রামপালে সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ
বাগেরহাটের রামপালে কোনো দরপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে একটি সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার বাইনতলা ও উজলকুড় ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া দাউদখালি নদীর ওপর গোবিন্দপুর আদর্শ গ্রামের পূর্ব পাশে বিগত ১৯৯৮ সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৪৫ ফুট দৈর্ঘের একটি কংক্রিটের ঢালাই সেতু নির্মাণ করা হয়। গত বছর নদী খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই সেতুটি উঠিয়ে ফেলায় সাধারণ মানুষ চলাচলে দুর্ভোগে পড়েন। এক পর্যায় সগুনা গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে নিজেরা অর্থ সংগ্রহ করে পারাপারের সুবিধার্থে উঠিয়ে ফেলা সেতুর ওই স্থানে একটি কাঠের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ ফকির জানান, ওই সেতু নির্মাণে গ্রামবাসীর অর্থায়নের পাশাপাশি সরকারিভাবে একলাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। গ্রামবাসীর ও সরকারি অর্থে মূলত সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি সেতুটি গত ২০ জুলাই পারাপারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেন।
সেতু নির্মাণে নেতৃত্বদানকারী মো. রাজিব শেখ বলেন, ‘সেতু নির্মাণে প্রায় ছয় লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। যা গ্রামবাসীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।’
রাজিব আরও বলেন, ‘আমরা খরচের টাকা উঠানোর জন্য টোল নিচ্ছি। তবে খরচের টাকা উঠে যাওয়ার পর যে টাকা আয় হবে তা স্থানীয় জনকল্যাণে ব্যয় করা হবে। তবে এখন জনপ্রতি ৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দিনে অনেকেই একাধিকবার সেতু পারাপার হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তাদের টোল দিতে হচ্ছে একাধিকবার। এই সেতু পার হয়ে অনেকেই মোটরসাইকেলে ফয়লা বাজার থেকে চিংড়ি পোনার কার্টন নিয়ে বাইনতলা, গিলাতলা, কালিগঞ্জ, ভোজপাতিয়া, মল্লিকেরবেড়, ডেমাসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। মোটরসাইকেল চালকদের অভিযোগ প্রতিবারই তাদের দিতে হয় ১০ টাকা। একটি ভ্যানে চারজন যাত্রী ও চালক মিলে দিতে হয় ২৫ টাকা। সকালে বসে টোল আদায় করছে এক ব্যক্তি। তিনি নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘দৈনিক আমাদের দুইজনকে মজুরি বাবদ এক হাজার টাকা দিতে হয়। সারা দিন ১৪ থেকে ১৫০০ টাকা টোল আদায় হয়ে থাকে। চোরের উপদ্রব ঠেকাতে রাত ১২টার পর সেতুর দুইপাশে আড়াআড়িভাবে কাঠ দিয়ে তালা দিয়ে রাখা হয়। গ্রামবাসীর অর্থায়নের পাশাপাশি যেখানে সরকারি বরাদ্দে সেতু নির্মাণ হয়েছে সেখানে টেন্ডার ছাড়া কীভাবে টোল আদায় হচ্ছে তা নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে। এ নদীর তুলনায় রুপসা নদী ১০ গুণেরও বেশি চওড়া। রুপসা ঘাটে টোল দিতে হয় জনপ্রতি এক টাকা। আর এ দাউদখালি নদীর সেতু পার হতে দিতে হয় ৫ টাকা।
এ ব্যাপারে গত ১১ অক্টোবর রামপাল উপজেলা পরিষদের মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় টেন্ডার ছাড়া কীভাবে টোল আদায় হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবীর হোসেন বিষয়টি দেখে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।