শিক্ষক শ্যামল কান্তির মুক্তির দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও তাঁর মুক্তির দাবিতে বরিশালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরিশাল শাখার উদ্যোগে নগরীর সদর রোডে টাউন হলের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।
বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরিশাল জেলা কমিটির সভাপতি মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র মজুমদার, জেলা কমিটির সম্পাদক আনোয়ারুল হক ও আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি জিল্লুর রহমান।
গত বছরের ১৩ মে পিয়ার সাত্তার আবদুল লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র রিফাতকে বেত্রাঘাত করার জের ধরে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ইসলাম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ আনে। বিষয়টি মসজিদের মাইকে প্রচার করলে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করে। অবরুদ্ধ করে রাখে বিদ্যালয়ের ভেতর।
খবর পেয়ে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর বাইরে নিয়ে শত শত জনতা, বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে কানধরে ওঠবস করান। এই ঘটনার ভিডিও প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়। এর দুদিন পর টেলিভিশন ও দৈনিক পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হয়।
এর মধ্যেই শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ আনেন মোর্শেদা বেগম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমের চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার জন্য তাঁর কাছ থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরবর্তী সময়ে আরো এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু মোর্শেদা বেগমকে এমপিওভুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুলাই মোর্শেদা বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালত বন্দর থানার পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। গত ১৭ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১/৪১৭/৪০৬/৪২০ ধারায় অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আদালত এ মামলায় পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেন গত ২৪ মে। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই দিনই আইনজীবীর মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম অশোক কুমার দত্তের কাছে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে শ্যামল কান্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।