সাত খুনের মামলা জজকোর্টে স্থানান্তর

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের দুটি মামলার একটি বিচারিক কাজের জন্য জজকোর্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। অপর মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য ৩০ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিক ইমাম এ আদেশ দেন।
এ সময় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা কর্নেল তারেক সাঈদ, কমান্ডার এম এম রানা, মেজর আরিফসহ ২২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তারেক সাঈদের পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে যাওয়া পাঁচ আইনজীবী জামিন চাইলে আদালত তা নাকচ করে দেন। তারেক সাঈদের পক্ষের আইনজীবীরা হলেন সারোয়ার মিয়া, মুহাম্মদ আবদুস সালাম ভূঁইয়া, মৌসুমী বেগম ও সামসুল আলম।
অন্যদিকে, ডা. বিজয় কুমারের দায়ের করা মামলায় কোনো আপত্তি না থাকায় সোমবার মামলাটি বিচারকাজ শুরু করার জন্য জজকোর্টে স্থানান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন জানান, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি একটি এবং নিহত সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা ডা. বিজয় কুমার ফতুল্লা থানায় আলাদা মামলা করেন। বিউটির দায়ের করা মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
অন্যদিকে, ডা. বিজয় কুমারের মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। দীর্ঘ ১১ মাস শেষে ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্তকারী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ২৫ র্যাব সদস্যসহ ৩৫ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে। তবে সেই চার্জশিটে বিউটির দায়ের করা এজাহারের আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন, হাসমত আলী হাসু, আমিনুল হক রাজু, আনোয়ার হোসেন আশিক ও ইকবাল হোসেনের নাম না থাকায় বাদী তাঁদের নাম চার্জশিটভুক্ত করার জন্য আদালতে রিভিউ করেন।
অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আজ ঢাকা থেকে আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী এসেছেন। তাঁরা তাঁদের আইনি সহায়তা দেবেন। নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতি থেকে আমরা আইনজীবী যাঁরা আছি, তাঁরা কেউ আসামিপক্ষে যাব না। যদি বাইরে থেকে এসে আসামিপক্ষে কাজ করে, তবে এতে আমরা প্রতিবন্ধক হব না। তাঁরা তাঁদের কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক।’
সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, আইনজীবী চন্দন সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম হত্যা মামলাটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত হওয়ায় এটি বিচারের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিক ইমাম দায়রা জজ আদালতে বদলি করেছেন। আগামী ৩০ নভেম্বর সে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সারোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমরা চাই দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি হোক। তবে কথা হলো, কোনো দুষ্টু ব্যক্তি যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে না যায় আর কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে শাস্তি না পায়। আদালতে এ বিষয়গুলো আমরা পরিষ্কার করেছি এবং আদালতও এ বিষয়ে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা করেন।