সিরিজ বোমা হামলার প্রত্যক্ষদর্শী রওশন আর নেই
সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত সিরিজ বোমা হামলা মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী রওশন আলী (৬২) মারা গেছেন। গতকাল রোববার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ভোরে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
রওশন আলীর বাড়ি সাতক্ষীরা শহরতলীর বাঁকাল ইসলামপুর চরে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সকালে সিরিজ বোমা হামলার সময় তিনি একাধিক জেএমবি সদস্যকে সাতক্ষীরা জজ আদালত চত্বরে বোমা বসাতে দেখেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় শহরের আরও চারটি স্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
রওশন আলী স্বচক্ষে বিষয়টি দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিকদের তা জানান। তিনি বাঁকাল ইসলামপুর চরের নাসিরুদ্দিন দফাদারকে বোমা বসাতে দেখেছেন বলে জানান। নাসিরুদ্দিন দফাদার তার গ্রামেরই লোক জানিয়ে তার সন্ধানও দেন গোপনে। এ সময় পুলিশ সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে বাঁকাল ইসলামপুর চরে গিয়ে নাসিরুদ্দিন দফাদারকে পুকুরঘাটে দেখতে পেয়ে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের সামনে এবং আদালতে তিনি স্বীকারোক্তি দেন বোমা বসানোর বিষয়ে।
নাসিরুদ্দিন দফাদার সাতক্ষীরা শহরে জেএমবির ঘাঁটির সন্ধান দেন। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় কয়েকজনকে। উদ্ধার করা হয় জেএমবির লিফলেট, বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম।
রওশন আলী নাসিরুদ্দিন দফাদারকে ধরিয়ে দেওয়ার ফলে তার স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে আসে জেএমবির সদস্য মনিরুজ্জান মুন্না, নাইমুদ্দিন ওরফে সাইফ, মো. সফরউদ্দিন, মো. গিয়াসউদ্দিন, বেল্লাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন ও মাহবুবুর রহমান লিটনের নাম। এই ঘটনার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশে সিরিজ বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত হিসেবে জেএমবির নাম প্রকাশ পায়।
সাতক্ষীরার আলোচিত এই মামলায় চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. শরিফুল ইসলাম ওই সাতজনকে ১৩ বছর করে কারাদণ্ড, একজনকে ১০ বছর এবং অপর চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।