বাল্যবিয়ে : দুই বাবাসহ ছয়জনের জেল-জরিমানা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের বামনী গ্রামের এক কিশোরীকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার অপরাধে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারা ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরা হলেন বর ও কনের বাবা, বিয়ে নিবন্ধনকারী (কাজী), মৌলভি ও সাক্ষী।
আক্কেলপুল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক গোলাম মো. শাহনেওয়াজ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দণ্ড দেন।
দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন আক্কেলপুর উপজেলার বাসিন্দা মৌলভি মো. ওমর আলী, বরের বাবা দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কফিল উদ্দীন (৫১), কনের বাবা জিয়াউল ইসলাম, সাক্ষী আফজাল হোসেন ও মুকুল। জরিমানা করা হয়েছে বিয়ে নিবন্ধনকারী (কাজি) বিনঝাড় দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. আইয়ুব আলীকে (৪৯)। বর-কনের বাবা ও দুজন সাক্ষীকে সাত দিনের এবং মৌলভি ওমর আলীকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও কাজি মো. আইয়ুব আলীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বামনী গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের মেয়ে বিনঝাড় দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী জাকিয়া সুলতানাকে তার নানি ও খালা জোর করে হাবিবুর রহমানের (২২) সঙ্গে বিয়ে দেন।
বিয়ের পর বুধবার রাতে বরযাত্রীরা ওই বালিকা বধূকে নিয়ে একটি বাসে বিরামপুর ফেরার পথে আক্কেলপুর পৌর সদরের তুলসীগঙ্গা নদীর সেতুর পূর্ব পাশে পৌঁছালে বাল্যবিয়ের খবর জানতে পারে পুলিশ। পরে তারা বরযাত্রীসহ বাসটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গভীর রাতে বাসটির নারী-পুরুষ যাত্রীদের ছেড়ে দিলেও বর ও তাঁর বাবাসহ চারজনকে আটক করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে বাল্যবিয়ে পড়ানোর অভিযোগে একই উপজেলার তিলকপুরের বামনী গ্রাম থেকে কাজী আইয়ুব আলী ও মাওলানা ওমর আলীকে আটক করে পুলিশ।
পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও একজনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।