মৃত ভোটাররা প্রার্থীদের জন্যও সমস্যা : জাবেদ আলী

নির্বাচন কমিশনার মো. জাবেদ আলী বলেছেন, ‘মৃত ভোটাররা শুধু আমাদের নয়, প্রার্থীদের বেলায়ও সমস্যা হয়। দেশের অর্থের অপচয় হয়।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যকম উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার এ কথা বলেন।
কমিশনার বলেন, ‘প্রকৃত তথ্য না পাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই হালনাগাদ ভোটার তালিকায় তাদের (মৃত ভোটার) নাম এবং তাদের নামে স্মার্ট কার্ডও তৈরি হয়ে যাচ্ছে। এজন্য তিনি মৃত ভোটারদের তথ্য দিয়ে নাম কর্তনে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা নিখুঁত, পরিচ্ছন্ন ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা সংরক্ষণ করতে পারব।’
গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জামিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. গোলাম হায়দার খান, গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, জকিস্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা রহমান, জয়দেবপুর সরকারি প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদরুন্নেছা।
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন অফিসে তাদের সমর্থনে এক শতাংশ ভোটারের যে নামের তালিকা জমা দেন। তাতেও দু-একটি মৃত ভোটারের নাম থেকে যায়। এসব প্রমাণিত হওয়ার পর অনেকক্ষেত্রে প্রার্থীর প্রার্থিতাও বাতিল হয়েছে। শুধু তাই নয়, মৃত ব্যক্তিদের নামে লেমিনেশন করা ভোটার আইডি কার্ড এবং স্মার্ট কার্ডও তৈরি হয়েছে। প্রতি লেমিনেশন কার্ড তৈরিতে ২ টাকা ৩৪ পয়সা এবং প্রতি স্মার্টকার্ড তৈরিতে খরচ পড়েছে ৮০ টাকা। এসব তৈরিতে ১৬-১৮ কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। সঠিক সময়ে ভোটারদের মৃত খবর পেলে এবং ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম কর্তন করা গেলে ওই অপচয় হতো না। মৃত্যু খবর সঠিক সময়ে পৌঁছানোর জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার-দফাদারদেরও প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তারপরও তা সঠিক সময়ে আসছে না।’
কমিশনার বলেন, ‘বছরে বাংলাদেশে দশমিক ৫৬ শতাংশ মৃত্যুবরণ করছে। আমাদের হিসেবে ভোটার হয় প্রায় শতকরা আড়াই ভাগ। পরিসংখ্যান ব্যুরো হিসাব অনুযায়ী লোকসংখ্যার বৃদ্ধি প্রায় শতকরা দুই ভাগের চেয়ে কিছু কম। মৃতের হার যদি গড়ে শতকরা দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়। তাহলে তো ভোটার তালিকায় বিরাট রকমের কর্তন হওয়ার কথা। তা যদি না হয়, ভোটার তালিকা নিখুঁত হবে না।’
এ ছাড়া হাসপাতালে কোনো ভোটার মারা গেলে মৃতের ভোটার আইডি কার্ডের নম্বরসহ মৃত্যুসনদ সরবরাহ এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কাউন্সিলর এবং ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যদের ভোটারদের মৃত্যু তালিকা সরবরাহের পরামর্শ দেন জাবেদ আলী। তিনি বলেন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত ভোটর তালিকা তৈরি হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে তিনি ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ করার তাগিদ দিয়েছেন।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ চূড়ান্ত করবে।