পাঠাইয়া দিতাছি চাচি। আপনে চিন্তা কইরেন না!’ কইতে কইতে দমদমাইয়া লগ্গি ফালানি ধরে ইসুফ মিয়ায়। অই মাতা-খরাপে তাইলে অই দূরে গিয়া বইয়া রইছে! দেহো দেহি কিরতিখান!

ওড়ামুড়ি দিয়া ইসুফ মিয়ার ছোট নাওখান গিয়া খাড়ায় জুলেখার নাওয়ের পিছে। একটা আস্তা নাও যে অর নাওয়ের পিছে আইয়া খাড়াইছে, সেদিগে নি জুলির কোনো হুঁশ আছে! সেয় নাওয়ে বইয়া পুরা ঝুইক্কা রইছে পানির দিগে! পুরা হুঁশহারা অইয়া কী জানি দেখতাছ উয়ে পানিতে!

‘জুলি!’ পিছের তেনে আলগোচ্ছে ডাকে অরে ইসুফ মিয়ায়। হায় খোদা! আঁতকা সেই ডাক অর কানে যায়; না, য্যান জুলিরে পুরা ডর ধরাইয়া দেয়। জুলি কঁকানি মকানি দিয়া লায়-লুট হইয়া শেষ! একবার বুকে থুতু দেয়, একবার কঁকায়। এমন করতে করতে অর চক্ষেরা হুঁশ ফিরা পাইয়া দেখে যে, আরেক নাওয়ে একজোনে খাড়াইয়া রইছে ! কে!

‘মিয়াভাই!’ জুলি য্যান গাঙ্গের ঢেউয়ের লাহান ছল্লাত কইরা ওঠে; ‘আপনে আইছেন! আইছেন!’

তারবাদে একটা লাফানি দিয়া সেয় খাড়ায়, আর তড়বড় পাওয়ে আগ্গাইতে থাকে ইসুফ মিয়ার নাওখানের দিগে। দেহো তো! কেমুন মাতা-খরাপ! কোষা নাওয়ে এমনে হাঁটে মাইনষে! নাও তো ডুইব্বা যাইবো দেহি! ইসুফ মিয়ায় না পাইরা শেষে চিল্লানি দিতে থাকে, ‘রাখ! রাখ! আরে, কোষা নাওয়ে এমনে হাঁটে না। এমনে লড়িস না তুই জুলি! নাও ডোববো! নাও ডুইব্বা যাইবো কইলাম!’
(চলবে)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৯)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৮)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৭)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৬)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৫)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১৪)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন  (কিস্তি ১৩)​
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১২)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১১)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ১০)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৯)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (কিস্তি ৮)​
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (সপ্তম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (ষষ্ঠ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (পঞ্চম কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (চতুর্থ কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (তৃতীয় কিস্তি)​
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (দ্বিতীয় কিস্তি)
সাক্ষী কেবল চৈত্র মাসের দিন (প্রথম কিস্তি)

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব
  2. বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব
  3. পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার
  4. টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা
  5. বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!
  6. হিরানি-আমির জুটি এবার বায়োপিকে
সর্বাধিক পঠিত

শুধু অভিনেতা নন, পেশাদার পাইলটও ছিলেন মুকুল দেব

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঘরবন্দি ছিলেন মুকুল দেব

পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ২৫ কোটির মামলা ঠুকলেন অক্ষয় কুমার

টিজারেই ঝড় তুলল ‘ওয়ার ২’, মুক্তির তারিখ ঘোষণা

বিয়ে নয়, এবার ‘লিভ ইন’ করতে চান সামান্থা!

ভিডিও
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ২৯৯
গানের বাজার, পর্ব ২৩৩
জোনাকির আলো : পর্ব ১২২
জোনাকির আলো : পর্ব ১২২
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৪
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৫৯
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, পর্ব : ১২
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৮
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৮৬৮
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৭
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ৭

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x