সালিসের মধ্যেই স্ত্রীকে নির্যাতন, আইনজীবী গ্রেপ্তার

এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে সালিস চলাকালেই স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে নীলফামারী জজ আদালতের আইনজীবী এস এম রাসেল রানাকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর বাবা সাদেকুল ইসলাম ও দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বুধবার রাতে তাদের উপজেলার শহরের জসিম বাজার মহল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন। তিনি আরো জানান, আইনজীবী রাসেল রানার প্রথম স্ত্রী সানজিদা আক্তারকে সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রাত ১টার দিকে সানজিদা আক্তার বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ)/৩০ ধারায় সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি জানান, সৈয়দপুর শহরের কয়ানিজপাড়ার শহীদ আজিজার রহমান স্ট্রিটের বাসিন্দা মৃত এস এম সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সানজিদা আক্তারের (২৯) সঙ্গে রাসেল রানার ১১ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে রাসেলের বাবা ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। সানজিদার বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় দুই দফায় নগদ টাকা ও সোনা মিলিয়ে প্রায় ১৩ লাখ টাকা যৌতুক দেন। যৌতুকের টাকা দিয়ে কেনা জমিতে বাড়িঘর তৈরি করে বসবাস করছিলেন তাঁরা।
এরপরেও আইনজীবী রাসেল রানা প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে গোপনে সৈয়দপুর কাজিরহাট মহল্লার ইদ্রিস আলীর মেয়ে আয়শা সিদ্দিকাকে চলতি বছরের ২১ মে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।
গত মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাসেল দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এলে প্রথম স্ত্রী সানজিদা বাধা দেন। এ সময় রাসেল তাঁর স্ত্রী সানজিদার ওপর নির্যাতন চালান।
পরদিন বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এলাকার লোকজন বিষয়টি সুরাহার জন্য বৈঠকের আয়োজন করে। সন্ধ্যায় বৈঠক চলাকালে এলাকাবাসীর সামনে প্রকাশ্যে প্রথম স্ত্রী সানজিদার ওপর নির্যাতন চালান আইনজীবী রাসেলসহ পরিবারের লোকজন।
বৈঠকে উপস্থিত মহল্লাবাসী এর প্রতিবাদ করলে রাসেল রানা প্রতিবেশীদের ওপরও চড়াও হন। পরে মহল্লার লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।