‘বাংলাদেশ গোঁজামিল কমিশন’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে ‘বাংলাদেশ গোঁজামিল কমিশন’ বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভবিষ্যতে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও সঠিকভাবে পরিচালনা করা যাবে না বলে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারাও এ নির্বাচন কমিশনের চেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবেন।
urgentPhoto
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ, জেন্ডার গ্যাপ ও আরো কিছু প্রশ্ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আবুল মকসুদ এ কথা বলেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাঁর কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করছে না। কর্তব্যে অবহেলা করছে। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছে।’ তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারাও এ নির্বাচন কমিশনের চেয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবেন।
ভোটার তালিকা পুনঃপরীক্ষার দাবি জানিয়ে আবুল মকসুদ বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এ কমিশনকেও পুনর্গঠন করতে হবে। এর পুনর্গঠন ছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আমরা আশা করতে পারি না।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যায় নারী-পুরুষের বিভাজনতার সঙ্গে ভোটার তালিকায়, বিশেষত নতুন ভোটারদের মধ্যকার দৃশ্যমান জেন্ডার-গ্যাপের কোনোরূপ মিল নেই। ভোটার তালিকায় নতুন ভোটারদের মধ্যে নারী ও পুরুষের মধ্যে যে ১২ শতাংশ জেন্ডার গ্যাপ দেখা যায়, তার যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ।
বদিউল আলম বলেন, ‘গত ছয় বছরে ২০০৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ভোটার বৃদ্ধির গড় হার ছিল ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। আর গত বছর যাঁরা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাঁদের জন্ম হয়েছে ১৮ বছর আগে এবং তখন আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশের কম। এ ধরনের অসঙ্গতি ভোটার তালিকার সঠিকতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করে পারে না।
বদিউল আলম আরো বলেন, ‘ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯-এর ১১ (১) ধারায় প্রতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু কমিশন জুলাই মাস থেকে হালনাগাদ কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে। এর আগের হালনাগাদও তারা মে মাসে শুরু করেছিল। এ ধরনের বিলম্ব আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ তিনি আরো বলেন, ‘হালনাগাদ কার্যক্রমে যাতে কেউ বাদ না যায় তার জন্য আগে থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো আবশ্যক। কিন্তু এবার বলতে গেলে কোনোরূপ প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই আজ থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম।’
প্রচারের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ জানিয়ে বদিউল আলম বলেন, ‘বর্তমান হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পর্কে অনেক ভোটারই অবগত নন।’
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য চাইতে নির্বাচন বিষয় নিয়ে কথা বলতে, আমার স্ট্যাটাসের প্রয়োজন হয় না। আমার নাগরিক স্ট্যাটাসই যথেষ্ট।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার, নারীনেত্রী সালমা খান প্রমুখ।