পাবনায় ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, গুলিবিদ্ধ ৩

পাবনার সুজানগর উপজেলার বোনকলা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে মানিকহাট ইউনিয়নে ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলায় তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ওই গ্রামের মোতালেব হোসেনকে (৩৮) পাবনা সদর হাসপাতালে এবং সাগর হোসেন (৩২) এবং ফজলুল হককে (৫৫) সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মানিকহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্বাস আলী মল্লিক অভিযোগ করে বলেন, ‘রোববার রাত ৮টার দিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল ইসলামের সমর্থকেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বোনকোলা বাজারে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। এরপর তারা নৌকা প্রতীকে এবং নৌকার অফিসে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে একই এলাকায় আমার আনারস প্রতীকের অফিস ভাঙচুর করে এবং আমার সমর্থকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। পরে বোনকোলা গ্রামবাসী এক হয়ে মাইকে ডেকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।’
আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শফিউল ইসলাম বলেন, ‘ওই হামলার সঙ্গে আমার কোনো সমর্থক বা কর্মী জড়িত নেই। বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকেরা আমার প্রচার মিছিলে হামলা চালিয়ে নৌকা প্রতীক ভাঙচুর এবং পুড়িয়ে দিয়েছে।’
এ ঘটনায় সুজানগর থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে। সে যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
অপরদিকে, হাটখালী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর অফিস ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের বিরুদ্ধে। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই ইউনিয়নের স্বগতা বাজারে এই ঘটনা ঘটে।
হাটখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমাদের লোকজন নির্বাচনি প্রচারণায় বের হলে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন স্বশস্ত্র অবস্থায় এসে ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ত্রাস সৃষ্টি করে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী আজাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমার বিজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনটিকে বিতর্কিত করতেই সরকারি দলের প্রার্থী এমন কাজ করে চলেছেন। আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই বলেই ঝামেলা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি।’
এদিকে তাতীবন্ধ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রউফ শেখ অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ সোমবার সকালে পোড়াডাঙ্গা বাজারে আমার ভাতিজা ও চার নিকটাত্মীয়কে মারধর করেছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিন মৃধার লোকজন। এ ছাড়া আমাকে কোনো প্রকার প্রচার চালাতে দিচ্ছে না তারা।’
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ‘সুজানগনরের মানিকহাট ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রোববার রাতের ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে সে বিষয়ে জানতে তদন্ত করা হচ্ছে।’