ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা
আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস ছাত্রলীগ নয়, বিএনপির ক্ষমতার উৎস ছাত্রদল বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ছাত্রলীগকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কুড়িগ্রাম-রাজারহাট-তিস্তা জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’-এর ১৯ কিলোমিটার কাজের উদ্বোধনকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ক্ষমতার উৎস ছাত্রলীগ নয়। বিএনপির ক্ষমতার উৎস ছিল ছাত্রদল। তারা প্রকাশ্যে, বেগম জিয়া বলতেন, ছাত্রদলই আওয়ামী লীগকে মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আমরা কোনোদিনই এ কথা বলব না, যে বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য আমরা ছাত্রলীগকে ব্যবহার করব।’
ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোথাও কোনো বিচ্ছিন্নভাবে অপকর্ম করলে তার শাস্তির ব্যবস্থা আছে। ছাত্রলীগের অনেক কর্মী এখন কারাগারে। ছাত্রলীগের অনেক কর্মী ফাঁসির দণ্ডেও দণ্ডিত হয়েছে। আমাদের ম্যাসেজ হলো ভালো কাজ করলে পুরস্কার দেব। আর খারাপ কাজ করলে তিরস্কৃত হবে। আমরা ছাত্রলীগকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আগামী মার্চ মাসে ছাত্রলীগের নতুন সম্মেলন হবে। সেই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগে নতুন নেতৃত্বের দ্বার উদঘাটন হবে এবং ছাত্রলীগকে নতুন মডেলে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন।’
নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির যখন প্রতিনিধিত্ব ছিল সংসদে, তখন তাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নির্বাচনের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, সেই মন্ত্রণালয় দেওয়ারও অফার ছিল। তখন তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন তো পার্লামেন্টেই নাই, তাদের আমরা কীভাবে আমন্ত্রণ জানাব।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের কোন নেতা নির্যাতনের শিকার হয়েছে? সব তো একে একে জেল থেকে বেরিয়ে এসেছে। যা খুশি তাই বলছে। দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকত, সাংবাদিকের সাংবাদিকতার স্বাধীনতা না থাকত, পরিবেশ না থাকত, যেভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপি নেতারা অ্যাটাক করেন, শেখ হাসিনাকে কখনো তারা শেখ হাসিনা বলেন না। হাচিনা, হাচিনা, হাছিনা বলে সম্বোধন করেন। এ রকম অশ্রাব্য এবং নোংরা ভাষায় তারা আওয়ামী লীগকে অ্যাটাক করে। তারপরও তো কোনো নেতাকে এই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারপরও তো তাদের কোনো বক্তব্য মিডিয়াতে সেন্সর করা হয়নি। সরকারের তরফ থেকে কোনো মিডিয়াকে বলা হয়নি যে বিএনপি নেতাদের এই বক্তব্য আপনারা প্রচার করবেন না। এমন ধরনের কোনো অভিযোগ তো বিএনপি স্পেসিফিকলি করুক, তথ্য প্রমাণ দিয়ে বলুক কীভাবে নির্যাতন হয়েছে। আর তারা যেভাবে বলছে, যেটা বলছে নির্যাতন। অত্যাচার-নির্যাতনে তারা কিন্তু তাদের আমলে বিশ্ব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। অত্যাচার-নির্যাতনে বিএনপির রেকর্ড এ দেশে কেউ ভাঙতে পারবে না। এটা হলো বাস্তবতা।’
পরে সেতুমন্ত্রী কলেজ মোড়স্থ স্বাধীনতার বিজয়স্তম্ভে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ও শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক, কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাফর আলী, জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মো. ফেরদৌস খান, পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম উপস্থিত ছিলেন।