‘মানবসেতু’তে হাঁটা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রিট খারিজ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে ছাত্রদের শরীরে গড়া সেতু দিয়ে হাঁটার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে করা রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করেন।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডকোকেট মুজিবুর রহমান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যে রিট করা হয়েছে, তা আদালত সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় ফৌজদারি আইনে একটি মামলা হয়েছে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আদালত বলেছেন, যেহেতু মামলা ও তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তাই রিটের প্রয়োজন নেই।
অন্যদিকে রিটকারী আইনজীবী মুজিবুর রহমান জানান, ছাত্রদের শরীরে গড়া সেতু দিয়ে হাঁটার ঘটনা ছিল অমানবিক, নিষ্ঠুর আচরণ। ১৯৭৪ সালের শিশু আইন ও ১৯৬১ ও ১৯৬৬ সালের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা আইনের পরিপন্থী। এ কারণে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে রিট করা হয়েছিল।
রিটে শিক্ষা সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিব, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আটজনকে বিবাদী করা হয়। আদালত রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় মর্মে খারিজ করেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে অন্য বেঞ্চ যাওয়া হবে কি না, তা পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
গত ৩০ জানুয়ারি চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা ‘পদ্মা সেতু’ সেজে প্রদর্শনী করে। আর ওই ‘পদ্মা সেতু’র ওপর দিয়ে হেঁটে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নূর হোসেন পাটোয়ারী। পরে তিনি ‘খুশি হয়ে’ শিক্ষার্থীদের পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কারও দেন।
এ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশেই সমালোচনা শুরু হয়। পরে এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়। দুদিন পর এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী, নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হুমায়ুন পাটোয়ারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মনসুর পাটোয়ারী ও একই কমিটির সদস্য এম এ বাশারকে আসামি করে একটি মামলা করেন।