বাঁধ ভেঙে প্লাবন, টাকা পেলে মেরামত!

খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের তীব্র স্রোতে ১৬ নম্বর পোল্ডারে সদ্য মেরামত করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ২০০ ফুট বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে, প্রায় দুই হাজার বিঘার ৮০টি চিংড়িঘের। তলিয়ে গেছে দুই থেকে তিনশ একর আমন ধানের ক্ষেত।
অর্থ সংকটের কারণে মেরামতের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পাউবো।
গত শনিবার রাতে উপজেলার বোয়ালিয়া চরের বিলের ওয়াপদার বেড়িবাঁধে প্রাথমিকভাবে ভাঙন দেখা দেয়। তবে পদক্ষেপ না নেওয়ায় গতকাল রোববার জোয়ারে ১৬ নম্বর পোল্ডারের বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানি ব্যাপকভাবে ভেতরে প্রবেশ করায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দারা মাটি ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। বরং বর্তমানে ভাঙন ভয়াবহ আকার রূপ নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও গতকাল পর্যন্ত বাঁধ মেরামত করার কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা এ ঘটনার জন্য পাউবো কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করায় এ ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে ভাঙন এলাকায় গেলে ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়িঘের মালিক ও আমন চাষিরা জানান, ভাঙনে এরই মধ্যে বোয়ালিয়া থেকে আগড়ঘাটা পর্যন্ত দুই হাজার একরের ৮০টি চিংড়িঘেরের লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। শত শত বিঘা আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরণ সাধু জানান, জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামত না করায় গোটা এলাকার ফসলাদি, মৎস্য সম্পদ, রাস্তা-ঘাট, পোল্ট্রি ফার্ম তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
পাউবোর কর্মকর্তা এস. ও শহিদুল্লাহ মজুমদার এ ভাঙনের জন্য চিংড়িঘের মালিকদের দোষারোপ করেন। ভাঙন এলাকায় মোস্তাক এ- ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তিন লাখ ৪৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৬০ মিটার বেড়িবাঁধের কাজ করে। তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয়ের অর্থ বরাদ্দ না হওয়া পর্যন্ত বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফকরুল হাসান ভাঙন এলাকা পরিদর্শনের কথা জানিয়ে এ প্রতিনিধিকে বলেন, এ মুহূর্তে উপজেলা পরিষদের পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বজললুর রশিদ জানান, বাঁধের পাশে চিংড়িঘেরগুলোতে পাইপ দিয়ে পানি ঢোকানোর জন্যই এই বেড়িবাধঁ ভেঙ্গে গেছে। তিনি জানান, ভাঙ্গনের ভয়াবহতা অনেক বেশী এবং এই কারনে বড় বাজেটের প্রয়োজন হবে । এই জন্য মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে মেরামত কাজ করতে হবে । অর্থ সংকটের কারনে মেরামত কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।