খুলনায় ‘শীতকালীন মেলা’য় জুয়া খেলার অভিযোগ

খুলনায় শীতকালীন মেলার নামে জুয়ার খেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) এলাকায় কেডিএ বালুর মাঠ ফুলবাড়ি গেটে চলছে এ আয়োজন।
মেলায় র্যাফেল ড্র, হাউজি, চরকা, বউ খেলা, ‘ওয়ান টেন’সহ বিভিন্ন ধরনের আয়োজন রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনা মহানগরী, বিভিন্ন উপজেলা এবং যশোর ও নড়াইলে ১৮৫ থেকে ২০০টি ইজিবাইকে মাইকের মাধ্যমে টিকিটি বিক্রি করা হয়। প্রতি ইজিবাইকে ৫০০টি করে টিকিট বিক্রি নির্ধারণ করা রয়েছে। র্যাফেল ড্রতে চার লাখ টাকা পুরস্কারসহ মোট ১০১টি পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মাইকিংয়ে ঘোষণা করা হয়, ‘২০ টাকার বিনিমিয় যে কেউ পেতে পারেন নগদ চার লক্ষ টাকা, মোটরসাইকেল বা ষাঁড়।’
মেলার আয়োজন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইজিবাইক ছাড়া পিকআপ ভ্যানের প্রতিটিতে দুই হাজার করে টিকিট বিক্রি করা হয়। ফুলবাড়ী গেট বালুর মাঠ এলাকায় ৪০ থেকে ৫০টি স্থানে টেবিল বসিয়ে নারীরা এ টিকিট বিক্রি করেন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা বিষয়ক দুটি প্রতিষ্ঠান চামেলী ও তামান্না এ মেলার আয়োজন করেছে। আয়োজকদের মধ্যে আছেন রানা নামের এক ব্যক্তি, যিনি তার নামের আরেক অংশ জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি জানান, চার লাখ টাকাসহ পুরস্কার দেওয়া হয় সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা। তিনি আরো জানান, মেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত কোম্পানির নিজ খরচে পুরস্কার সরবরাহ করা হয়। টিকিট যাতে কেউ জাল না করতে পারে সেজন্য প্রতিদিনই বিভিন্ন মার্কা দিয়ে মনোগ্রাম দেওয়া হয়। মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিরাতেই বিশাল আয়োজন করে এ র্যাফেডল ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যায় শুরু হয় হাউজি খেলা। এ খেলা চলে গভীর রাত পর্যন্ত। নানা বয়সী মানুষের অংশগ্রহণে এ খেলা চলে গভীর রাত পযর্ন্ত। প্রতিরাতে ২০ লাখ লেনদেন হয় এই খেলা ঘিরে। মেলা প্রাঙ্গণে গোপনে ক্যাসিনোর আদলে ১২টি কোর্ট বসানো হয়েছে। এতে চরকি, শুটিং, বউ খেলার আসর। এসবের মাধ্যমে জুয়া চলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিদিন রাত ৮/৯টায় শুরু করে জুয়া খেলা চলে শেষরাত পর্যন্ত।
এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ১৫ জানুয়ারি থেকে বিজয় মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি ‘শীতকালীন মেলা’ নিয়ে কিছু বলেননি।
এ ব্যাপারে খান জাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন ভূইয়া জানান, জুয়া থাকার অভিযোগ ১৫ জানুয়ারি থেকে বিজয় মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১৮ জানুয়ারি থেকে তারা আদালতের নির্দেশে তিনমাস ব্যাপী শীতকালীন মেলা শুরু করেছে। তিনি বলেন, মেলার নামে সব জায়গায় জুয়া হচ্ছে।