প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ শিশু ছাত্রীদের

শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ঢালীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম কাউছারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এক শিক্ষার্থীর বাবা গতকাল সোমবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আলমকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইউএনও জিয়াউর রহমান।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের খারাপ প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক এস এম কাউছার। তিনি প্রায়ই ছাত্রীদের তাঁর কক্ষে এবং ছাদে ডেকে নিয়ে মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ভিডিও দেখিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করতেন। পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি বলতে নিষেধ করেন ওই শিক্ষক। আজ মঙ্গলবার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।
এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বিদ্যালয়ের ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় ওই শিক্ষককে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং শিক্ষককে থানায় নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানায়, প্রধান শিক্ষক তাকে রুমে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ছবি দেখাত। কারো কাছে বললে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ে তারা বাড়ি গিয়ে কিছু বলত না।
এক অভিভাবক বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি আসে। কান্নার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে সব কিছু খুলে বলে। বিষয়টি নিয়ে আমি এলাকায় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বললে জানতে পারি ওই শিক্ষক অনেক ছাত্রীর সঙ্গে এই রকম আচরণ করেছে। তাই বিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করেছি। আমরা ওই প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এস এম কাউছার বলেন, ‘সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’
সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আলম বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে তদন্তে আসি। তদন্তে এসে আমি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। শুধু একজন নয় আরো ১০ জন শিক্ষার্থী আমার কাছে একই অভিযোগ করেছে।’
একই অভিযোগে গত বছর স্থানীয়দের সমন্বয়ে সালিশ করে ওই প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করেছিল এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি।