আমি ভালো আছি : নায়েক রাজ্জাক
টেকনাফ স্থলবন্দরের বহির্গমন (ইমিগ্রেশন) চেকপোস্টে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক আবদুর রাজ্জাক পৌঁছান সন্ধ্যা ৬টায়। সঙ্গে ছিলেন বিজিবি প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও। সেখান থেকে বিজিবির টেকনাফ দপ্তরে রওনা দেন তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের নায়েক রাজ্জাক বলেন, ‘আমি ভালো আছি।’
অপহরণের আট দিন পর নায়েক আবদুর রাজ্জাককে বিজিবি প্রতিনিধিদলের কাছে হস্তান্তর করেছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মিয়ানমারের মংডু টাউনশিপে এক পতাকা বৈঠকের পর তাঁকে হস্তান্তর করা হয়।
পাঁচ ঘণ্টা পতাকা বৈঠক করে রাজ্জাককে হস্তান্তর করে মিয়ানমার। সাত সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন টেকনাফ বিজিবির ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু জার আল জাহিদ। একজন চিকিৎসকও ছিলেন প্রতিনিধিদলে।
বিকেল সোয়া ৪টায় রাজ্জাককে হস্তান্তর করে মিয়ানমার। পরে সঙ্গে থাকা চিকিৎসক রাজ্জাকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। সেই সঙ্গে অপহরণের সময় রাজ্জাকের সঙ্গে থাকা অস্ত্র ও গুলিও ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবির একটি সূত্র।
টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছার পর রাজ্জাককে দেখা যায় নিজেই হেঁটে ঘাটে উঠছেন। এ সময় তিনি বিজিবির পোশাকে ছিলেন।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলটি টেকনাফ থেকে মংডুর উদ্দেশে রওনা হয়। পতাকা বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে সে দেশের নয় সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল থি হান। গত ২৩ জুন বৈঠকে বসার সম্মতি জানিয়ে মিয়ানমারের বিজিপি বাংলাদেশকে চিঠি দেয়।
এত দিন নায়েক আবদুর রাজ্জাককে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে নানা শর্ত আরোপ করে আসছিল মিয়ানমারের বিজিপি।
প্রতিদিনের মতো বিজিবির সদস্যরা ১৭ জুন সকালে দমদমিয়া চেকপোস্টের বিপরীতে লালদিয়ায় টহল দিচ্ছিলেন। ওই সময় একদল চোরাকারবারিকে ধাওয়া করেন বিজিবির সদস্যরা। একপর্যায়ে চোরাকারবারিরা বিজিবির আওতার বাইরে চলে যায়। এ সময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বিজিবির টহল দলের ওপর গুলি চালায়। এতে বিপ্লব নামের এক বিজিবির সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় নায়েক রাজ্জাক নাফ নদীতে পড়ে গেলে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়।
এর তিন দিন পর নায়েক রাজ্জাকের হাতকড়া পরা ছবি প্রকাশ করে বিজিপি। এর পর দফায় দফায় পতাকা বৈঠক ও রাজ্জাককে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও এতে সাড়া দেয়নি প্রতিবেশী দেশটি। সে সঙ্গে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছিল তারা।