হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রির সময় চিনি ও ডাল ওজনে কম দেওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার (২২ মার্চ) নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে টিসিবির পণ্য বিক্রি কার্যক্রম চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভর্তুকিমূল্যে সারা দেশে এক কোটি পরিবারের কাছে টিসিবির নিত্যপণ্য বিক্রি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নে ‘ফ্যামিলি কার্ডের’ মাধ্যমে এক হাজার ৩৫টি পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে ভর্তুকি দিয়ে দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই লিটার সয়াবিন তেলসহ মোট ৪৬০ টাকার প্যাকেজে পণ্য বিক্রির নির্দেশনা রয়েছে।

দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে হিমাংশু শেখর রায়ের মেসার্স সুরমা ট্রেডার্স পণ্য বিক্রি শুরু করে। চিনি ও ডালে ওজন কম দেওয়া হচ্ছে বলে সন্দেহ হয় কার্ডধারীদের। পরে ওজন করে দেখা যায়, চিনি দুই কেজির বদলে এক কেজি ২০০ গ্রাম দেওয়া হচ্ছে।

আবিদ আলী নামে একজন কার্ডধারী বলেন, ‘আমাকে চিনি এক কেজি ৫০০ গ্রাম ও ডাল এক কেজি ৮০০ গ্রাম দেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ করলেও সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার কোনো ব্যবস্থা নেননি।’

এ ঘটনার পরপরই উপস্থিত লোকজন দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন।

খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

দেবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ রিয়াজ নাদির সুমন বলেন, ‘টিসিবির পণ্যে ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করেন কয়েকজন কার্ডধারী। পরে প্রশাসনকে তা জানানো হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে এসে ওজনে কম দেওয়ার সত্যতাও পান। পরবর্তীতে উপস্থিত কার্ডধারীদের সঠিকভাবে দুই কেজি করে মেপে মেপে চিনি-ডাল দেওয়া হয়েছে।’

মেসার্স সুরমা ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী হিমাংশু শেখর রায় বলেন, ‘টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করা হয় শায়েস্তাগঞ্জ গুদামে। সেই প্যাকেট খোলার কোনো সুযোগ নেই। গুদাম থেকে প্যাকেটের পণ্যে ওজন কম দেওয়া হয়েছে।’

নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘কার্ডধারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় প্যাকেটে চিনির পরিমাণ কম। তাৎক্ষণিক ডিলারের পক্ষ থেকে যেসব প্যাকেটে কম রয়েছে সেগুলো ওজন সঠিক ভাবে মেপে পণ্য সরবারহ করা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে কেন কম দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ইউএনও শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বেশকিছু প্যাকেটে চিনির পরিমাণ কম রয়েছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, শায়েস্তাগঞ্জ গুদামে সারা জেলার পণ্য প্যাকেট করা হয়। হয়তো কিছু প্যাকেটে ভুলবশত কম দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’