প্রধানমন্ত্রী আসবেন, তাই সেজেছে দাসিয়ারছড়া

কুড়িগ্রামের সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর এই সফরকে কেন্দ্র করে আনন্দে উদ্বেলিত সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা। দীর্ঘ ৬৮ বছর পর বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হওয়া মানুষরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বর্ণিল সাজে সাজিয়েছে নিজেদের এলাকা। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পা রাখবেন এ এলাকায়।
একইসঙ্গে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠের জনসভাকে ঘিরেও চলছে ব্যাপক প্রস্ততি। তোড়নে তোড়নে ছেয়ে গেছে সমগ্র শহর। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে সফল করতে চলছে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের আনন্দ মিছিল, সভা-সমাবেশসহ ব্যাপক প্রস্তুতি।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কুড়িগ্রামে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দুপুর আড়াইটায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
৬৮ বছর পর বিদ্যুৎ পাচ্ছে দাসিয়ারছড়ার মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুতের আলো জ্বালিয়ে এ এলাকার বিদ্যুৎ যাত্রার সূচনা করবেন এবং ঘোষণা করবেন ইন্দিরা-মুজিব দাসিয়ারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের। এ এলাকার মানুষের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করবেন তিনি।
দাসিয়ারছড়ার বাসিন্দা আলতাব হোসেন বলেন, ‘সদ্য বিলুপ্ত ১১১টি ছিটের মধ্যে সবচেয়ে বড় কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়া। সদ্য নাগরিকত্ব পাওয়া ছিটমহলের মানুষগুলো এই প্রথম কোনো সরকারপ্রধানকে কাছ থেকে দেখবে। এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে সব প্রস্ততি সম্পন্ন করে অধীর আগ্রহে বসে আছি।’
কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাফর আলী বলেন, ‘আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামের মানুষকে ভালোবাসেন। জননেত্রীর আগমনে কুড়িগ্রামের মানুষ খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছে। আমরা তাঁর কাছে কুড়িগ্রাম জেলার সার্বিক উন্নয়নের দাবি করব।’
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্ল্যাহ্ বলেন, ‘সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলসহ সরকারি কলেজ মাঠে জনসভার জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।’
১৯৭৪ সালে ইন্দিরা-মুজিব স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা আন্দোলন করেছে দীর্ঘ ৬৮ বছর। অবশেষে শেখ হাসিনা সরকারের কুটনৈতিক সাফল্যে গত ১ আগস্ট ভারত-বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২ ছিটমহল মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত হয়। ছিট বিনিময়ের ফলে বাংলাদেশ পেয়েছে ১১১টি ছিটের ১৭ হাজার ২৫৮ একর এবং ভারত পেয়েছে ৫১টি ছিটের সাত হাজার ১০২ একর জমি। জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের ১১১টি সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের জনসংখ্যা ৪১ হাজার ৪৪৯ জন।