ভারতে বিয়ে করেছিলেন জঙ্গি আবু সাঈদ!

জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির নেতা ও ফাঁসির আসামি আবু সাঈদকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর হাট এলাকায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে মোটরসাইকেল থামিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় একটি ৯ এমএম পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, আটটি গুলি, একটি ছুরি ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়।
আজ শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান। আবু সাঈদ রাজশাহী থেকে বগুড়ায় আসছিলেন। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরচাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা।
এসপি জানান, ২০০২ সালে জেএমবিতে যোগ দেন আবু সাইদ। এরপর উত্তরাঞ্চলে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ২০০৪ সালে রাজশাহী জেলার সামরিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান। সে বছরই তিনি রাজশাহী বাগমারা হামির কুৎসা গ্রামে জেএমবির শুরা কমিটির প্রধান সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই ও শায়খ আবদুর রহমানের সঙ্গে সর্বহারা নিধনে অংশ নেন। জেএমবির শীর্ষ নেতা সোহেল মাহফুজকে দলে ভেড়ান আবু সাইদ।
পুলিশ জানায়, ২০০৫ সালে নওগাঁ জেলার দায়িত্ব পান আবু সাইদ। একই বছর ১৭ আগস্ট সারা দেশে বোমা বিস্ফোরণের সময় তাঁর নেতৃত্বে নওগাঁয় চারটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই ঘটনায় বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিস্ফোরণ আইনের মামলায় নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর ২০০৭ সালে ভারতে পালিয়ে যান আবু সাঈদ। নতুন করে ঘর বাঁধেন সেখানে। ২০০৯ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার জেএমবি সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করেন। সেখানেও জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করেন তিনি। ২০১০ সালে আবু সাঈদ ভারতের নদীয়া জেলার জেএমবির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দুই বছর পর নদীয়া জেলার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম ও বর্ধমান জেলার দায়িত্বও পান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, ২০১৪ সালে ২ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগগড়ের বোমা বিস্ফোরণে সঙ্গে জড়িত ছিলেন আবু সাঈদ। এ ঘটনায় বর্ধমান থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং আদালত অভিযোগপত্র দেন। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কলকাতা শাখা তাকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর ২০১৫ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন আবু সাঈদ। থেমে থাকেননি তিনি। ২০১৫ সালেই শেষের দিকে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। সাংগঠনিক দক্ষ হওয়ায় ২০১৭ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ও শুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।