ডিআইজি মিজানের জামিন প্রশ্নে রুল
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/06/08/dig-mizan.jpg)
সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের দুই মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার তিন সপ্তাহের এই রুল জারি করেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শফিক আহমেদ ও আইনজীবী মাহবুব শফিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা
২০১৯ সালের ২৪ জুন দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির পরিচালক মনজুর মোর্শেদ বাদী হয়ে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন—ডিআইজি মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাগ্নে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান ও ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
২০১৮ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে এক সংবাদ পাঠিকাকে জোর করে বিয়ে করার সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। ওই ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরসহ দুদকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এরপর নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে বিতর্কিত ডিআইজি মিজানকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। পরে একই বছরের ২৫ জুন তাঁকে বরখাস্তের কথা সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর মধ্যে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের অবৈধ সম্পদ অর্জনের খোঁজ পায় দুদক। অনুসন্ধান শেষে তাঁর বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।
ঘুষ লেনদেনের মামলা
২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন তিনি। ডিআইজি মিজান নিজেও এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।
ওই প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর দুদক সংস্থার সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি গত বছর ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।
২০১৯ সালের ১৬ জুলাই ৪০ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে পুলিশের বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদক পরিচালক এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।