মেয়েকে উদ্ধার করতে নিজেই পাচার হন মা, গ্রেপ্তার তিন
মেয়েকে উদ্ধার করতে গিয়ে মা পাচারের শিকার হয়েছেন। এ পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার রাতে মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কালু ওরফে কাল্লু (৪০), মো. সোহাগ ওরফে নাগিন (৩২) ও বিল্লাল হোসেন (৪১)।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে রাজধানীর পল্লবী এলাকার ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ভারতে পাচার করা হয়। ওই তরুণীর মা পরিচয় গোপন করে মেয়েকে উদ্ধার করতে পাচার চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে তাকেও মেয়ের মতো চক্রটি ভারতে পাচার করে দেয়।’
র্যাবের পরিচালক বলেন, ‘কিশোরীর মা কৌশলে ওই চক্রটির হাত থেকে পালিয়ে যান এবং উত্তর দিনাজপুরে একটি নিষিদ্ধ পল্লীতে মেয়েকে খুঁজে পান। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মা-মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এই চক্রটি প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এবং প্রলোভন দেখিয়ে পাশের দেশে মেয়েদের পাচার করে।’
‘চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশে মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারসহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করত। তাদের মূল টার্গেট ছিল দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের তরুণীরা’, যোগ করেন খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রের ‘মূল হোতা’ কালু। বিল্লাল সীমান্তবর্তী এলাকার সমন্বয়ক। পাচারচক্রে নারী সদস্যও রয়েছে। এ ছাড়া ২০ থেকে ২৫ জন এই চক্রের সঙ্গে রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। চক্রটি ঢাকার মিরপুর, তেজগাঁও, গাজীপুরসহ কয়েকটি এলাকায় সক্রিয় রয়েছে।
খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, তরুণীদের অবৈধভাবে নৌ ও স্থলপথে সীমান্ত পারাপার করানো হতো এবং কয়েকটি ধাপে পাচারের কাজটি করা হয়। কালু জানিয়েছে, জনপ্রতি এক থেকে দেড় লাখ টাকায় প্রত্যেক ভুক্তভোগীকে পার্শ্ববর্তী দেশের দালালের কাছে বিক্রি করতেন তিনি। বিল্লাল ও রাজিয়া খাতুন ২০১৮ সালে পল্লবী থানায় দায়ের করা মানবপাচারের মামলায় এক বছর সাজাও ভোগ করেছেন। এ ছাড়া পাঁচ বছর আগে কালুও করাভোগ করেছেন।