ছিলেন উমেদার, এখন দুই হাজার কোটি টাকার মালিক

বাগেরহাট ডিসি কার্যালয় থেকে ২০১০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান উমেদার (এমএলএসএস) এম এম এ মান্নান তালুকদার। এরপর মাত্র আট বছরেই তিনি দুই হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এ জন্য ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নিতে হয়নি তাঁকে। বিলাসবহুল আটটি গাড়ি ছাড়াও হেলিকপ্টারে করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন তিনি। তাঁর প্রতিষ্ঠানে অর্থ জমা রাখলে তা চার বছরে অর্থ দ্বিগুণ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়ে থাকে।
মান্নান তালুকদারের ভিজিটিং কার্ডে লেখা হয়েছে, ‘ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, সাবিল গ্রুপ’। এর করপোরেট অফিস ঢাকার দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায় বিসিআইসি ভবনের ১৬ তলায়, রেজিস্ট্রি অফিস খুলনার বয়রাবাজারে আর প্রধান কার্যালয় বাগেরহাটের মিঠাপুকুরে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে সাতক্ষীরা, নড়াইল, পিরোজপুর ও যশোরে।
ভিজিটিং কার্ডে উল্লিখিত সাতটি প্রতিষ্ঠান
১. অ্যাজাক্স জুট মিলস, ২. সাবিল পেপার মিলস, ৩. সাবিল লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ৪. সাবিল অটোমেটিক ব্রিক লিমিটেড, ৫. বাগেরহাট টেডিং লিমিটেড, ৬. জাকারিয়া এন্টারপ্রাইজ এবং ৭. নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড।
তবে এম এম এ মান্নান তালুকদার বলেন, অ্যাজাক্স জুট মিল এখনো চালু হয়নি। সাবিল পেপার মিল ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ প্রস্তাবিত আর সাবিল অটোমেটিক ব্রিক লিমিটেডের প্রস্তুতি চলছে। নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের অফিস রয়েছে। প্রকল্পের জন্য জমি রয়েছে, কোনো ভবন নেই। এ ছাড়া প্রস্তাবিত সাবিল টুইন টাওয়ার, সাবিল ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, প্রস্তাবিত তিনতলা মার্কেট, সাবিল জেনারেল হাসপাতাল, সাবিল বৃদ্ধাশ্রম, সাবিল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, সাবিল ডিজিটাল প্রিন্টার্স প্রকল্প ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প কেবল কাগজপত্রে রয়েছে।
তবে অ্যাজাক্স জুট মিল লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাওসার জামান বাবলা মোবাইল ফোনে জানান, মান্নান তালুকদার জুট মিলের মালিক—এমন কোনো প্রমাণ নেই। তিনি ২০ কোটি টাকার চেক দিয়েছিলেন, কিন্তু চেকটা বাউন্স করেছে (ব্যাংক গ্রহণ করেনি)। ফলে তিনি রংপুরে (কাওসার জামানের বাড়ি রংপুরে) মান্নান তালুকদারের নামে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি টাকা পরিশোধ করেননি, এমনকি মিলও চালু করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ছাড়া অন্য শেয়ারহোল্ডারদের অর্থ পরিশোধ না করেই মিলের মালিকানা দাবি করছেন। মান্নান তালুকদার একজন প্রতারক বলে দাবি করেন কাওসার জামান।
অ্যাজাক্স জুটি মিলের চেয়ারম্যান আরো জানান, কিছু শ্রমিক নেতাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন মান্নান তালুকদার। আমানত সংগ্রহ করতে তিনি মিলকে ব্যবহার করছেন। তিনি জানান, মিল কেনার চুক্তি করে মান্নান তালুকদার ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে মিলে আসেন। তারপর মিল শ্রমিকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বলেন, দ্রুত মিল চালু এবং বকেয়া পরিশোধ করা হবে। কিন্তু বাস্তবে দেড় বছর পার হয়ে গেলেও মিল চালু হয়নি। তাদের কোনো টাকাই দেননি মান্নান।
এম এম এ মান্নান তালুকদারের পরিচয়
বাগেরহাট শহরের মিঠাপুকুরের কে আলী রোডের বাসিন্দা মান্নান তালুকদার। মাদ্রাসায় পড়াশোনা করলেও তাঁর কোনো সার্টিফিকেট নেই বলে স্বীকারও করেন। ১৯৮৪ সালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে ২০১০ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। ২৬ বছর চাকরির পর স্বেচ্ছায় অবসরে যান। তিনি জানান, অবসর নেওয়ার পর সরকারের অবসরকালীন ভাতা তিনি মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছেন।
সম্প্রতি প্রায় দুই সপ্তাহ যোগাযোগের চেষ্টার পর মান্নান তালুকদারের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। মিঠাপুকুরে প্রি-ক্যাডেট মাদ্রাসার সঙ্গে লাগোয়া তিনতলা ভবন তাঁর কার্যালয় ও বাড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাঁর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র সব পাওয়া যাবে। খুলনায় পৌঁছে দেওয়া হবে (পরে কোনো কাগজপত্র তিনি দেননি)। তিনি স্বীকার করেন, ছোটকাল থেকেই তিনি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতেন এবং তার লভ্যাংশ সকলকে দিতেন। যখন চাকরি করতেন, তখনো তাঁর এ ব্যবসা অব্যাহত ছিল। মান্নান তালুকদার আরো জানান, ডিসি কার্যালয়ের এমএমএলএস পদে চাকরি করলেও সব কাজই তিনি করতেন। অফিসের কাজে তিনি তখন ১৫/১৬ ঘণ্টা সময় দিতেন। আর ভূমি অফিসসহ সকল কাজ বুঝতেন। এ কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন।
মান্নান তালুকদার জানান, বাগেরহাটে তাঁর মালিকানায় একটি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। খুলনা মহানগর থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকে সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হিসেবে এম এম এ মান্নান তালুকদারের নাম ছাপা হয়।
নিউ বসুন্ধরার রিয়েল এস্টেট লিমিটেড
প্রতিষ্ঠার আট বছর পার হয়ে গেলেও কোনো আবাসন নেই। প্রতিটি সাইনবোর্ড আর কাগজপত্রে রয়েছে ‘ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত’। নিবন্ধন নম্বর সি ৮৯১১৪/২০১০।
সরেজমিন
অনুসন্ধান করার জন্য খুলনা অফিসে চার-পাঁচ দিন গিয়ে বিভিন্ন তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হতে হয়। তবে পরে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের সদস্য হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ এবং ৫০ লাখ টাকা জমা রাখার প্রস্তাব করা হলে চিত্র বদলে যায়। খুলনার বয়রায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের খুলনা শাখার ম্যানেজার মো. মহিবুল্লাহ বুলবুল। আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি জানতে চান, টাকা আনতে গাড়ি দিতে হবে কি না। পরে অর্থ জমা করা হবে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়। মহিবুল্লাহ জানান, তাঁদের সব মিলিয়ে ৪০ হাজার সাধারণ শেয়ারহোল্ডার রয়েছেন। তাঁরা কেউ এক লাখ, কেউ এক কোটি টাকা পর্যন্ত জামানত রেখেছেন।
সাধারণ শেয়ারহোল্ডার হওয়ার শর্তাবলি
বাংলাদেশের সব নাগরিক কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আবেদনকারীকে ১০০ টাকা পরিশোধ করে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। সর্বনিম্ন বিনিয়োগ পাঁচ হাজার টাকা করতে হবে। মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে বিনিয়োগ উত্তোলন করা যাবে না।
বলা হয়েছে, মেয়াদ পূর্তির আগে বিনিয়োগ উত্তোলন করলে বর্ণিত হারে লভ্যাংশ দেওয়া হবে : ক. এক বছর বিনিয়োগের পর উত্তোলন করলে ব্যবসার ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ গ্রাহক পাবে; খ. দুই বছর পর বিনিয়োগ উত্তোলন করলে ব্যবসার ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ গ্রাহক পাবে; গ. তিন বছর পর বিনিয়োগ উত্তোলন করলে ব্যবসায় ৪০ শতাংশ লভ্যাংশ গ্রাহক পাবে; চার বছর মেয়াদে রাখলে অর্থ দ্বিগুণ করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ যে কেউ ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে চার বছরে তাঁকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। আর এক লাখ টাকা জমানত রাখলে মাসে লভ্যাংশ দেওয়া হবে ২৪০০ টাকা এবং বছরে ২৮ হাজার ৯০০ টাকা।
নিউ বসুন্ধরার খুলনা শাখার ম্যানেজার মহিবুল্লাহ বুলবুল এফিডেভিট করা একটি চুক্তিপত্র দেখান, যেটা করা হয়েছে খুলনার বাসিন্দা মো. ফেরদৌস আলম চান ফারাজীর সঙ্গে। তিনি এককালীন ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এখানে শর্তগুলোর তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে প্রথম পক্ষের বিনিয়োগ করা টাকা দ্বিতীয় পক্ষ ইসলামী শরিয়তের মুদারাবা পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য গ্রহণ করেছেন। এখানে শর্ত দেওয়া রয়েছে, চার বছরে ২৫ লাখ টাকা ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত হবে। তবে কোনো অবস্থাতেই এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে বিনিয়োগ উত্তোলন করা যাবে না।
এ ব্যাপারে ফেরদৌস আলম চান ফারাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ২৫ লাখ টাকা জমা রাখার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এক বছর পার হয়নি। তাই লভ্যাংশ পাচ্ছেন না। তাঁর চার বছরে টাকা দ্বিগুণ করার কথা রয়েছে। তিনি জানান, খুলনা-মোংলা রুটে যে রেলসড়ক হচ্ছে এবং এ রেল সড়কের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পাওয়া সব টাকাই আমানত হিসেবে মান্নান তালুকদারের প্রতিষ্ঠানে জমা পড়েছে। ফেরদৌস আলম জানান, লকপুর ইউনিয়নের প্রায় প্রতি পরিবার মান্নান তালুকদারের কাছে আমানত জমা রেখেছে। এলাকার লোকদের দেখাদেখি তিনিও তাঁর কাছে আমানত রেখেছেন।
সাংবাদিক পরিচয়ে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসার নামে আমানত সংগ্রহ করার বিষয়ে খুলনা শাখার ম্যানেজারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তাঁদের আমানত সংগ্রহ হয়েছে দুই হাজার কোটি টাকা। আর সেখানে তাঁদের জমি কেনা আছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার। বহুধাপ বিপণন (এমএমএল) প্রতিষ্ঠান যুবক ও ডেসটিনির মতো তাঁরা আমানত সংগ্রহ করছেন কি না জানতে চাইলে মহিবুল্লাহ জানান, সরকার যদি তাঁদের দুই বছর সময় দেয়, তাহলে তাঁরা গ্রহকের টাকা ফেরত দিতে পারবেন।
খুলনা শাখার ম্যানেজার জানান, খুলনা শহরে তাঁদের এই আমানত সংগ্রহ কাজে ৮০-৯০ জন মাঠ কর্মকর্তা রয়েছেন। এসব কর্মকর্তা কমিশনভিত্তিতে কাজ করেন। তাঁরা আমানত সংগ্রহসহ কয়েক দফায় ৫ শতাংশ অর্থ পেয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রাহক জানিয়েছেন, টাকা জমা দেওয়ার আগে তাঁদের বড় বড় কথা বলা হতো। এক বছর পর লভ্যাংশ নিতে গেলে ছয়-সাতবার ঘুরতে হয়। আবার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনো অভিযোগ করলে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। তখন তাদের কোনো অর্থই ফেরত পাওয়া যাবে না।
রূপালী ব্যাংক খুলনা জোনের মহাব্যবস্থাপক অশোক কুমার সিংহ বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি লন্ডারিং টাস্কফোর্সের বৈঠকে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের আমানত সংগ্রহ করার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে।
বাগেরহাট জেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের ম্যানেজারদের অভিযোগ, জেলার কোনো ব্যাংকই আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছে না। কারণ, বেশি টাকা পাওয়ার আশায় সবাই নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডে টাকা আমানত রাখছে।
খুলনায় একটি বেসরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুই বছর আগে তাঁর ব্যাংকে একজন অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসার শিক্ষকের ২৫ লাখ টাকার এফডিআর (আমানত) ছিল। তিনি সেই আমানত ভেঙে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটে জমা দেওয়ার জন্য টাকা উঠাতে এসেছিলেন। ম্যানেজার তাঁকে যুবক-ডেসটিনির কথা বলে নিবৃত্ত করেছিলেন। কিন্তু দুই দিন পর নিউ বসুন্ধরা গ্রুপের মাঠ কর্মকর্তা এসে ম্যানেজারকে শাসিয়ে যান। পরে সেই এফডিআর ভেঙে টাকা নিউ বসুন্ধরায় জম দেওয়া হয়। কিন্তু চাহিদামতো টাকা না পেয়ে সেই শিক্ষক মারা যান। বর্তমানে তাঁর উত্তরসূরিরা টাকা ওঠানোর চেষ্টা করছেন। একই অভিযোগ করেন খুলনা সোনালী ব্যাংক আঞ্চলিক মহাব্যবস্থাপক আমির হোসেন মিয়া, জনতা ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মুর্শেদুল কবীর।
ঢাকা ব্যাংকের খুলনার ভাইস প্রেসিডেন্ট আরিফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ব্যাংক ছাড়া অন্য কেউ এভাবে আমানত সংগ্রহ করা বেআইনি কাজ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. ইস্কান্দার মিয়া জানান, সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে তাঁদের টাস্কফোর্স বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাগেরহাটের নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট এমএলএম প্রতিষ্ঠান ডেসটিনির মতো অবৈধভাবে আমানত সংগ্রহ করছে। ব্যাংকিং অনুমতি না থাকায় এই আমানত সংগ্রহ বেআইনি। এসব অবৈধ লেনদেনকারীর পেছনে সব সময়ই প্রভাবশালীদের হাত থাকে।
এম এম এ মান্নান তালুকদার বলেন, পদ্মা নদীর এপারে কোনো আবাসন ব্যবসা না থাকায় তিনি এই ব্যবসা চালু করেন। তিনি বলেন, ডিসি অফিসে চাকরিকালীন তিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়ে জমি কেনাবেচা করতেন। গ্রাহকদের লাভ দিতেন। তাই সকলে তাঁকে বিশ্বাস করে টাকা তাঁর কাছে আমানত রাখেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সাধারণ মানুষের যে পরিমাণ টাকা তাঁর কাছে আমানত আছে, তার কয়েকগুণ বেশি সম্পদ বা জমি রয়েছে।
মান্নান তালুকদার জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানের একটি শরিয়াহ বোর্ড রয়েছে, যার নেতৃত্বে খুলনার গোয়ালখালী মাদ্রাসার মুহতামিম খলিফা আবদুল আউয়াল, মুফতি ওয়াক্কাস আলীসহ চরমোনাই পীরপন্থী আলেমরা। তবে তাঁদের কাজ কী, তা নিয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেননি। তিনি আরো জানান, বাগেরহাটের সব ব্যাংকের মাধ্যমে তিনি লেনদেন করেন। তবে আমানত রাখেন না। টাকা সংগ্রহ হলেই তিনি জমি কিনে ফেলেন। এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান জানান, সব মিলিয়ে ৪০ হাজার গ্রাহকের প্রায় ২০০ কোটি টাকা আমানত হিসেবে জমা হয়েছে।
তবে আরেক প্রশ্নের জবাবে মান্নান তালুকদার বলেন, তাঁর খুলনা-বাগেরহাটে যে পরিমাণ জমি আছে, তার মূল্য দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হবে। অ্যাজাক্স জুট মিল তিনি কিনেছেন এবং এ বছর চালু হবে এমন দাবি করে তিনি জানান, এ জুট মিল ছাড়া আরেকটি জুট মিল কেনা হয়েছে। অ্যাজাক্স জুট মিলের চেয়ারম্যান কাওসার জামান বাবলার অভিযোগের ব্যাপারে মান্নান বলেন, একটু সমস্যা হয়েছিল। তবে সব মিটে যাবে।