এবার ঈদে পর্যটকশূন্য সুন্দরবন
বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। কিন্তু এবারের ঈদে ভিন্ন রূপ সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর। কারণ ঈদের সকাল থেকেই বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায় মোংলার সুন্দরবন উপকূলের ওপর দিয়ে। এজন্যই মূলত সুন্দরবনে দর্শনার্থীদের আনাগোনা নেই। একই অবস্থা সুন্দরবনের পর্যটনস্পট করমজলসহ বাকি কেন্দ্রগুলোরও।
করমজল পর্যটনকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ঈদের দিন মূলত সুন্দরবন দেখতে স্থানীয় পর্যটকেরাই বেশি আসেন। এরপর আসেন বাইরের দূরদূরান্তের পর্যটকেরা। কিন্তু ঈদের দিন সকাল থেকেই হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্থানীয় তেমন কোনো পর্যটক নেই। দুপুর পর্যন্ত মাত্র ১০ থেকে ১৫ জন ছোট ছোট বাচ্চারা এসেছে। অথচ শুধু ঈদের দিনেই পর্যটক আসার কথা অন্তত হাজারখানেক। প্রতি বছর শীত মৌসুমের পর বিভিন্ন উৎসবে পর্যটকে ঠাসা থাকে সুন্দরবন। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারে ভিন্ন।
জানা গেছে, সুন্দরবনে করমজল, হাড়বাড়ীয়া, হিরণপয়েন্ট, নীল কমল, কটকা-কচিখালী, দুবলাচটসহ বেশ কয়েকটি পর্যটনস্পট রয়েছে। এসব পর্যটন ঘিরে বিভিন্ন উৎসবসহ শীতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকত। এমনকি পর্যটকদের ঢলে হিমশিম খেতে হতো বনপ্রহরীদের। কিন্তু এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা।
তবে ভ্রমণে অব্যবস্থাপনা, পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব, দর্শনীয় এলাকাগুলো আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে না তোলাসহ নানা কারণেই ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করতে পারছেন না বনবিভাগ।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ রয়েছে তাদের আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটনখাত। সুন্দরবনে দর্শনীয় স্পটগুলোকে সেভাবে গড়ে তুলতে পারলে আমাদেরও এ খাত থেকে বড় ধরনের রাজস্ব আদায় করা যাবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে সুন্দরবনের ১১টি পর্যটনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে তো কারও হাত নেই। তারপরও ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক আসবে বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনের পর্যটনস্পটগুলো আকর্ষণীয় করতে ২৫ কেটি টাকার বেশ কয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। যেগুলোর কাজও চলমান রয়েছে।