পিডিবির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি

নওগাঁয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তিন প্রকৌশলী ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতারা। একই সঙ্গে তাঁরা গ্রেপ্তার হওয়া নওগাঁ পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী লাহরী খানের মুক্তির দাবি জানান। নয়তো জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জাতীয় শ্রমিক লীগ নওগাঁ জেলা কমিটির সভাপতি জহুরুল সিদ্দিকী মিলন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক সোহেল, জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সভাপতি শামসুল আলম, শ্রমিক লীগ নেতা আবুল বাশার, আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক দলের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ নেতারা।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, অবিলম্বে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার হওয়া নওগাঁ পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী লাহরী খানকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে নওগাঁ জেলার সর্বত্র লাগাতার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ একটি জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বিদ্যুৎ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যক্তিদের কাজ করার সুযোগ না দিলে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ সরবরাহ কার্যক্রম বিঘ্নিত হলে তাঁর দায়দায়িত্ব প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী লাহরী খানসহ পাঁচজনকে আসামি করে গত ১ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তাঁর সাবেক শাশুড়ি। তিনি যৌতুকের দাবিতে মেয়েকে মারপিটের অভিযোগ আনেন আসামিদের বিরুদ্ধে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন নওগাঁ পিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী হারুন উর রশিদ, সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল করিম, নওগাঁ পিডিবির শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ ও বাসার মালিক নজিপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বিদ্যুৎ। মামলার পর ওই দিন রাতেই সদর মডেল থানার পুলিশ লাহরী খানকে তাঁর বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।
পরদিন ২ নভেম্বর লাহরী খান নিজেকে নির্দোষ ও ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে বলেন, পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করার পর গত ২৪ অক্টোবর রাতে নওগাঁ সদর থানায় বসে পুলিশ, প্রতিবেশী ও স্ত্রীর মা-বাবার উপস্থিতিতে তাঁদের তালাক সম্পন্ন হয়। স্ত্রীকে দেনমোহর ও তিন মাসের খরচের টাকাসহ এক লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে দেন। পরে তারা মাইক্রোবাসে করে কুষ্টিয়ায় চলে যান। এ ঘটনায় অপমান বোধ ও মেয়ের জন্য সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার লজ্জায়-ঘৃণায় মা-বাবা তাঁর মেয়েকে বেদম মারপিট করেন। আর ওই মারপিটের ছবি তুলে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন বলে তাঁর ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি দায়ের করা মামলা মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন।