কিশোর গ্যাংয়ের ইভটিজিং, কিশোরীর আত্মহত্যার চেষ্টা
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের কুপ্রস্তাব ও ইভটিজিং সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৫)। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভিকটিম ছাত্রীর বাবা জুলফিকার আলী মানিক জানান, বেশ কিছুদিন থেকে এলাকার কিশোর শেখ ফরিদ ও সেনা মিয়া তার মেয়েকে নানা রকম কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে। কিন্তু তাঁর মেয়ে তাতে রাজি হয়নি। এ কারণে ওই দুজনসহ মামুন, খোকন, আঙ্গুর বিপুল, শাহীন, মুকুট ও মনছুর প্রায় প্রতিদিন তাঁর মেয়ে প্রাইভেটে যাওয়া আসার পথে নানাভাবে ইভটিজিং শুরু করে। এ অত্যাচার নীরবে সহ্য করত তাঁর মেয়ে। পরে তিনি বিষয়টি জানালে তিনি ওই কিশোরদের অভিভাবকদের জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কিশোর গ্যাং গতকাল সোমবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে এসে বেধরক মারপিট করে।
জুলফিকার মানিক আরো জানান, ঘটনাটি উলিপুর থানায় জানানোর পর তাঁর বাড়িতে পুলিশ আসে। এতে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ওই কিশোর গ্যাং। বিকেলে আবার এসে বাড়ি ভাঙচুর করে। এতে বাধা দেন প্রতিবেশী মুদি দোকানদার মিলন মিয়া। তাঁকেও দোকান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে বিলের পানিতে ফেলে যায়।
ওই ছাত্রীর বাবা আরো জানান, এসব ঘটনা সহ্য করতে না পেরে বাড়ির সবার অজান্তে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে তাঁর মেয়ে। প্রথমে ওই কিশোরীকে উলিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপালে পাঠানো হয়। বর্তমানে কুড়িগ্রাম হাসপাতালে সে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে তাদের পরিবার। সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ছাত্রী বলে, ‘ওই বখাটে কিশোররা প্রায় প্রতিদিন প্রাইভেটে যাওয়ার সময় আমাকে নানাভাবে ইভটিজিং করত ও কুপ্রস্তাব দিত। এদের মধ্যে সেনা ও ফরিদ সবচেয়ে বেশি ইভটিজিং করত। নীরবে সহ্য করলেও যখন পারিনি তখন মাকে ঘটনাটি বলেছি। আমি ওই বখাটেদের শাস্তি চাই।’
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরার প্রক্রিয়া চলছে। আমি এর আগে এলাকায় ইভটিজিংয়ের অভিযোগ পাইনি।’