ড্রোন দিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল দুই সহোদর

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা মসিন্দা এলাকার জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক দুই ভাই ড্রোনের মাধ্যমে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন র্যাব-১২-এর অধিনায়ক সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
এই কর্মকর্তার ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে দুই সহোদর মাছুম ও খোকন জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে খোকন কম্পিউটারে খুবই পারদর্শী। তারা অত্যাধুনিক ড্রোন তৈরি করেছে। এই ড্রোনের মাধ্যমে তারা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।
মসিন্দা গ্রামের আবুল হোসেন চিশতিয়ার ওই বাড়িতে প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে একটি অত্যাধুনিক ড্রোন, বেশ কয়েকটি চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাড়ি ঘিরে ফেলেন র্যাব-১২-এর সদস্যরা। আটক দুই ভাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে র্যাব।
সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আরো জানান, গতকাল বিকেলে কালিহাতী উপজেলার সৈয়দ আবুল হাসান চিশতিয়ার বাড়িতে একদল জঙ্গি অবস্থান করেছে বলে খবর আসে তাঁদের কাছে। এর ভিত্তিতে টাঙ্গাইল র্যাব-১২-এর একটি দল বাসাটি গত সন্ধ্যা থেকে ঘিরে রাখে। পরে তাঁরা নিশ্চিত হন যে বাসায় বেশ কয়েকজন জঙ্গি অবস্থান করছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে রাত ৩টার দিকে মাছুম ও খোকনকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুই ভাইয়ের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার মিরপুরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান চলছে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
আটক দুই ভাইয়ের বিষয়ে স্থানীয় আবদুল জানান, মসিন্দা গ্রামের সৈয়দ আবুল হোসেন চিশতিয়ার ছেলে মাছুম বাড়ির কাছে মসিন্দা বাজারে চিশতিয়া ফার্মেসি অ্যান্ড স্টেশনারি সামগ্রীর দোকান চালাত। আর খোকন টাঙ্গাইল শহরের ভিক্টোরিয়া রোডে ক্যাপসুল মার্কেটে একটি কম্পিউটারের ব্যবসা পরিচালনা করত। খোকন রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেছে। মাছুম প্রায় নয় বছর মালয়েশিয়ায় ছিল। তিন বছর আগে দেশে ফিরে আসে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু হিসেবে পরিচিত আবুল হোসেন চিশতিয়ার আদি বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এলাকায়। প্রায় ২২ বছর আগে তাঁরা এলেঙ্গার মসিন্দায় বসবাস শুরু করেন। আড়াই বছর আগে সৈয়দ আবুল হোসেন চিশতিয়া মারা যান। প্রতিবছর ২৪ অক্টোবর তাঁর বাড়িতে ওরস হতো। সৈয়দ আবুল হোসেন চিশতিয়া মারা যাওয়ার পর তাঁর আরেক ছেলে তাপস তাঁর বাবার ধর্মীয় কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা পরিচালনা করতেন।