সাগর-রুনি হত্যার বিচার একদিন হবেই

তিন বছর পার হওয়ার পরও সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনির হত্যাকারীদের ধরতে না পারার কঠোর সমালোচনা করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তাঁরা অবিলম্বে খুনিদের শনাক্ত ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। ঢাকা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তিন বছর ধরে অনশন-প্রতিবাদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ অনেক উদ্যোগ নেওয়া হলেও এ খুনের পেছনে কারা ছিল, তা জানা যায়নি। তিনি বলেন, অন্যান্য খুনের আসামিরা যেভাবে গ্রেপ্তার হচ্ছে, সাগর-রুনির খুনিদেরও সেভাবে গ্রেপ্তার করতে হবে।
এ সময় খুনিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ডিআরইউর সভাপতি। একই সঙ্গে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তুলে নেওয়া এবং স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি।
ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছে এবং যাদের দায়িত্ব ছিল খুনিদের বিচারের আওতায় আনা। কখনোই মনে করবেন না, আমরা সাংবাদিকরা এগুলো ভুলে গেছি। আগামী ৩০ বছরেও এগুলো ভুলে যাব না। একদিন এ হত্যার বিচার হবেই।’
ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাত বলেন, এ সরকার ঘর থেকে তুলে নিয়ে মানুষ হত্যা করে। যতদিন এ সরকার থাকবে, ততদিন খুনিরা নিশ্চিন্ত থাকবে। এ সময় তিনি সরকার উৎখাতের আহ্বান জানান।
সাংবাদিক নেতা আশরাফুজ্জামান বাদল বলেন, পুলিশ, র্যাব, বিজিবিপ্রধানরা ছাত্রলীগ ক্যাডারদের মতো বক্তব্য দিচ্ছেন। এদের যতদিন চিহ্নিত করা যাবে না, ততদিন সাগর-রুনির আত্মা শান্তি পাবে না।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাখাওয়াত ইবনে মতিন চৌধুরী বলেন, এখন যেভাবে হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে, কীভাবে সমাধান করা হবে, তা জানা নেই। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমরা সাগর-রুনির বিচার চাই কার কাছে? যে সরকার নিজেই হত্যাকারী, যে ঘর থেকে তুলে নিয়ে মানুষ হত্যা করে, তার কাছে বিচার চাইছি।’ তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত এ ধরনের বন্দুকযুদ্ধ চলবে, ততদিন পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সমাবেশে বিএফইউজে, ডিইউজে, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাসভবনে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।