আশরাফ জাতিকে হতাশ করেছেন : বিএনপি
‘আগামী জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই হবে’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যে জাতি হতাশ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটি মনে করে, এর মধ্য দিয়ে দেশে আবারও একটি ‘৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন পাঁচ শতাংশের সরকার’ গঠিত হবে-এ শঙ্কাই জাগিয়ে তুলেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী।
urgentPhoto
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।
এর একদিন আগেই গতকাল শুক্রবার জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী নির্বাচন বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী হবে। বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। এটা আমাদের সংবিধানের নিয়ম, এর কোনো ব্যতিক্রম নেই।’
বিএনপি মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মূলত সংবিধান থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা রহিত করে শাসকদল সর্বস্তরের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে গলাটিপে হত্যা করে যে বিষবৃক্ষ রোপণ করেছে, সেটার বিষে আজ সরকার জর্জর। যার ফলশ্রুতিতে দেশে এখন কোনো আইনের শাসন নেই, সুশাসন নেই- ফলশ্রুতিতে কর্ত্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার যাঁতাকলে জাতি আজ নিষ্পিষ্ট।’
‘সরকার এ সংকট থেকে বাঁচতে পারে, যদি দেশের বিরোধী দলগুলোকে তাদের সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা না দিয়ে দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্ষমতাসীনদের অধীনে দেশে কোনো সুষ্ঠু-অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আর কোনো পথ খোলা নেই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণের মতো একটি জাতীয় নির্বাচনের কথা বলেছেন উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপি ভবিষ্যতে সরকার গঠন করলে অবশ্যই কোনোভাবেই প্রতিহিংসার রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। পরাজিতদেরও সুপরামর্শ নিয়ে, সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
গতকালই আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ২০১৯ সালের মধ্যে দেশের রাজনীতিতে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব তিনি দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া, তারেক সাহেব— নেতা হিসেবে আমি এঁদের দেখছি না।’
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, শাসকদলের ক্ষমতা হারানো কিছু ব্যক্তি বিএনপি ও তার নেতৃত্ব নিয়ে কটূক্তি করে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেদের পত্রিকার পাতায় বাঁচিয়ে রাখার নির্লজ্জ প্রয়াস চালাচ্ছেন। তার মধ্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও তাঁর সহযোগীদের কাছে আমাদের প্রশ্ন- তাদের আজকের দুর্গতির জন্য নিজেদের দুর্নীতি-কালো বেড়ালে রূপান্তরিত হওয়াও দায়ী।’
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক ল্যান্ড বাউন্ডারি অ্যাগ্রিমেন্ট জাতীয় পার্লামেন্টে র্যাটিফাই হওয়ায় ১৬২টি ছিটমহল বিলুপ্ত হয়ে দুই দেশের পতাকা উড্ডীন হয়েছে সেখানে। ৫২ হাজার মানুষের ৬৮ বছরের কান্নাভেজা মুক্তির আনন্দে-আমরাও আনন্দিত। বাংলাদেশের নতুন এসব নাগরিকবৃন্দ আমাদের মূল ধারায় মিশে যাবেন, এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিশে যাওয়া বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর মানুষদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সকল উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।