ভিক্ষুকরা পেলেন রেশন, পুনর্বাসনের উপকরণ

খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভিক্ষুকদের মধ্যে উপকরণ সামগ্রী ও অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে খুলনা জেলার সার্কিট হাউস চত্বরে ৬১৫ জন ভিক্ষুককে এ সুবিধা দেওয়া হয়। আর সাতক্ষীরায় দেওয়া হয় ১৮৪ জন ভিক্ষুককে।
খুলনায় রেশনিংয়ের আওতায় কাজে অক্ষম ৩৬৯ ভিক্ষুককে আজ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া ১২৬ জন ভিক্ষুককে পুরোনো কাপড় বিক্রি, মুদির দোকান, কাঁচামালের ব্যবসা, হাঁস-মুরগি পালন, পিঠা তৈরি, ওজন পরিমাপের মেশিন, ঝাল-মুড়ি ও চানাচুর বিক্রি, ডিম বিক্রি, আগরবাতি তৈরির মালামাল, টকদই বিক্রি, ঠোঙ্গা বিক্রি, হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি, শাক-সবজি বিক্রির ভ্যান গাড়িসহ মোট ১৪ প্রকারের উপকরণ বিতরণ করা হয়। খুলনা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ১২০ জনকে চায়ের দোকানের উপকরণ, ভ্যান ও সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ভিক্ষুকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করবেন। কাজ করলে মানুষের সম্মান যায় না। তাই ভিক্ষা না করে কর্মজীবনে ফিরে আসুন। আপনাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ভিক্ষুকদের এ ধরনের সহযোগিতা একটি অন্যতম দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাই বাংলাদেশ ভিক্ষুকের জাতি নয়।’
খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি, অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা, খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম হাবিব, ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা মো. সালেহসহ অনেকেই।
এর আগে আজ সকালে সাতক্ষীরায় ১৮৪ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তিন চাকার ভ্যান, গবাদি পশু, গৃহনির্মাণ সামগ্রী ছাড়াও খাসজমির দলিল। এর আগে ৩০০ জন ভিক্ষুককে একইভাবে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তাঁরা সবাই ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে কর্মসংস্থান বেছে নিয়েছেন।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃস্থ-অসহায় ভিক্ষুকদের হাতে এসব সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আনম ময়নুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর ইসলাম সজল উপস্থিত ছিলেন।