পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানির অভিযোগ

পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে খুলনার খালিশপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. শাহ জালাল ও তাঁর পরিবার। আজ রোববার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন দুই চোখ হারানো মো. শাহজালাল ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আইনজীবী।
গত ১৮ জুলাই খুলনার খালিশপুর থেকে শাহজালালকে তুলে নেয় পুলিশ। শাহজালালের স্বজনদের অভিযোগ এর পর চোখ উপড়ে ফেলা অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ দাবি করে, ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়েন শাহজালাল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর চোখ উপড়ে ফেলে। তাঁর বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের মামলাও দেয় পুলিশ।
শাহজালালের স্বজনদের অভিযোগ খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম খান শাহজালালকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। ওই টাকা না দেওয়ায় তাঁর চোখ উপড়ে ফেলে পুলিশ। গত ৭ সেপ্টেম্বর ওসি নাসিম খানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলা করেন শাহজালালের মা মোছা. রেনু বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী মিনা মিজানুর রহমান বলেন, ‘মামলা দায়ের করার পর থেকে তাদের পরিবারকে পুলিশের লোকেরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে । আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেন (পিবিআই) তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে খালিশপুর থানার ওসিকে বদলি বা অপসারণ করা হয়নি। ফলে তিনি প্রভাব বিস্তার করে খালিশপুরে শাহ জালালের পরিবারকে অবরুদ্ধ এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।’
মিজানুর রহমান খালিশপুর থানার ওসিসহ অন্যদের খালিশপুর হতে অন্যত্র বদলির দাবি করেন।
চোখ হারানো শাহ জালাল বলেন, ‘মামলা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এক এক সময় এক লোক পাঠায়। গতকাল দুটি গ্রুপ আসে। এখন পুলিশের ভয়ে আছি।’
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আইনজীবী মোমিনুর রহমান বলেন, ‘আজ সংবাদ সম্মেলন করতে শাহ জালাল ও তাঁর স্বজনরা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছেন। সন্ত্রাসীরা তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। আমরা মনে করেছিলাম আসামিদের প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু ওসি স্বপদে বহাল থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।’
গত ১৮ জুলাই ঘটনার পর শাহ জালালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শাহ জালাল চিরতরে অন্ধ হয়ে গেছেন।