ছেলেকে জামিন করাতে প্রাইভেট জেটের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শাহরুখ

অক্টোবর ২০২১। মুম্বাইয়ের এক ঝলমলে রাতে হঠাৎ ভেঙে যায় শাহরুখ খানের শান্তি। খবর এলো, সমুদ্রের ক্রুজ পার্টি থেকে তাঁর ছেলে আরিয়ানকে ধরে নিয়ে গেছে এনসিবি। মুহূর্তেই আলোচনায় ছাপিয়ে গেল পর্দার নায়ক শাহরুখ, সামনে দাঁড়িয়ে গেলেন এক উৎকণ্ঠিত বাবা হিসেবে। ছেলেকে মুক্ত করতে তিনি তখন মরিয়া। ফোনের পর ফোন, অনুরোধের পর অনুরোধ—শুধু আইনজীবীর কাছেই নয়, তাঁর পরিবারের কাছেও পৌঁছেছিল সেই আবেদন। এমনকি লড়াইয়ের স্বার্থে প্রাইভেট জেট ব্যবহারের প্রস্তাব দেন তিনি।
সম্প্রতি প্রবীণ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি এক অনুষ্ঠানে সেই অভিজ্ঞতা মনে করলেন। তিনি জানান, তখন তিনি যুক্তরাজ্যে ছুটিতে ছিলেন। শাহরুখের পক্ষ থেকে প্রথমে ফোন এলে তিনি ফিরতে চাননি। পরে শাহরুখ নিজেই ফোন করেন। রাজি না হওয়ায় শাহরুখ বলেন, ‘আমি কি আপনার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারি?’ এরপর তিনি রোহতগির স্ত্রীকে বলেন, ‘এটা কোনো ক্লায়েন্টের মামলা নয়, আমি একজন বাবা।’ এই আবেগঘন কথাই শেষ পর্যন্ত রোহতগিকে রাজি করায়।
মামলার প্রস্তুতিতে শাহরুখ ছিলেন সরাসরি যুক্ত। রোহতগির ভাষায়, তিনি প্রাইভেট জেট ব্যবহারের প্রস্তাব করেছিলেন, যদিও তা গ্রহণ করা হয়নি। মুম্বাই ফিরে আইনজীবী দেখেন, শাহরুখ তাঁরই নিয়মিত হোটেলে উঠেছেন। নিজের হাতে লেখা নোট, সাজানো যুক্তি—সব কিছু নিয়েই আলোচনায় বসেছিলেন তিনি। পরে বোম্বে হাইকোর্টে শুনানি হয় এবং আরিয়ান জামিন পান।
সেই ঘটনায় প্রায় তিন সপ্তাহ জেলে কাটাতে হয়েছিল আরিয়ান খানকে। প্রথমে সতীশ মানেশিন্দে, পরে অমিত দেশাই তাঁর হয়ে লড়েছিলেন। হাইকোর্টের পর্যায়ে দায়িত্ব নেন মুকুল রোহতগি। শেষ পর্যন্ত আরিয়ান শুধু জামিনই পাননি, মামলায় সম্পূর্ণ খালাসও পান।
এখন আরিয়ান খান নতুন পরিচয়ে কাজ করছেন বিনোদন জগতে। তাঁর ওয়েব সিরিজ ‘দ্য ব্যাডস অব বলিউড’ সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে। অতীতের ঝড় পেছনে ফেলে তিনি এগোচ্ছেন নির্মাতা হিসেবে।