অসংখ্য ভারতীয় কোম্পানি খুলনায় কারখানা করেছে

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, অসংখ্য ভারতীয় কোম্পানি খুলনা জেলায় তাদের কারখানা স্থাপন করেছে। খুলনা ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে পরিণত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় ভারতের হাইকমিশনার এসব কথা বলেন।
হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা খুলনা অঞ্চলে অবকাঠামোগত উন্নয়নেও সহায়তা দিচ্ছি। ভারতীয় ঋণের (এলওসি) আওতায় নির্মাণাধীন খুলনা-মোংলা রেলওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে।’
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্য ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। কয়েক বছর ধরে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। ২০০১-০২ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি দশগুণ বেড়েছে এবং ভারতের রপ্তানি (মোট বাণিজ্য) বেড়েছে ছয়গুণ। ভারত-বাংলাদেশ সর্বমোট বাণিজ্য দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত দুই বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানিতে প্রচুর উন্নতি সাধিত হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে ভারতীয় রপ্তানি কমেছে। ২০১৫-১৬ সালে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৬৮৯ দশমিক ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে এবং ভারতের রপ্তানি কমেছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
হাইকমিশনার বলেন, অসংখ্য ভারতীয় কোম্পানি খুলনা জেলায় তাদের প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। ভিআইপি শিল্পকারখানাগুলোর মোংলা ইপিজেডে একটি প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ রয়েছে। টোটাল মোটরসের একটি প্ল্যান্ট রয়েছে যশোরে। এ ছাড়া হিরো মোটোকর্প যশোরে মোটরসাইকেল নির্মাণের জন্য প্রায় ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে। এ অঞ্চলে চলমান অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। ২০১৮ সালের মধ্যে রূপসা সেতুর কাজ এবং ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রেলওয়ে লাইনটি খুলনা হয়ে মোংলা বন্দর এবং দেশের অন্যান্য অংশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে প্রস্তাব দিয়েছি মোংলা বন্দরের অবকাঠামো আধুনিকায়ন এবং খানজাহান আলী বিমান বন্দর নির্মাণের জন্য। এটি হবে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। মোংলা বন্দরের মাধ্যমে এসব পণ্য ভারতীয় বাজারে প্রবেশ সহজ হবে। ফলে ভারতের বিনিয়োগকারীরা দারুণভাবে আগ্রহী হবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো জোরদার করতে খুলনায় খুব দ্রুত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের অফিস খোলা হবে। ভিসা সহজীকরণের লক্ষ্যে এ অফিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুস সামাদ, খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি গোপী কিষাণ মুন্ধড়া।
এর আগে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা খুলনার ফুলতলা ও বাগেরহাটের মোংলায় খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।