‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’

নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে ফের সরব নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপ। ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’ ও ‘দেব ডি’ পরিচালক সম্প্রতি মুখ খুলেছেন স্ট্রিমিং জায়ান্টটির ‘বিষয়বস্তু বাছাই, মান এবং দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে।
সম্প্রতি ‘দ্য জগারনথ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, সুকেতু মেহতার জনপ্রিয় বই ‘ম্যাক্সিমাম সিটি’ অবলম্বনে ৯০০ পৃষ্ঠার হাতে লেখা চিত্রনাট্য জমা দিয়েছিলেন নেটফ্লিক্সকে। তবে সেই স্ক্রিপ্টের কোনো জবাব মেলেনি—একেবারে নীরবতা।
অনুরাগের অভিযোগ, নেটফ্লিক্স ভারতের অফিসই লস অ্যাঞ্জেলেসের সদর দপ্তরকে বিভ্রান্ত করছে। ‘আমি টেড সারানডোসকে (নেটফ্লিক্সের সহ-সিইও) নিয়ে লিখেছি। তিনি ভারতের দর্শকদের বোঝেন না। ভারতীয় অফিস যা বলে, উনি সেটাই বিশ্বাস করেন। একেবারে বাজে কথা শুনে যাচ্ছেন’,বলেছেন অনুরাগ।
তিনি আরও জানান, সাহসী গল্প বলার সাহস নেই নেটফ্লিক্সের। তারা এখন কেবল সাবস্ক্রিপশন আর অ্যালগরিদমের পেছনে ছুটছে। ‘ওরা মানের চেয়ে সংখ্যায় আগ্রহী। আজকে নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া চলছে টেকনোলজি ব্যাকগ্রাউন্ডের লোক দিয়ে, যারা আবার খারাপ টেলিভিশন লোকদের নিয়োগ করেছে,’—বলেছেন তিনি।
সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ টেড সারানডোসের প্রতি। “সবচেয়ে রাগ হয়, যখন উনি এমন সব সিরিজের কৃতিত্ব নেন, যেগুলো ওরা বানায়ওনি। ‘স্কুইড গেম’, ‘অ্যাডোলেসেন্স’, ‘ব্ল্যাক ওয়ারেন্ট’—এই শোগুলো নেটফ্লিক্স শুধু কিনেছে, বানায়নি,”—বলেছেন কাশ্যপ।
এছাড়া নেটফ্লিক্স ভারত যে নিজেদের বানানো সাহসী কনটেন্ট যেমন ‘কোররা’ কিংবা ‘ট্রায়াল বাই ফায়ার’—এদের প্রচারও ঠিকমতো করে না, সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এই বিরোধের শুরু অবশ্য আগেই। কয়েক মাস আগে টেড সারানডোস মন্তব্য করেন, নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়াকে জনপ্রিয় ও মেইনস্ট্রিম কনটেন্ট দিয়ে শুরু করা উচিত ছিল। অথচ নেটফ্লিক্স ভারতে যাত্রা শুরু করেছিল অনুরাগ কাশ্যপেরই ‘স্যাক্রেড গেমস’ দিয়ে—যা এখনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
তার পাল্টা জবাবে কাশ্যপ বলেন, “তাহলে তো ‘সাস-বউ’ ধারাবাহিক দিয়েই শুরু করা উচিত ছিল, কারণ এখন তো ওরাই ওইদিকে যাচ্ছে।” তার এই বক্তব্যকে ‘ক্লাসিস্ট’ বলে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন একতা কাপুর।
সব মিলিয়ে, অনুরাগ কাশ্যপ বনাম নেটফ্লিক্স লড়াইয়ের শুরু তৃতীয় রাউন্ডে। আর এই রাউন্ডে কেউ চুপ করে নেই।