সেলিম ওসমানের নির্দেশেই শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস

নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম সেলিম ওসমানের নির্দেশেই শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করানোর সত্যতা পাওয়া গেছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
আজ রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশে তৈরি বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনটি আদালতে দাখিল করেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাফিজুর রহমান।
মোট ৬৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর হাইকোর্ট বলেছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইনের চোখে সবাই সমান।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। আর বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম কে রহমান।
এ বিষয়ে এম কে রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেলিম ওসমানের নির্দেশেই শিক্ষককে কান ধরে ওঠবসের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। শ্যামল কান্তি ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন, এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া স্কুলছাত্র মো. রিফাত হাসানকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে ১০ থেকে ১২ জন বহিরাগতের নেতৃত্বে শ্যামল কান্তিকে মারধরের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা দিয়ে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করেছেন বলে শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে যে প্রচারণা চালানো হয়, সেই প্রচারণা কারা চালিয়েছেন, তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
এম কে রহমান আরো বলেন, গত বছরের ১৩ মে বিকেল ৫টার দিকে শ্যামল কান্তির কক্ষে প্রবেশ করে তাঁকে চড়থাপড় দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ পাওয়া যায়, তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, সেলিম ওসমানের নির্দেশেই কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য হয়েছেন, তা ভিডিও ফুটেজে প্রমাণিত হয়েছে।
ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের ১৩ মে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের নির্দেশে শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে কান ধরে ওঠবস করানো হয়।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। পাশাপাশি কী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের পরই পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় পুলিশ সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।