পুলিশ হেফাজতে ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়নি : আইজিপি

পুলিশ হেফাজতে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি জাকির হোসেন মিলনের মৃত্যু হয়নি বলে দাবি করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেছেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জাকিরের মৃত্যু হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনার বয়রায় পুলিশ লাইনস মাঠে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইজিপি। তিনি আজ খুলনা মহানগর বিট পুলিশিং কার্যক্রম উদ্বোধন করেন এবং মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন।
গত ৬ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ফেরার পথে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সহসভাপতি ও তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে ১০ মার্চ তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেদিন থেকে কারাগারেই বন্দি ছিলেন তিনি। ১২ মার্চ সকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে এক কারারক্ষী জাকিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সকাল পৌনে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা জাকিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর জাকিরের পরিবার ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অভিযোগ করেন, পুলিশী রিমান্ডের নামে নির্যাতনে জাকিরের মৃত্যু হয়েছে।
আজ ওই অভিযোগের ব্যাপারে এক সাংবাদিক আইজিপির বক্তব্য জানতে চান। আইজিপি বলেন, ‘দেখুন, আপনি বলেছেন, কেউ অভিযোগ করেছেন, কোথাও পুলিশ হেফাজতে কেউ মারা গিয়েছে। পুলিশি হেফাজতে যদি মারা যায়, রুলস এবং রেগুলেশন্স আছে। কী ধরনের তদন্ত হবে এবং আপনি যার কথা বলছেন এখানে, আসলে তার মৃত্যু হয়েছে আমার জানা মতে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে। সুতরাং, পুলিশ হেফাজতে মারা গিয়েছে এ রকম প্রমাণ সম্ভবত, আপনার কথা অনুযায়ী আপনি যে বক্তব্যটা বলছেন, তার সাথে ঘটনাটির কোনো মিল নেই।’
মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সামাজিক সমস্যা। এসব সমস্যা সামাজিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, সমাজের সব স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে তিনি সুধী সমাবেশ করছেন। পুলিশের সব ইউনিট কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলাপ আলোচনা করা হচ্ছে। এসব কিছুর মধ্যদিয়েই মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।
মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী সুধী সমাবেশে আইজিপি বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ একটি একটি ফোর্স হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পরিবার, সমাজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব সামাজিক সংগঠনগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এভাবে সমাজের সব কম্পোনেন্টগুলো এগিয়ে এলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সফল হতে পারব।
খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার মো. হুমায়ুন কবির সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ও মিজানুর রহমান মিজান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. দিদার আহম্মদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ ও জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান। এ ছাড়া সমাবেশে মহানগর কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভাপতি ডা. এ কে এম কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ সৈয়দ আলী, জেলা সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।