বিডিআর বিদ্রোহের ছয় বছর আজ

বিডিআর বিদ্রোহের ছয় বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। বিডিআর থেকে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের কর্তৃত্ব কমানো, বেতন বৈষম্য কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন বিডিআর জওয়ানরা। এতে নিহত হন ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে রায় দেওয়া হয় এ ঘটনায় করা মামলার। সাজা পান দোষী ব্যক্তিরা।
আজ বুধবার সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন, সেনা-নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রধান, সাবেক সেনাপ্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তাঁরা কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন কবরের পাশে।
রক্তাক্ত এ ঘটনার পর বাহিনীর নিজস্ব আদালতে বিদ্রোহের অভিযোগে করা মামলাগুলোর বিচার হয়। হত্যার মামলা চলে ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত মহানগর দায়রা জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায় দেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আখতারুজ্জামান। মামলার সাড়ে আটশ আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত। এ ছাড়া ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অস্ত্র লুটের দায়ে তাদের আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া ২৫৬ আসামির ৩ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। আর অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ না হওয়ায় বেকসুর খালাস পান ২৭৭ জন। এ ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত ২৩ আসামি এখনো পলাতক।
ঐতিহাসিক এই রায় ঘোষণার প্রায় ১৩ মাস পর আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আসে। এ বছরের ৪ জানুয়ারি রাতে ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের এই বিশেষ বেঞ্চ গঠন করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন। এর পর গত ১৮ জানুয়ারি থেকে চলছে হত্যা মামলায় দায়ের করা সব ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে উচ্চ আদালতে এ মামলা নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।