চুপিসারে বিমানবন্দর ছাড়লেন ডা. মুরাদ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/12/12/murad_0.jpg)
সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়েছেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের সাধারণ যাত্রীদের গেট দিয়ে চুপিসারে বিমানবন্দর ছাড়েন।
বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের একটি সূত্র এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি বলছে, প্রথমে ডা. মুরাদ বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু, সেখানে অনেক গণমাধ্যমকর্মীর উপস্থিতি দেখে তিনি ভেতরে চলে যান।
নাম প্রকাশ না করা এই সূত্রটি বলছে, ‘এরপর মুরাদ হাসান বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যান। সেখানে থেকে সাধারণ যাত্রীদের সারিতে দাঁড়িয়ে তিনি বিমানবন্দর ছাড়েন। বাইরে তাঁর জন্য একটি গাড়ি প্রস্তুত ছিল। তারপর তিনি কোথায় গেছেন, তা আমি জানি না।’
বিকেলে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তখন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে ইমিগ্রেশন অফিসে নেওয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’
জানা গেছে, করোনার দুই ডোজ টিকার সনদ না থাকায় দেশ ছেড়ে উড়াল দেওয়া ডা. মুরাদ হাসান কানাডায় ঢুকতে পারেননি। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ও কোভিড প্রোটোকল না মেনে ডা. মুরাদ কীভাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে কানাডায় গেলেন?
এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসানকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘ডা. মুরাদের বিষয়ে আপনাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যারা আছেন তারা দিতে পারবেন।’
তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ‘বিমানবন্দর দিয়ে যেসব যাত্রী বাইরের দেশে যান, সেসব বহির্গমন যাত্রীদের স্বাস্থ্য সনদ চেক করা, ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট চেক করার দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশনের, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নয়। আমরা ইমিগ্রেশন করি, যাত্রীদের সেবা দিই। ইমিগ্রেশন শাখা ইমিগ্রেশন করবে, স্বাস্থ্যের কাজ স্বাস্থ্য করবে। ডা. মুরাদ সংক্রান্ত তথ্য জানতে আপনারা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করলে তারা ভালো উত্তর দিতে পারবে।’
তবে, এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি দেখবেন সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের কর্মকর্তারা। আমারও তো একই প্রশ্ন, ডা. মুরাদ হাসান দুই ডোজের ছাড়পত্র ছাড়া কীভাবে কানাডায় গেলেন?’
ডা. মুরাদ হাসান করোনাকালে ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে ঘুরে পুনরায় ঢাকা এসেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁকে কোয়ারেন্টিনে রাখার কোনো ব্যবস্থা করা যেত কি না, এমন প্রশ্নে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘তিনি যদি বিদেশে এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে যেতেন, তাহলে আমরা তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠাতাম। কিন্তু, তা তো নয়। তিনি কোনো বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন ক্রস করতে পারেননি।’
এর আগে ডা. মুরাদ হাসান কানাডা ও দুবাই প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরেন আজ বিকেল ৪টা ৫১ মিনিটে। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে-৫৮৬ নম্বর ফ্লাইটে তিনি ঢাকা পৌঁছান। দেশে ফেরার সময় তাঁর পরনে ছিল জিন্সের নীল রঙের প্যান্ট, গায়ে ছিল অ্যাশ রঙের হুডি জ্যাকেট।