বগুড়ার দুটি মামলায় রাজীব গান্ধী ১৫ দিনের রিমান্ডে
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/02/06/photo-1486379495.jpg)
ঢাকার গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার নব্য জেএমবি নেতা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে বগুড়ার দুটি মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রাজীব গান্ধীকে বগুড়ার পৃথক দুটি আমলি আদালতে নিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হয়।
বগুড়া সদর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে বগুড়ার শেরপুরে বোমা বিস্ফোরণ এবং শিবগঞ্জে নাশকতার পরিকল্পনার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পৃথক দুটি আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে ১০ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৪-এর বিচারক আবদুল আল মামুন শেরপুরে বোমা বিস্ফোরণ সংক্রান্ত মামলায় তাঁর আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর রাজীব গান্ধীকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৩-এর বিচারক কামরুজ্জামানের আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে শুনানি শেষে শিবগঞ্জের নাশকতার পরিকল্পনার মামলায় আদালত তাঁর সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিবির ওসি আরো জানান, ২০১৬ সালের ৩ এপ্রিল শেরপুর উপজেলার জুয়ানপুর গ্রামের একটি বাড়িতে জেএমবির বোমা তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দুই জেএমবি সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পরে তদন্তকালে ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের ১৩ জুন গভীর রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ভায়েরপুকুর এলাকায় রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে জেএমবি সদস্যরা নাশকতামূলক তৎপরতা চালানোর জন্য গোপন বৈঠকে করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় রাজীব গান্ধী পালিয়ে গেলেও তাঁর সহযোগীরা ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করা হয়। তদন্তকালে ধরা পড়া সহযোগীরা গোপন সভায় রাজীব গান্ধীর উপস্থিতির কথা স্বীকার করেন।
গত বছরের ১ জুলাই রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ জনকে হত্যা করে। হামলার অন্যতম ‘পরিকল্পনাকারী’ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি।
ওই দিন রাতে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরের দিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী ও রেস্তোরাঁর এক কর্মী। ওই হামলায় মোট ২৯ জন নিহত হয়। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
পুলিশের ভাষ্যমতে, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সারা দেশে চালানো সিরিজ বোমা হামলার অন্যতম সমন্বয়কারী হিসেবে বগুড়া আস্তানার দায়িত্বে ছিলেন আবদুল আওয়াল। গ্রেপ্তার রাজীব গান্ধী তখন আবদুল আওয়ালের সঙ্গে তাঁর পাচক হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় তিনি জেএমবির বড় নেতাদের নির্দেশ অনুযায়ী সাইকেলে করে বিভিন্ন জায়গায় গোপন চিঠি পৌঁছে দেওয়ার কাজটিও করতেন। মূলত সেই ২০০৪ সাল থেকেই জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন এই রাজীব গান্ধী। রাজীব গান্ধীর বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভুতমারী ঘাট এলাকায়।