রিফাত হত্যা : রিশান ফরাজী গ্রেপ্তার

বরগুনায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বরগুনা থেকে রিশান ফরাজীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।
গত ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ একদল যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো দা দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। রিফাতের স্ত্রী আয়শা হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন; কিন্তু তাদের থামানো যায়নি।
খুনিরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। এ হত্যার ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন।
রিশানের ভাই রিফাত ফরাজী এ মামলার দুই নম্বর আসামি। গত ২ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে পর পর দুবার রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই পুলিশ হামলার সময় ব্যবহৃত একটি রামদা বরগুনা কলেজের পাশের একটি খাল থেকে উদ্ধার করে।
এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই ভোরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। মামলার এক নম্বর সাক্ষী রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকেও জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, মিন্নি এই হত্যায় জড়িত ছিলেন। যদিও মিন্নি দাবি করেছেন, তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন।
জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ২৬ জুন সংঘটিত চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আটজন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ গ্রেপ্তারকৃত সাতজনসহ মোট ১৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এজাহারভুক্ত গ্রেপ্তারকৃত চারজন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ গ্রেপ্তারকৃত ছয়জনসহ মোট ১০ আসামিকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত এজাহারভুক্ত দুজন এবং তদন্তে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ আসামি একজনসহ মোট তিন আসামিকে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতিক্রমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ এ মামলায় এজাহারে বর্ণিত আসামিসহ সব পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।