ঈদে লঞ্চ চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বাল্কহেড বন্ধ

ঈদে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে লঞ্চ চলাচলের পথে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়। ঈদের আগে ১০ দিন ও পরে ১০ দিন মোট ২০ দিনের জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত কার্যকরে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
পাশাপাশি নৌপথে মাছ ধরার জাল অপসারণ এবং টার্মিনালের সামনে নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ করণসহ নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় বরিশাল নৌবন্দরের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে ‘ঈদ প্রস্তুতিমূলক সভায়’ এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব, জেলা প্রশাসন, লঞ্চমালিক ও শ্রমিকরা উপস্থিত ছিলেন। বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক আবুল বাশার মজুমদারের সভাপতিত্বে এ সভা হয়।
সভায় ১৪-২৫ জুলাই পর্যন্ত স্পেশাল লঞ্চের বিষয়ে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে পন্টুন, জেটি ও শিপঘাট সম্পূর্ণ ব্যবহার উপযোগী রাখা, ঢাকা-বরিশাল রুটের ভাসানচর ও শেওড়া পয়েন্টসহ সকল নৌপথে বয়া, বাতি, মার্কা, বিকন ইত্যাদি স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া, উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ও টাগ স্ট্যান্ডবাই রাখা, লঞ্চঘাটের পন্টুনে উপড়ে যাওয়া বোলার্ড পুনঃস্থাপন করা, প্রতিটি লঞ্চে সনদধারী মাস্টার ও চালকের উপস্থিতি নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম মজুদ ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র সচল রাখা, প্রতিটি লঞ্চে ভাড়ার তালিকা উপযুক্ত স্থানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা, লঞ্চের ডেকে মালামাল বহন না করা, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করা এবং লঞ্চের ছাদে যাত্রী বহন থেকে বিরত থাকা, পন্টুনে নির্ধারিত স্থানে লঞ্চ বার্দিং নিশ্চিত করা, বিআইডব্লিউটিসির রকেট এমভি বাঙালি দোতলা লঞ্চঘাটের পরিবর্তে ঈদের ১০ দিন আগে ও ১০ দিন পর পর্যন্ত শিপঘাটে বার্দিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বন্দর এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপস্থিত রাখা হবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। এ ছাড়া ঈদের পাঁচদিন আগে ও পাঁচদিন পরে বরিশাল টার্মিনালে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বন্দর এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ জেনারেটর প্রস্তুত রাখা, টার্মিনাল এলাকায় লঞ্চমালিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, বন্দর সমন্বয় কমিটির সকল সদস্যকে যথাসময়ে টার্মিনালে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, আনসার কেবিন বিক্রি ও কালোবাজারে টিকিট বিক্রি বন্ধ করা, মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণার ব্যবস্থা করা, টার্মিনাল এলাকায় পকেটমার, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি এবং ছিনতাইকারীর অৎপরতা বন্ধ করার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক শাহাজল হক, নৌপুলিশ ফাঁড়ির জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুল মোতালেব, র্যাব ৮-এর উপসহকারী পরিচালক মো. হোসেন শাহরিয়ার, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. আল মুক্তাদির হোসেন, সমুদ্র পরিবহনের অধিদপ্তরের ইদ্রিছুর রহমান, বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক একিন আলী মাস্টারসহ বিভিন্ন লঞ্চের মাস্টারও সুপারভাইজাররা।