বাল্যবিবাহের হারে এশিয়ায় প্রথম বাংলাদেশ

বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে ঘটছে একটি বাল্যবিবাহের ঘটনা, বছরে এ সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। আর এই বাল্যবিবাহের হারের দিক দিয়ে এশিয়ায় প্রথম আর বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। অভিশপ্ত এই বাল্যবিবাহ কমাতে নানা উদ্যোগের পর এবার নেওয়া হয়েছে প্রযুক্তির সহায়তা।
অভিশাপ হয়ে আসা বাল্যবিবাহ এক ছাদের নিচে জড়ো করেছে কিশোরীদের। যাদের মধ্যে লালমনিরহাটের আদিতমারীর মেয়ে রোকসানা ও নীলফামারীর জলঢাকার মেয়ে সুলতানার ভাগ্যটি প্রায় একই রকম। দুজনেরই বাবা দিনমজুর, ভাইবোনের সংখ্যাও পাঁচজন। টানাপড়েনের সংসারে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাঁদের বিয়ে দেয় পরিবার। দুজনেই হয়েছেন ছেলেসন্তানের মা। কিন্তু সংসার বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের ছাড়তে হয় সংসার।
রোকসানা আর সুলতানার মতো এমন চাপাকান্না বয়ে বেড়াচ্ছে অনেক কিশোরী। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয় রংপুর বিভাগে। যার হার প্রায় ৭৬ শতাংশ। বিভাগটির কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলায় এ হার ৯০ শতাংশ বলেও উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। বাল্যবিবাহমুক্ত এলাকা ঘোষণাও কাজে আসছে না, যার উদাহরণ নীলফামারীর জলঢাকা।
তবে এবার নেওয়া হয়েছে নতুন কৌশল। বিয়ের আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্টার 16100 হ্যাশ নম্বরে ডায়াল করে জন্মসনদ, পরীক্ষার সার্টিফিকেট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে প্রমাণ দিতে হচ্ছে বয়সের। সরকারের সুশাসন ইনোভেশন ইউনিট ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সহায়তায় শুরু হয়েছে এই কার্যক্রম।
গত দুই মাসের তথ্য বলছে, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও দিনাজপুর এই চার জেলা থেকে বয়স যাচাই করা হয়েছে প্রায় ৫৩ হাজারজনের। যার মধ্যে অনলাইনে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ২০৭টি। ঝামেলামুক্ত হয়েছেন কাজীসহ বিয়ে সংশ্লিষ্টরা।
পদ্ধতিটি সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে এরই মধ্যে সার্ভারে যুক্ত করা হয়েছে সারা দেশের ঘটক, কাজীসহ বিয়ে সংশ্লিষ্ট ৮৫ হাজারজনের তথ্য।
বাল্যবিবাহ নিয়ে মাকসুদুল হাসানের ধারাবাহিক ভিডিও প্রতিবেদনের দেখুন প্রথম পর্ব। ক্যামেরায় ছিলেন রিপন মৃধা।