ধনু নদীতে নিখোঁজ ৩ মাছ শিকারীর মরদেহ উদ্ধার

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী হাওরে পলো শিকারীদের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ধনু নদীতে নিখোঁজ তিন মাছ শিকারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।
গত শনিবার সংঘর্ষে নিখোঁজ হওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের মরদেহ আজ সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে উপজেলার ধনু নদীর নাওটানা ও রসুলপুর ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
নিহত মাছ শিকারীরা হলেন আটপাড়া উপজেলার শ্বরমুশিয়া ইউনিয়নের রূপচন্দ্রপুর গ্রামের শহীদ মিয়া (৫০), কেন্দুয়া উপজেলার রয়েল বাড়ি ইউনিয়নের রয়েল বাড়ি গ্রামের হৃদয় (৩০) ও মদন ইউনিয়নের বাগযান গ্রামের রোকন মিয়া (৫০)।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছে খালিয়াজুরী থানা পুলিশ।
গত শনিবার খালিয়াজুরী উপজেলার রসুলপুর গ্রামের পাশে ধনু নদীর ফেরিঘাটে মাছ শিকারী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিত মানুষ আহত হয়। এ সময় শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গত এক সপ্তাহে মদন উপজেলার নূরেশ্বর বিল, খালিয়াজুরী উপজেলার কীর্তনখোলা বিল, কারিবিল, উচাবাইদা বিল, হাইলা বিলসহ বেশ কয়েকটি ইজারা দেওয়া বিলের মাছ লুট করেছে মাছ শিকারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার ইাজারা দেওয়া বিভিন্ন জলমহালে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মাছ লুটপাট করার মহোৎসব চালিয়েছে স্থানীয় এক শ্রেণির পলো শিকারী। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রায় সময়ই পাশের ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের তাড়াইল, নেত্রকোনা সদর, আটপাড়া, কেন্দুয়া, মদন ও খালিয়াজুরী উপজেলার হাজার হাজার লোকজন সমবেত হয়ে পলো ও জাল ফেলে মাছ লুট করে।
গত শনিবার সকালে খালিয়াজুরী উপজেলার কাঁঠালজান ও মরাগাঙের মাছ লুট করার জন্য ধনু নদীর পাড়ে জমায়েত হয় হাজারো বহিরাগত মানুষ। পরে মাছ শিকারীরা রসুলপুর ফেরিঘাটের পাশে তাদের পরিবহণের শতাধিক পিকাপ ভ্যান, অটোরিকশা, সিএনজি, হ্যান্ডট্রলি, মোটরসাইকেল রেখে মাছ শিকার করতে ধনু নদী পাড় হওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় ফেরিঘাটের লোকজনের সঙ্গে মাছ শিকারীদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে স্থানীয় লোকজন অংশ নিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়। পরে বিক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন বহিরাগত মাছ শিকারীদের শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মকবুল হোসেন তিনটি মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধার করা মরদেহের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।